Statue of Netaji Subhas Chandra Bose flanked by his INA compatriots at the 'Netaji Subhash Park' seen in Old Delhi.

Independence Day Special: গুমনামী বাবা থিওরি বাবার জন্য চরম অপমানকর: সুভাষকন্যা অনিতা

নয়াদিল্লি: ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে বাবার স্মৃতিচারণায় স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান কাণ্ডারি নেতাজি সুভাষন্দ্রবসুর মেয়ে অনিতা

যখন বড় হচ্ছেন, নিশ্চয়ই মায়ের সঙ্গে বাবা সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে?

বাবার স্মৃতি মায়ের কাছে খুব বেদনাদায়ক ছিল।  মা আমার সঙ্গে বাবাকে নিয়ে নানা কথা বলতেন ঠিক-ই, কিন্তু যে-ভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক আরেকজন প্রাপ্তবয়স্কর সঙ্গে কথা বলে, সেভাবে নয়। পরবর্তীতে আমার অন্যান্য আত্মীয়-পরিজনেরাও আমায় বাবার নানা গল্প বলেছিলেন।

আপনার কাছে বাবার প্রথম স্মৃতি কী?

মা বাবার একটা ছবি দেখিয়েছিলেন। বাবা আমায় প্রথম দেখেছিলেন যখন আমার বয়স ৪ সপ্তাহ। স্বাভাবিকভাবেই আমি নিজে বাবার কোন-ও স্মৃতি রাখতে পারিনি।

 মা প্রথমে আপনার নাম রাখতে চেয়েছিলেন অমিতা, কিন্তু শেষপর্যন্ত রাখেন অনিতা…

আসলে আমার জন্ম ভিয়েনাতে, নাৎসি শাসনকালে। ওরা বিদেশী বিরোধী ছিল। সন্তানের বিদেশী নামকরণ নিষিদ্ধ ছিল। অমিতা নামটি কর্তৃপক্ষের  কাছে গৃহিত হত না। তাই মা আমার নাম রাখলেন অনিতা। ইতালিয়দের মধ্যেও এই নামের প্রচলন আছে।

মা-বাবার চিঠিপত্র নিশ্চয়ই পড়েছেন? দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক কেমন ছিল?

ভীষণ গভীর। যখন সম্পর্ক শুরু হয়, দু’জনের কেউ ভাবেনি, সেটা এতটা প্রগাড় হবে। শুরুটা হয়েছিল কাজের সূত্রে। বাবা মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিলেন, তাঁর জীবন দেশের স্বাধীনতার জন্য উৎসর্গীকৃত এবং সেখানে কোনওরকম ব্যক্তিগত সম্পর্কের কোনও জায়গা নেই। অনেকেই তাঁকে জামাই করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সবাইকে ফিরিয়ে দেন।

নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক রয়েছে, আপনার ব্যক্তিগত মত কী? গুমনামী বাবা নিয়ে কী বলবেন?

বাবার মৃত্যু হয় ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট, তাইওয়ান-এ। বিমান দুর্ঘটনায়। সেই সময় তেমন কোন-ও প্রমাণ মেলেনি। মা নিজে খবরটা পেয়েছিলেন দুর্ঘটনার ৪ দিন বাদে, তাও কীভাবে? রেডিওর খবরে একটা ছোট্ট ঘোষণা করা হয়েছিল। এই খবরের পর ব্রিটিশরা বাবার অন্তিম পরিণতি নিয়ে খুব আগ্রহী হয়ে পড়ে, আমেরিকানদের মৃত্যুর তদন্ত করতে বলে। তাদের তদন্ত রিপোর্ট বলে, বাবার মৃত্যু প্লেনক্র্যাশে হয়েছে। জাপানী ও ভারতীয় সরকারের তদন্ত-ও তাই বলে।পরবর্তীতে আর-ও ১১টি তদন্ত হয়, এরমধ্যে ৩টি ভারত সরকারের। একমাত্র ‘জাস্টিস মুখার্জি কমিশন’-এর রিপোর্ট ছাড়া প্রতিটা তদন্তের রিপোর্ট-ই বলে, বাবার মৃত্যু হয়েছিল ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট, প্লেন ক্র্যাশে। গুমনামী বাবা থিওরি নিয়ে এটাই বলতে চাই, এটা নেতাজিকে অপমান করা। তাঁর মত সৎ একজন মানুষ ভারতে ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না করে স্রেফ পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকবে?এও কখন-ও সম্ভব? কখন-ও নয়।