শোলা কেনাবেচা চলছে হাটে

Malda News: মাত্র ২ মাস বসে এই হাট! সারা বছরের জিনিস কিনে রাখতে হয়! কারণ জানেন কি

মালদহ: বছরে মাত্র দু’মাস বসে এই হাট। তখনই সংগ্রহ করতে হয় গোটা বছরের প্রয়োজনীয় সামগ্রী। পুরাতন মালদহে রয়েছে এমনই এই ঐতিহ্যবাহী হাট। তবে এই হাটে মেলে শুধুমাত্র শোলা। গৌড়বঙ্গের একমাত্র শোলার হাট পুরাতন মালদহের নবাবগঞ্জ। বহু প্রাচীন এই হাট। হাটে শোলা কিনতে আসেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শিল্পী থেকে মুর্শিদাবাদ নদীয়া জেলার শিল্পীরা। বছরের দু’মাস ধরে বসে শোলার বাজার।

সপ্তাহের বুধবার এবং রবিবার হাট বসে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শোলা বিক্রেতারা এখানে শোলা নিয়ে আসেন। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই হাটের শোলা বাজারের যথেষ্ট নাম ডাক রয়েছে। বিক্রেতা অনিল সাহা বলেন, “পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এখন শোলার উৎপাদন কম হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে আমাদের শোলা নিয়ে আসতে হয়। উত্তরবঙ্গে এটি একটি মাত্র হাট যেখানে শোলা বিক্রি হয়।”

দুর্গা, কালী প্রতিমার সাজ, পুজোর উপকরণ, বিয়ের মুকুট, শোলার ফুল-সহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি হয় এই শোলা দিয়ে। একসময় মালদহ জেলার রতুয়া, পুরাতন মালদহ , হরিশ্চন্দ্রপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় জলাভূমিতে প্রচুর শোলা গাছ জন্মাতো। জলজ এই উদ্ভিদ জলাভূমিতে নিজে থেকেই জন্মাতো। তবে বর্তমানে মাছ ও মাখনা চাষের জেরে জলাভূমি গুলি পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় শোলা অনেক কম উৎপাদন হচ্ছে।

বাজারে চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না শোলা। তাই দিনের পর দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে শোলার দাম।তবে এখন বসছে এই শোলা হাট। যেটুকু উৎপাদন হচ্ছে, সেগুলিই বিক্রেতারা নিয়ে আসছেন হাটে। চাহিদা রয়েছে প্রচুর। শোলা শিল্পী রঞ্জিত সিংহ বলেন, এই হাট থেকে শোলা সংগ্রহ করে আমরা রেখে দিই। সারা বছর কাজ করি। এই হাটে না কিনলে আর কোথাও পাওয়া যায় না শোলা। তবে এখন দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখনও উত্তরবঙ্গ-সহ দক্ষিণের একাধিক জেলা থেকে ক্রেতারা ভিড় করছেন শোলা হাটে। হাট থেকে কাঁচা শোলা কিনে নিয়ে গিয়ে রোদে শুকিয়ে রেখেদেন শিল্পীরা। সারা বছর সেই শোলা দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করেন।মালদহের এই ঐতিহ্যবাহী হাটের কদর এখনও রয়েছে জেলা ও জেলার বাইরে।

হরষিত সিংহ