NEET UG 2024 Row: ‘একটা বিষয় পরিষ্কার, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল,’ NEET মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির, পরীক্ষার বাতিল নিয়ে কী অবস্থান আদালতের?

নয়াদিল্লি: ‘একটা বিষয় পরিষ্কার, যে প্রশ্নফাঁসের মতো বিষয় ঘটেছে এবং পরীক্ষার শুদ্ধতাও নষ্ট হয়েছে’৷ NEET UG 2024-এক অনিয়মের মামলায় ২৮টি আবেদনের শুনানি চালকালীন এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূ়ড়৷ সোমবার ফের পরীক্ষার দাবিতে করা ৩৮টি আবেদনের শুনানি চলছিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সহ, বিচারপতি জে বি পারিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রার তিন সদস্যের বেঞ্চে৷

এদিন আবেদনকারীদের তরফে সওয়াল তোলা হয়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি নোটিস দিয়ে এনটিএ বলেছিল ৫ মে পরীক্ষা এবং ১৪ জুন রেজাল্ট বেরোবে। ৪ মে টেলিগ্রাম চ্যানেলে (সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল) প্রশ্নপত্র এবং জবাব ফাঁস হয়। তারপর ⁠৫ মে পরীক্ষা হয়। ⁠একই দিনে এনটিএ নোটিস ইস্যু করে জানায় রাজস্থানের একটি মাত্র সেন্টার ছাড়া বাকি সব সেন্টারে পরীক্ষা ভালভাবে হয়েছে। সেই সেন্টারে শুধু প্রশ্নপত্রের সমস্যার জন্য দেরি হয়। কানাড়া এবং এসবিআইতে দু’টি সেটের প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। ভুল করে ১২০ জন পড়ুয়াকে কানাড়া ব্যাঙ্কের সেট প্রশ্ন দিয়ে দেওয়া হয়। তার জন্য সময় নষ্ট হয়।

আরও পড়ুন:  সন্দেশখালি মামলায় বড় ধাক্কা! রাজ্যের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের, তদন্ত চালাবে CBI-ই!

আবেদনকারীরা দাবি করেন, ২০২০ সালে একজন মাত্র পড়ুয়া ৭২০ নম্বর পেয়েছিল। ২০২৩ সালে মাত্র ৩ জন। আর এবার প্রথমবার ৬৭ জন ৭২০ নম্বর পেয়েছিল। যার মধ্যে ৬ জন গ্রেস মার্কস পেয়েছিল।

এরপরেই প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘এটা কি সত্যিই ১৫৬৩ জনকে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছিল ভুল প্রশ্ন দেওয়ার জন্য? এটা কি নিশ্চিত যে এনটিএ র প্রশ্নপত্র লিক হয়েছিল? এটা কোথায় প্রমাণ হচ্ছে যে প্রশ্নপত্র লিক হওয়াটা বৃহত্তর ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের প্রভাবিত করেছে? কতগুলো সেন্টারে এবং শহরে পরীক্ষা হয়েছিল? কত পড়ুয়া অ্যাপিয়ার করেছিল? কীভাবে বিদেশে প্রশ্নপত্র গিয়েছিল?’’

উত্তরে আবেদনকারীরা জানান, যাঁরা প্রশ্নপত্র লিকের ফায়দা তুলেছে এবং যাঁরা সুবিধা নেয়নি তাঁদের আলাদা করা সম্ভব নয়, তাই রি টেস্ট করা হোক৷ স্ক্যাম সিস্টেমিক লেভেলে হয়েছে কিনা এটা বলা সম্ভব নয় বলছে এনটিএ নিজেই৷ পাটনা, দিল্লি, রাজস্থান, মহারাস্ট্র, গুজরাত এবং ঝাড়খন্ডে ৬টি এফআইআর হয়েছে৷ এনটিএ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্বীকার করেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে৷প্রশ্নপত্র হেড কোয়ার্টারে তৈরি হয়েছিল। গ্রুপ অফ এক্সপার্টসরা দুটো সেটের প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: সাগরে ঘূর্ণাবর্ত…! নিম্নচাপ সতর্কতা…! কবে থেকে চরম দুর্যোগ-দুর্ভোগ? দিন-তারিখ বলে দিল আলিপুর! আবহাওয়ার মেগা আপডেট

এরপরেই প্রধান বিচারপতি জানান যে, প্রথমে বুধতে হবে কবে প্রশ্নপত্র তৈরি হল? কবে সেটা এনটিএর হাতে সেটা এল? কোন প্রিন্টিং প্রেসে ছাপার জন্য গিয়েছিল? কীভাবে প্রিন্টিং প্রেসে গিয়েছিল? প্রিন্টিংয়ের পর কোথায় গিয়েছিল প্রশ্নপত্রগুলো? কবে কানারা এবং এসবিআই ব্যাঙ্কের কাস্টডিতে পাঠানো হল? কীভাবে পাঠানো হল? প্রশ্নপত্র ছাপা হওয়া, ডিস্ট্রিবিউট হওয়া এবং প্রশ্নপত্র লিক হওয়ার মধ্যে অনেক দিনের ফাঁক থাকে তাহলে প্রশ্নপত্র ফাঁস বৃহত্তর ক্ষেত্রে হতে পারে৷ যদি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রশ্নপত্র লিক হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে লিক বৃহত্তর ক্ষেত্রে হয়েছে। Its like a wildfire৷ রেড ফ্ল্যাগস চিহ্নিত করতে হবে। সেটা কোর্ট করতে পারে, অথবা একটা কমিটি তৈরি করতে পারে বলে জানান তিনি৷

তবে পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি এ-ও জানান যে, এটাও মাথায় রাখতে হবে ২৩ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়াকে পুনরায় পরীক্ষা দিতে বলার আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে এই প্রশ্নপত্র লিক কতটা বৃহত্তর ক্ষেত্রে হয়েছে।

এদিন আদালতের তরফে জানানো হয়, সাইবার ফরেন্সিক ইউনিট দিয়ে একটা ডেটা অ্যানালিটিক্স রান করে সেই সব পড়ুয়াদের চিহ্নিত করা সম্ভব কিনা, যাঁরা ভুল পথ অবলম্বন করেছেন৷ যদি আমরা পরীক্ষা খারিজ না করি, তাহলে আমরা জানতে চাই, সরকার কী করছে সেই সব পড়ুয়াদের চিহ্নিত করতে যাঁরা পেপার লিকের সুবিধা নিয়েছে? তারপরেই পরীক্ষা বাতিল বা পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি৷

সব শেষে বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি৷ তারমধ্যে আবেদনকারীদের একসঙ্গে একটা কনসোলিডেটেড সাবমিশন দিন। কেন তাঁরা রিটেস্ট চাইছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রের কাছে তোলা প্রশ্নের উত্তর জমা দিতে হবে আদালতে৷ তদন্ত কোনদিকে এগোচ্ছে সেই বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্টও দিতে বলা হয়েছে সিবিআই-কে৷