কলকাতাঃ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাংঘাতিক ঘটনা। মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়ার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার। তিনি চেস্ট ডিপার্টমেন্টের পোস্ট গ্রাজুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গভীর রাতে ডিপার্টমেন্টের সেমিনার রুম থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশে মোবাইল, ল্যাপটপ, ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দেহ মাটিতে পড়ে ছিল সংজ্ঞাহীন অবস্থায়। ওই ছাত্রী ছোটো উঁচু খাটের মতো জিনিসে ( মাটি থেকে একটু উঁচু ) শোয়ানো ছিল, গায়ে নীল কাপড় ছিল। আজ শুক্রবার ট্রেনি ওই চিকিৎসকের দেহ ময়না তদন্ত হবে আরজি কর হাসপাতালেই, তারপরেই স্পষ্ট হবে কীভাবে মৃত্যু হল তাঁর।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার দেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন ছিল। পরনের পোশাকও খুবই অল্প ছিল। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে তাঁকে। পরিবারের সদস্যরা ইতিমধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছেছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ডিন অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার বুলবুল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুনঃ ক্যালসিয়াম-ভিটামিনের আঁতুরঘর, একগাদা খরচ না করে বাড়িতে রাখুন এই গাছ, প্রতি মাসে বহু টাকা বাঁচবে
জানা গিয়েছে, ৩৬ ঘণ্টা টাকা ডিউটির পরে বিশ্রাম নিতে এবং পড়াশোনার জন্য সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন ওই মেডিক্যাল পড়ুয়া। তাঁর আগে জুনিয়রদের সঙ্গে বসে রাতের খাবার খান রাত দু’টো নাগাদ। ওই ছাত্রী যাদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছিলেন, শেষ সময় পর্যন্ত যাদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করবে পুলিশ। এমনকি কে কে ছিলেন গতকাল ডিউটিতে, সেই বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা মেলেনি। প্রথমবর্ষের পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
কলেজের অন্যান্য পড়ুয়াদের দাবি, হাসপাতালে কোনও পরিপূর্ণ রেস্ট রুম নেই চিকিৎসক এবং ইন্টার্নদের জন্য। ফলে টানা ডিউটি শেষ করার পরে তাঁদের সেমিনার রুম বা অন্য কোথাও বিশ্রাম নিতে হয়। কোনও সিস্টার বা নার্স রাত দু’টোর পর ওয়ার্ডে থাকেন না। এমনকি কোনও নিরাপত্তা রক্ষীও গত তিন বছর ধরে নেই। মাস তিনেক আগে রোগীদের পরিবারের ৩ সদস্য মত্ত অবস্থায় সেমিনার রুমে ঢুকে পড়েছিলেন ভোরের দিকে, সেই সময় একজন প্রথম বর্ষের পড়ুয়া এবং একজন পিজিটি ছাত্রী সেখানে ঘুমোচ্ছিলেন। কিন্তু, তারপরেও কর্তৃপক্ষ কোনওরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ।