লাইফস্টাইল Menopause: পিরিয়ড বন্ধ বা মেনোপজের সময় কোলেস্টেরল ও হার্টের অসুখের ঝুঁকি কতটা বাড়ে? আর কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়? পড়ুন Gallery May 14, 2024 Bangla Digital Desk পিরিয়ড মেয়েদের বড় হওয়ার একটি অংশ। পিরিয়ড সেই সময় শুরু হয় যখন শরীরের অন্যান্য পরিবর্তন যেমন স্তন বৃদ্ধি, চুলের বিকাশ হওয়া শুরু হয়। পিরিয়ড হবার সঠিক সময় হল ১৩ বছর। কিন্তু ৯ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত যে-কোনও মেয়েরই ঋতুস্রাব শুরু হতে পারে এবং এটা খুব স্বাভাবিক। মেনোপজ বা পিরিয়ড বন্ধ হওয়াও খুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। একটা বয়সের পর স্বাভাবিক ঋতুচক্র ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। একে বলে মেনোপজ। ৪০ থেকে ৪৫-এর পর থেকেই মহিলাদের শরীরে ধীরে ধীরে নানা বদল আসতে শুরু করে। আপনি যদি প্রেগন্যান্ট না হন, কিংবা শারীরিক ভাবেও সুস্থ, তারপর-ও যদি আপনার টানা ১২ মাস পিরিয়ড বন্ধ থাকে, তারমানে মেনোপজ শুরু হয়েছে। কেন হয় মেনোপজ? বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটা মহিলার সেক্স হরমোন কমে যেতে থাকে। একটা সময় ওভারি আর ডিম তৈরি করে না, ফলে আর পিরিয়ড হয় না। এই সময় আপনি আর প্রেগন্যান্ট হতে পারবেন না। মেনোপজ কিন্তু একদিনে হয় না। প্রাথমিকভাবে প্রতিমাসে নিয়মিত পিরিয়ড হওয়া বন্ধ হয়। তখন ২-৩ মাস অন্তর-অন্তর পিরিয়ড হতে পারে। মেনোপজ ৪-১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমন-ও দেখা যায়, হয়তো চার বছর আপনার পিরিয়ড বন্ধ, আচমকাই চার বছর পর শুরু হয়েছে পিরিয়ড। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪৫-৫০ বছর বয়স মেনোপজের সঠিক বয়স। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই মেনোপজের সময়ের আগু-পিছু হতে পারে। মেনোপজের সময় হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনে শারীরিক, মানসিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় অনেক মহিলারই। এই সময়ে কেউ একটু বেশিই খিটখিটে হয়ে পড়েন। আবার কারও আচমকা অনেকটা ওজন বেড়ে যায়। মেনোপজের সময় নারী শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে? কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে? যৌনইচ্ছা– মেনোপজ হওয়া মানে আপনি আর গর্ভধারণে সক্ষম নন। অর্থাৎ, শরীর আর ডিম তৈরি করছে না। প্রতিমাসে আর আনফার্টিলাইজড ডিম শরীর বার করছে না, ফলে পিরিয়ড-ও হচ্ছে না। মেনোপজের সময় যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, কমে যেতে পারে লিবিডো, যৌনইচ্ছা। তবে তা সবসময় স্থায়ী হয়না। হট ফ্লাশ– অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঘুমের মধ্যে সারা শরীর দিয়ে যেন তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। সারা শরীর জ্বালা করতে থাকে, অস্বাভাবিক ঘামও হতে পারে। একেই বলে হটফ্লাশ, যা হয় এস্ট্রোজেন-এর অভাবে। দিনে বা রাতে যে-কোনও সময়ে হতে পারে হটফ্লাশ। ওজন বাড়তে পারে– মেনোপজের সময় ওজন বাড়তে পারে। মেনোপজ মানেই শরীর বেশি এনার্জি জমা করছে। যার অর্থ হল আপনি আর তাড়াতাড়ি ক্যালরি বা ফ্যাট পোড়াবেন না। এর ফলেই ওজন বাড়তে থাকে। মানসিক প্রভাব– মেনোপজের সময় মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। একদিন হয়তো আপনি খুব খুব খুশি থাকবেন, চারপাশে সবকিছু খুব ভাল লাগবে, পরের দিন-ই দেখবেন, অবসাদ গ্রাস করেছে। মুড সুইং হতে পারে। যদি দেখেন এক সপ্তাহের বেশি অবসাদগ্রস্ত হয়ে রয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্মৃতিশক্তিতে প্রভাব– গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মেনোপজের সময় অনেক মহিলার-ই স্মৃতিশক্তি কমে যায়। এর সঠিক কারণ কী? সে বিষয়ে তেমন কোন-ও তথ্য মেলেনি গবেষকদের। যদিও বয়সের কারণে অনেকের-ই স্মৃতি কমে যায়। এই স্মৃতি কমে যাওয়া আর মেনোপজের যোগ কোথায়, বা আদৌ আছে কী না, তা অবশ্য প্রমাণসাপেক্ষ। ঘনঘন প্রস্রাব– মেনোপজের সময় এস্ট্রোজেন কমে যায় শরীরে। এর ফলে ইউরিনারি ব্লাডারে লিকেজ হতে পারে। একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে, ইনকনটিনেন্স। এই সময়ে মহিলারা বেশি প্রস্রাব করেন, বিশেষ করে রাতে। জোরে হাসলে, কাশলে বা ওয়র্কআউটের সময় প্রস্রাব আচমকা বেরিয়ে আসতে পারে। কোলেস্টেরল ও হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে– শরীরে এস্ট্রোজেন কমে যাওয়া মানে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়া। এস্ট্রোজেন কমে গেলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে পারে, ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। কোলেস্টেরল ও হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে– শরীরে এস্ট্রোজেন কমে যাওয়া মানে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়া। এস্ট্রোজেন কমে গেলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে পারে, ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। হাড়ের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে– মেনোপজের কারণে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। ঘনঘন হাড় ভাঙার ঘটনা ঘটতে পারে। মেনোপজের সময় মহিলাদের বাতের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।