কলকাতা: একদিকে যখন সমানে বৃক্ষনিধন যজ্ঞ চলছে ক্রমবর্ধমান জনবসতির চাপে, অপরদিকে তখন রেলওয়ে এগিয়ে এসেছে তার বৃক্ষরোপন কর্মসূচি নিয়ে যাতে আরও আরও গাছ বসিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। পূর্বরেল বিভিন্ন স্টেশন ও রেল পরিসরে সৌন্দর্যায়নের জন্য বাগান এবং মিনি ফরেস্ট স্থাপন তো করেছেই, এখন আরও ব্যাপকতর কর্মসূচিতে বৃক্ষরোপন করতে চলেছে।
ইতিমধ্যেই ১০০% বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে পূর্বরেল দূষণমুক্তির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। এখন নিবিড় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পূর্বরেলের নেটওয়ার্ককে “গ্রীন জোন”-এ পরিণত করার চেষ্টা চলছে। এবছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে পূর্বরেল ১০ লক্ষ নতুন বৃক্ষরোপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে হবে ৩ লক্ষ বৃক্ষরোপন, আসানসোল ডিভিশনে হবে ২ লক্ষ ৪০ হাজার, হাওড়া ডিভিশনে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার এবং মালদহ ডিভিশনে ১ লক্ষ ৩০ হাজার বৃক্ষরোপন করা হবে।
চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই ১ লক্ষ ৭২ হাজার গাছ লাগানো সম্পন্ন হয়েছে, এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৭৫ হাজার, আসানসোল ডিভিশনে ১৫ হাজার, হাওড়া ডিভিশনে ৭২ হাজার এবং মালদহ ডিভিশনে ১০ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।
রেলের সমস্ত অফিসে, ডি.আর.এম বিডিংগুলিতে, রেলের ওয়ার্কশপগুলিতে এবং রেল অফিসারদের কোয়ার্টারে ও রেল কর্মীদের আবাসনে এই নিবিড় সবুজায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে আগামী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে। রেলের অফিসার-সহ সমস্ত রেলকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কাজটিকে বাস্তবায়িত করার জন্য এগিয়ে এসেছেন। এছাড়াও, পূর্বরেল এই গাছ লাগাবে রেলের অব্যবহূত জমিতে এবং রেলের জমির সীমানা বরাবর যাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার সাথে সাথে অবৈধ দখলদারিও কিছুটা কমানো যায়। অব্যবহূত জমিতে বনসৃজনের এই প্রচেষ্টায় অবস্যই লক্ষ্য রাখা হবে যাতে ট্র্যাক বা সিগনালের দৃশ্যমানতা ব্যাহত না হয় এবং রেল চলাচলের ক্ষেত্রে সুরক্ষাও বজায় থাকে।
পূর্বরেলের এই বিশাল বৃক্ষরোপন কর্মসূচির মাধ্যমে এটাই প্রতিফলিত হয় যে, শুধু যাত্রী বা পণ্য পরিবহণই নয়, রেলওয়ে তার সামাজিক দায়বদ্ধতা মাথায় রেখে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সদা সচেষ্ট।