শাহরুখ খানের সুপারহিট ছবি ‘চক দে ইন্ডিয়া’-তে মহিলা হকি দলের ক্যাপ্টেনকে মনে আছে? শেষ বল হাত দিয়ে আটকে টিম ইন্ডিয়াকে আটকে দিয়েছিলেন। ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী বিদ্যা মালভদে। ‘মিসম্যাচড’-এও যাঁর অভিনয় সকলের মনজয় করেছিল।যদিও এই ছবিগুলির আগে একাধিক ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল, তাও ‘চক দে ইন্ডিয়া’ই তাঁর জীবনে যুগান্তকারী ছবির তালিকার শীর্ষে স্থান করে নেয়।কিন্তু সেই বিদ্যার জীবনের বিভীষিকাময় ঘটনার কথা জানেন? অনেকেই জানেন না, দুই দশক আগে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন।বিদ্যা আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন এবং একজন এয়ার হোস্টেস হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এয়ার হোস্টেস থাকাকালীন পাইলট ক্যাপ্টেন অরবিন্দ সিং বাগ্গার সঙ্গে তাঁর আলাপ। ধীরে ধীরে প্রেম এবং বিয়ের সিদ্ধান্ত।১৯৯৭ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই তাঁর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ২০০০ সালে পটনায় বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী পাইলট অরবিন্দের মৃত্যু হয়। তখন বিদ্যার বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। বিমানটি কলকাতা থেকে পটনা-লখনউ হয়ে দিল্লিতে পৌঁছত নিয়মিত।কিন্তু পটনায় ল্যান্ড করার সময়ে ছোট্ট ভুলে সব শেষ হয়ে যায়। বিদ্যা পরবর্তীকালে একটি সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন, স্বামীর মৃত্যুর খবর যখন তাঁর কাছে পৌঁছায়, তখন তখন তিনি জার্মানিতে ছিলেন। যে সুখের স্বপ্ন দেখে বিয়ে করেছিলেন, তা যেন এক পলকে দুঃস্বপ্নে পরিণত হল।স্বামীহারা বিদ্যার মনে হয়েছিল, মৃত্যুবরণ করা ছাড়া কোনও উপায় নেই তাঁর। জীবন শেষ করে ফেলার চিন্তা মাথায় আসে। এমনকি একাধিক ঘুমের ওষুধ কিনে আনেন বাড়িতে।বাড়ি ঢুকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার জন্য প্রস্তুতও ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময়েই তাঁর বাবা ঘরে আসেন এবং নিকষ অন্ধকার থেকে মেয়েকে বের করে আনেন কথা বলে। আর তারপরই আরও একবার বাঁচার ইচ্ছে জাগে বিদ্যার। আত্মহত্যার কথা মাথা থেকে মুছে ফেলেন।প্রবল খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন বিদ্যা। কিন্তু ধ্যান এবং যোগব্যায়ামের মাধ্যমে কষ্ট লাঘব করতে পেরেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি এয়ার হোস্টেসের চাকরি ছেড়ে দেন।এরপর তিনি কিছু মডেলিং অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে ছবির দুনিয়ায় পা রাখেন। ২০০৯ সালে বিদ্যা ‘রামজি লন্ডনওয়ালে’ ছবির পরিচালক সঞ্জয় দাইমাকে বিয়ে করে দ্বিতীয় বার সংসার করা শুরু করেন।
