Kolkata Police: খবর এল লালবাজার থেকে, মাঝরাতে মাঠে নামল কলকাতা পুলিশের চার থানা! টান টান নাটক…

কলকাতা: আত্মহত্যা করতে পারেন এক তরুণ৷ এইটুকুই তথ্য ছিল কলকাতা পুলিশের কাছে৷ কিন্তু ওই তরুণের বাড়ি কোথায়, তাঁর মোবাইল নম্বর কী, সেই সমস্ত কোনও তথ্যই ছিল না পুলিশ আধিকারিকদের কাছে৷ যদিও তাতে হাল ছাড়েননি কলকাতা পুলিশের চারটি থানার অফিসার এবং কর্মীরা৷ শেষ পর্যন্ত মানসিক অবসাদগ্রস্ত ওই তরুণকে সময় মতো খুঁজে বের করে তাঁকে নিরস্ত করতে সক্ষম হন পুলিশ অফিসাররা৷

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ৷ কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে একটি লিঙ্ক পাঠান একজন তরুণ৷ সেই লিঙ্কটি ছিল একটি ফেসবুক লাইভের৷ ওই ফেসবুক লাইভে এক তরুণ আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণের ফেসবুক পেজে খুঁজে দেখে তাঁর সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু ওই প্রোফাইলটি লক করা ছিল৷

এর পর যে ব্যক্তি ওই ফেসবুক লাইভের লিঙ্ক কলকাতা পুলিশকে পাঠিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ তিনি জানান, আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া ওই তরুণ একসময় তাঁর সহপাঠী ছিলেন এবং বর্তমানে স্নাতক স্তরের পড়ুয়া৷ কিন্তু ওই তরুণের পুরনো একটি নম্বর ছাড়া তাঁর সম্পর্কে আর কোনও তথ্যই পুলিশকে দিতে পারেননি ওই ব্যক্তি৷

আরও পড়ুন: আগুনের ফুলকি থেকে আতঙ্ক! শিয়ালদহ দক্ষিণে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বন্ধ ট্রেন চলাচল, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

ওই মোবাইল নম্বরটি ট্র্যাক করার চেষ্টা করে পুলিশ৷ দেখা যায়, ওই নম্বরটি বেহালা অঞ্চলের একজনের নামে ছিল৷ এর পরই লালবাজারের পক্ষ থেকে পর্ণশ্রী থানার ওসি সত্যপ্রকাশ উপাধ্যায়কে ওই তরুণকে খুঁজে বের করতে বলা হয়৷

এর পাশাপাশি একই নির্দেশ দেওয়া হয় বেহালা থানার ওসি অনিমেষ হাওলাদারকেও৷ তাঁর নির্দেশে বেহালা থানা এলাকায় ওই তরুণের খোঁজে রাতেই তল্লাশিতে নামেন তিন জন এসআই পদমর্যাদার অফিসার৷ এই দুই থানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয় সরশুনা থানাকেও৷ অন্যদিকে পর্ণশ্রী থানার একজন অফিসারও ওই তরুণকে খুঁজতে শুরু করেন৷

আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া ওই তরুণের নামের সঙ্গে মিল থাকায় ভুল ঠিকানায় হাজির হয়ে গভীর রাতে বেশ কয়েকজনের ঘুম ভাঙায় পুলিশ৷৷ শেষ পর্যন্ত পর্ণশ্রীতে ওই তরুণের বাড়ি খুঁজে বের করেন বেহালা থানার আধিকারিকরা৷

আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া ওই তরুণ পুলিশ অফিসারদের জানান, কয়েকটি বিষয় নিয়ে হতাশ হয়েই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তিনি৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ অফিসারদের বোঝানোয় কাজ হয়৷ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ওই তরুণ৷

কলকাতা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, ‘এটা দলগত সাফল্য৷ কন্ট্রোল রুম থেকে খবর পেয়ই একসঙ্গে চারটি থানা তৎপর হয়৷’ কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল সিপি (১) মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘লালবাজারে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেল চালু করে আমরা ভাল সাড়া পেয়েছি৷ মানুষকে প্রতারিত হওয়া থেকে যেমন আটকানো গিয়েছে, আবার মানুষের প্রাণও বাঁচানো সম্ভব হয়েছে৷’