EXCLUSIVE: ‘বলিউডে নেপোটিজম নেই যদি বলি, তবে সেটা মিথ্যে বলা হবে…’’: ঊর্বশী

#মুম্বই:  তিনি বহিরাগত। স্টার কিড না হয়েও বলিউডে পা রাখতে, কোনও অসুবিধে হয়নি তাঁর। তবে বলি বাজারে নেপোটিজম রয়েছে, সে কথা অস্বীকার করেন না। তিনি সাহসী, তিনি লাস্যময়ী। ঊর্বশী রাওতেলার লাস্যই, হয়তো কোথাও তাঁর বাধার কারণ। সম্প্রতি ওয়েবে মক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘ভার্জিন ভাণুপ্রিয়া’। ছবি, অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের বোল্ড ইমেজ নিয়ে কথা বললেন ঊর্বশী।

প্রঃ ‘ভার্জিন ভাণুপ্রিয়া’ থিয়েটারে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মুক্তি পেল ওয়েবে। আফশোস হয়েছে?

দেখুন খারাপ যে একেবারে লাগেনি, তা বলবো না। কিন্তু অবশেষে ছবিটা মুক্তি পেল, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এখনও পর্যন্ত অনেকে জানিয়েছেন, তাঁদের এই ছবি ভাল লেগেছে। এটাই প্রাপ্তি।

প্রঃ ছবিতে আপনার চরিত্র গ্ল্যামারাস নয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে আপনি একজন সেক্স আইকন বলা চলে। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম গুলিতে বেশ সাহসী ছবি পোস্ট করেন। চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হলেন কী করে?

একজন শিল্পীর এমনটাই হওয়া উচিত, তাই না? ব্যক্তি আমি বা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম-এ আমার ভাবমূর্তি এক রকম হতে পারে। কিন্তু তার সঙ্গে আমি পর্দায় কেমন চরিত্র করব, তার কোনও যোগ নেই। বরং নিজের থেকে ভিন্ন কিছু করতে পারলে বেশি ভাল লাগে। প্রথম ছবি ‘সিং সাহাব দ্য গ্রেট’ থেকে সেই চেষ্টাই করে চলেছি।

প্রঃ ‘ভার্জিন ভাণুপ্রিয়া’ নামটা শুনলেই বোঝা যায়, ছবির বিষয় অত্যন্ত সাহসী। আপনার কাছে ভারজিনিটি-র অর্থ কী?

ভারতবর্ষে ‘ভার্জিনিটি’-র সঙ্গে একটা জিনিসকেই জুড়ে দেওয়া হয়। এটা ঠিক নয়। ‘ভার্জিনিটি’ একটি মানসিকতা। এই শব্দের মানে শুদ্ধ, অধরা। ‘ভার্জিন’ নামের একটি মোবাইল কোম্পানি ছিল। এয়ারলাইন্স, বই প্রকাশনা সংস্থা, এই নামে অনেক কিছুই রয়েছে। এই ছবিতে আমরা বলতে চেয়েছি যে, পরিস্থিতির সঙ্গেও ‘ভার্জিনিটি’-র একটা যোগ রয়েছে। সমাজ বা কারও চাপে পড়ে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে ছবিতে। তবে আমাদের দেশে এই নিয়ে অনেক দ্বিচারিতা আছে।

প্রঃ একটু খুলে বলুন।

ভারতবর্ষে অনেক বিভেদ রয়েছে। কামসূত্রর সূচনা আমাদের দেশেই হয়েছিল। এখানকার পুরনো মন্দিরের মূর্তিগুলোতেও সেই ছাপ রয়েছে। মহাভারতেও বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার নিদর্শন রয়েছে। মহাভারতের আদি পর্ব অনুযায়ী, যদি একজন নারী বিয়ের আগে শারীরিক সুখ পেতে চান, তাতে কোনও দোষ নেই। কিন্তু আমরা এসব জেনেও অস্বীকার করি।

প্রঃ ‘ভার্জিন ভাণুপ্রিয়া’ করার সময় একবারও মাথায় এসেছিল, আপনার ব্যাপারে অনেক ধরনের ধারণা তৈরি হতে পারে?

এই ছবি নারীর শারীরিক চাহিদার কথা বলে। নারীকে সমাজ দেবীর আসনে তুলে দেয়। শুধু পুরুষের চাহিদাই থাকতে পারে। নারীর থাকলে দোষ? আমি এমনটা মনে করি না। তাই এই চরিত্র করব, কি করব না, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা ছিল না। অভিনেতা হিসেবে সাহসী হওয়া প্রয়োজন। না হলে সমাজের একরোখামি গুলো পাল্টাবে কী করে? আমি অভিনেতা, মানসিক ভাবে দুর্বল হলে চলবে না। একাংশের মানুষ কী ভাববে, সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে কী করে চলবে।

প্রঃ আপনার ছবি, মিউজিক ভিডিও সবকিছুতেই আপনি লাস্যময়ী। আপনার মনে হয় এর জন্য আপনি অনেক ধরনের চরিত্র পান না। এখন ছোট শহরের, সাধারণ মানুষের গল্পই দর্শক বেশি পছন্দ করছেন। আপনার মনে হয় আপনার ভাবমূর্তি কোথাও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

যে ধরনের চরিত্র পেয়েছি, তাতে অভিনয় করেছি। আমি এখনও পর্যন্ত খুব ডি গ্ল্যামারাস কিছু পাইনি। এখন সত্যিই কনটেন্ট-এর সময়। ভাণুপ্রিয়া আমার সেই জন্যই করা। আমি আয়ুষ্মান ও অক্ষয় স্যার-এর মতো ছবি করতে চাই। বিনোদনের মাধ্যমে ওঁরা সামাজিক বার্তা দেয়, এটা সকলে পারে না। ভাল চরিত্রের অপেক্ষায় রয়েছি। দেখুন অভিনেতা হিসেবে আমার মধ্যে কোনও ভয় বা নিরাপত্তাহীনতা নেই। আমাকে দেখে পরিচালকেরা হয়তো ভাবেন, আমি সাধারণ কোনও ছবি করতে চাই না। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল। আমি অ্যাকশন, পিরিয়ড রোম্যান্স করতে চাই।

 

View this post on Instagram

 

if you’re bored go binge watch my tiktoks ?? . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . #love #UrvashiRautela

A post shared by URVASHI RAUTELA ??Actor?? (@urvashirautela) on

প্রঃ আচ্ছা আপনি পড়াশুনোয় তুখোড় ছিলেন। ক্লাস টুয়েলভ-এ ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। স্টেট লেভেল বাস্কেটবল খেলেছেন। এসব ছেড়ে মডেলিং, তারপর অভিনয় করতে এলেন কেন?

ছোটবেলা থেকেই আমি স্কুলের হেডগার্ল ছিলাম। বাস্কেটবল খেলেছি। এক সময় ভাবতাম অ্যাস্ট্রোনট হব বা খেলোয়াড় হব। আমার লাইম লাইটে থাকতে ভাল লাগতো। আর সত্যি বলতে কী, অভিনেতা হব কখনও ভাবিনি। চেষ্টাও করিনি। কোনও অডিশন দিইনি। নিজে থেকেই প্রস্তাব এসেছে।

প্রঃ‘সিং সাহাব’-এর আগেও পঁচিশটা ছবির প্রস্তাব এসেছিল। ‘ইশকজাদে’ আপনাকে অফার করা হয়েছিল, আপনি ফিরিয়ে দিয়েছিলন। তাই তো?

হ্যাঁ একদম ঠিক বলছেন। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল। তখন মিস ইউনিভার্স-এর জন্য তৈরি হচ্ছিলাম, ছবি করা সম্ভব ছিল না। তবে যা হয়, ভালই হয়। দু-দু’বার আমি মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়ার মুকুট জয় করেছি। মডেলিং-এর জন্য বলিউডে পা রাখতে কোনও অসুবিধে হয়নি।

প্রঃ বলিউডে সুযোগ পেতে অসুবিধে হয়নি, তবে কখনও নিজেকে বহিরাগত মনে হয়েছে। বলিউড ক্যাম্পের কথা শুনি আমরা। আপনি কোনও শিবিরের ছিলেন না। কাজ পেতে অসুবিধে হয়নি?

আমার সঙ্গে ঠিক তেমনটা হয়নি। যখন এসেছিলাম, একেবারেই ভাবিনি কেউ আমার ছবি দেখবে। গ্রহণযোগ্যতা পাব, আশা করিনি। কোনও প্রত্যাশাই ছিল না। আমি বরং অনেক বেশি পেয়েছি। আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করি।

প্রঃ তাহলে আপনার মতে বলিউডে নেপোটিজম নেই?

নেপোটিজম নেই যদি বলি, তবে সেটা মিথ্যে বলা হবে। বিষয়টা যে রয়েছে, এটা সকলে জানেন। ইন্ডাস্ট্রির বাইরের শিল্পীদের জন্য সুযোগ অনেক কম। আমার এইটুকই দাবি, সকলেরই ভাল চিত্রনাট্য, ভাল চরিত্র পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এটা ভুললে চলবে না।

Arunima Dey