এ যেন পিতা-পুত্রী সংবাদ। কমল হাসান আর শ্রুতি হাসানের আলাপচারিতাকে আর কীভাবেই বা ব্যাখ্যা করা যায়। আলোচনায় যা উঠে এল, তা মণি-মুক্তোর চেয়ে কম কিছু নয়। কীভাবে অল্প টাকায় মেয়েকে মানুষ করেছেন, জাগতিক জিনিসের প্রতি তাঁর টান কতটা, সবকিছু নিয়েই মন খুলে কথা বললেন কমল হাসান।
আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে বেড়িয়ে এল বাবা আর মেয়ের নানা দিক। একটা পর্যায়ে শ্রুতি জিজ্ঞেস করে বসলেন, কমল হাসানের অপূর্ণ ইচ্ছার কথা। সেই প্রশ্নের গা বেয়েই দার্শনিক উত্তর দিলেন অভিনেতা। জানা গেল, জাগতিক জিনিসের প্রতি তাঁর আশা আকাঙ্খার কথা।
কমল হাসান বলেন, “এরকম জিনিস অনেক আছে, অনেক। আমি কোনওদিন সে সবের তালিকা করিনি। তালিকা করতে বসলে মনকে বাগে রাখা যাবে না। তখন মনে হবে, ‘এটা চাই, ওটা চাই’। যদি এরকম ভাবনা কখনও মনে আসে, আমি শুধু নিজেকে এলডামস রোডের (কমল হাসানের পারিবারিক বাড়ি) বাড়িটার কথা বলি। বাবা একটা ছোট ঘর দিয়েছিলেন আমায়। দুটো পিয়ানো রাখলেই আর জায়গা থাকত না। উপরের তলার ঘর…তাই গরম। রেস্টরুম ছিল তিন তলায়। বাবার মনোভাব ছিল, ‘তুমি তো অনেক কিছু জানো, তাই এখানেই থাকো। যদি মনে করো, এভাবে চলতে পারবে না, তাহলে আমাকে বোলো, একটা গরু কিনে দেব। সেটার লালন পালন করবে”।
সেই সময় কমল হাসানের চাহিদা ছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। অভিনেতা মনে করতেন, এই টাকা থাকলেই তিনি চালিয়ে নিতে পারবেন। ১০ হাজার টাকা পেলে তিনি কী কী করবেন, তার একটা তালিকাও তৈরি করেছিলেন। অভিনেতার কথায়, “সেই তালিকা আজ আর আমার মনে নেই। তবে ইচ্ছেগুলো আমায় ঘুম পাড়িয়ে দিত। আমার একটা স্কুটারের শখ ছিল। তারপর একটা গাড়ি কেনার ইচ্ছে হল।
এখন আমি যা যা চাই, সেই সব কিছু কেনার মতো সম্পদ আমার আছে। এখন আমি ভাবছি, আমার কী চাই? একটা বিমান? সম্প্রতি শাহরুখ খানের একটা সাক্ষাৎকার দেখছিলাম। সেখানে শাহরুখ বলছেন, তিনি একটা বিমান কিনতে চান। আমার খুব ভাল লাগল। শাহরুখের এখনও একটা ইচ্ছের তালিকা রয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমার এমন কোনও তালিকা থাকা উচিত নয়। না, আমি সাধক নই। এর শেষ কোথায়? আচ্ছা, আমি ধরে নিলাম আমার একটা বিমান চাই। কিন্তু বিমান চালিয়ে আমি কোথায় যাব? আমি যদি কোডাইকানালে একটা বড় বাড়ি কিনি, কতটা সময় সেখানে কাটাব? বড়জোড় এক মাস। তারপর এখানেই ফিরতে হবে। তাহলে বাংলো কিনে কী লাভ!