খেলা আরশাদ নাদিম নন; বরং জ্যাভলিন থ্রোয়ের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা হয়ে থেকে যাবেন জার্মানির এই ক্রীড়াবিদ, পার করেছিলেন ১০০ মিটারের গণ্ডি Gallery August 19, 2024 Bangla Digital Desk Javelin Throw’s ‘Eternal Record’: সদ্য শেষ হয়েছে প্যারিস অলিম্পিকস ২০২৪। এই প্রতিযোগিতায় অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে যোগ হয়েছে এক নয়া অধ্যায়। বর্শা ছোড়া বা জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টে শুধুমাত্র স্বর্ণপদকই জয় করেননি পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম। সেই সঙ্গে এক রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। আসলে ৯২.৯৭ মিটার থ্রো দিয়েই রেকর্ডটা তৈরি করেছেন নাদিম।তবে একজনের রেকর্ড ভাঙতে পারেননি নাদিম। Photo: Instagram আসলে একবার জার্মান ট্র্যাক এবং ফিল্ড তারকা উয়ে হোন (Uwe Hohn) জ্যাভলিন থ্রো-এ এক দুর্ধর্ষ রেকর্ড তৈরি করেছিলেন। তাঁর সেই ঐতিহাসিক থ্রো ছিল ১০৪.৮০ মিটার। যা দেখে চমকে গিয়েছিল সমগ্র বিশ্ব। আর সবথেকে বড় কথা হল, তাঁর এই থ্রো মাধ্যাকর্ষণের নীতিকে পর্যন্ত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওই রেকর্ডকে পরে বাতিল করা হয়েছিল। বার্লিনের একটি অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক ডে-তে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন উয়ে হোন। আর তিনিই ছিলেন একমাত্র ক্রীড়াবিদ, যিনি জ্যাভলিন থ্রো-এ ১০০ মিটার অতিক্রম করেছিলেন। Photo: AP হোনের ওই থ্রো-কে ইটারনাল ওয়ার্ল্ড রেকর্ড-এর তকমা দেওয়া হয়েছিল। এদিকে ১৯৮৬ সালে জ্যাভলিনের একটি নতুন নকশা আবিষ্কৃত হয়। যার ফলে রেকর্ড বুককে আবার ঢেলে সাজানো হয়। আর তখনই উয়ে হোনের এই রেকর্ডকে অসীম, অবিনশ্বর, চিরন্তন বলে ঘোষণা করা হয়। তবে আধুনিক যুগে জ্যাভলিন থ্রো-এ ৯২.৯৭ মিটারের রেকর্ড গড়লেন নাদিম। এখন তিনি পাকিস্তানের গর্ব। আসলে এটা এমন একটা সময়ে হয়েছে, যখন সমস্ত কৌশল এবং প্রশিক্ষণের কায়দা উন্নত হয়েছে। আর আরশাদ নাদিমের রেকর্ড সত্যিই দুর্দান্ত। আর সবথেকে বড় কথা হল, জ্যাভলিন থ্রোয়ে অবিরত রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। Photo: Instagram তবে আজও রহস্য হয়ে রয়েছে উয়ে হোনের ১০৪.৮০ মিটার থ্রো। কিন্তু কেন তা বাতিল হয়েছিল, সেটা নিয়ে কৌতূহল থেকেই গিয়েছে। হোনের রেকর্ড যদি বাতিল না হত, তাহলে তিনিই আজ হতেন বিশ্বসেরা। বর্তমানে ৬২ বছর বয়স ওই ক্রীড়াবিদের। জার্মানির হয়ে নিজের কেরিয়ারে হয়তো একটাও পদক জিততে পারেননি হোন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এই খেলায় দক্ষ ছিলেন। ১৯৮২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টে পূর্ব জার্মানির হয়ে হোন স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন। এরপর ১৯৮৫-র অ্যাথলেটিক্স ওয়ার্ল্ড কাপেও সোনা জিতেছিলেন। Photo: X আর সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, উয়ে হোনের প্রশিক্ষণেই উন্নতি হয়েছে ভারতীয় তারকা নীরজ চোপড়ার। ২০১৮-র কমনওয়েলথ গেমসের পর থেকেই কোচ হোনের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছিলেন নীরজ। সূক্ষ্ম কৌশলগুলিও নীরজ শিখেছেন হোনের কাছ থেকেই। শুধু খেলার কৌশলই নয়, নীরজকে ফিটনেস ধরে রাখার ক্ষেত্রেও সাহায্য করেছিলেন হোন। এর ফলে টোকিও অলিম্পিকসের ঠিক আগেই মার্চ মাসে পাটিয়ালায় অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান গ্রাঁ পি-তে ৮৮.০৭ মিটার থ্রো করেছিলেন নীরজ। এরপর অলিম্পিকসে স্বর্ণপদক লাভ করেন নীরজ চোপড়া। Photo: Instagram যদিও নিজের সেরা ৮৮.০৭ মিটার অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। এদিকে ২০২১ সালের জুনে অলিম্পিকের আগেই হোনের সঙ্গে অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া এবং স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ঝামেলা হয়। যার ফলে দল থেকে সরে যান হোন। তবে জ্যাভলিন থ্রো-র ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে নীরজ চোপড়া, আরশাদ নাদিম এবং উয়ে হোন – এই তিন তারকার নাম।