তবে ৫ দফা দাবিতে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় তাঁরা। গত দু'বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য গিয়েও প্রথমদিন নবান্ন ও দ্বিতীয় দিন কালীঘাটের বাসভবনের সামনে থেকে ফিরে আসেন তাঁরা।

Junior Doctor’s Protest: ‘আমরা ডাক্তার, ধৈর্য অপরিসীম, যমের সঙ্গে লড়ে প্রাণ ছিনিয়ে আনি’, স্বাস্থ্যভবনে ফিরলেন দেবাশিস, কিঞ্জল-রা

কলকাতা: শেষমেশ বৈঠকটা হল-ই না। ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর নবান্ন ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে স্বাস্থ্যভবনে আন্দোলনস্থলে ফিরলেন ৩২ জন জুনিয়র চিকিৎসক।

অবস্থানমঞ্চে ফিরে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদারের ক্ষোভ, ” আমরা একটা সদর্থক উদ্দেশ্য নিয়ে নবান্ন গিয়েছিলাম। যে মেল করেছিলাম, তাতে স্পষ্ট জানিয়েছিলাম, আমরা আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। আলোচনা হবে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে, যাতে স্বচ্ছতা থাকে। আমরা ভেবেছিলাম বিচারহীনতার ৩৪ তম দিনে গিয়ে বিচার হবে। অতি দ্রুত কাজে ফিরতে চাই। হতাশা আর দুঃখের সঙ্গে দেখলাম, কোনওভাবেই লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়। আমরা জানতে চেয়েছি, সমস্যা কীসের? সুপ্রিম কোর্টের শুনানি পর্যন্ত লাইভ স্ট্রিমিং হয়।”

দেবাশিস আর-ও বলেন, ” আমাদের ভয় ছিল, ক্লোজড-ডোর মিটিংয়ের আলোচনা সাধারণ মানুষ দেখতে না পারলে তাঁদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে পারে। আমরা কোনও জেদ করছি না। ৩২ জন প্রতিনিধি নবান্নের উদ্দেশ্যে গেলাম। দাঁড় করিয়ে রেখে বলা হল, সরাসরি সম্প্রচার নিয়ে কোনওরকম কোনও আলোচনাই সম্ভব নয়। ৩ ঘণ্টা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হল। যাঁরা তথ্য প্রমাণ লোপাটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে, তাঁদের শাস্তি দেওয়ার দাবিতে সরব আমরা। অথচ আমরাই ৩ ঘণ্টা ব্যর্থ হয়ে বসেছিলাম। নবান্নের দরজা আস্তে-আস্তে বন্ধ হয়ে গেল। কেন এত অনমনীয়তা? আজকে আমাদের যে লড়াই, তা বিচারের জন্য। আমরা নাকি চেয়ার চাই? আমরা যদি চেয়ার চাইতাম, নবান্নে যেতাম না। ৩৪ দিন ধরে আন্দোলন করছি। ৩ দিন ধরে রোদ, ঝড়, জল, বৃষ্টি উপেক্ষা করে রয়েছি। যন্ত্রণার জবাব দিতে হবে। আমরা আশাবাদী এখনও। অচলাবস্থা কাটানো হোক। অচলাবস্থার দায় আমাদের দিকে ঠেলে ঘৃণ্য রাজনীতি করা হচ্ছে।”

আরেক প্রতিবাদী চিকিৎসক পরিচয় পণ্ডার ভাষায়,” আমরা বন্ধ দরজা থেকে খালি হাতে ফিরে এসেছি। এই লড়াইয়ে কোনও রাজনীতি নেই। নির্যাতিতার বিচার চাওয়া রাজনীতি নয়। নির্যাতিতার মা-বাবা নিজে তাঁদের দায়ভার আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এই আন্দোলন সারা বাংলার আন্দোলন। রাজনীতি কোথায় লুকিয়ে আছে? আমরা ডাক্তার। আমাদের ধৈর্য অপরীসিম। যমের সঙ্গে লড়াই করে মানুষকে ছিনিয়ে নিয়ে আসি। আমাদের তো নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল নবান্ন। আমরা আমাদের দাবিগুলো জানাতাম। এই দরজা যদি আবার খোলা হয়, যে স্বচ্ছতা রাখার কথা আমরা বলছি, তা যদি রাখা হয়, আমরা আবার যাব।”