বিনোদন কোনওদিন পদবী ব্যবহার করেন না রেখা, কী তাঁর পদবী? অভিনেত্রীর জীবনের গল্পে চোখ ভিজবে Gallery April 8, 2024 Bangla Digital Desk বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বিভিন্ন কারণে পদবী ব্যবহার করেন না৷ তাব্বু, কাজল, আসিন প্রত্যেকেই সুবিধার জন্য পদবী ছেঁটে ফেলেছেন৷ কিন্তু এই তালিকায় এমন একজন আছেন যাঁর পদবী বাদ দেওয়ার পিছনে রয়েছে শিউরে দেওয়া কারণ৷ রেখা যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁর বাবা জেমিনি গনেশন স্ত্রী এবং কন্যাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। একপ্রকার বাধ্য হয়ে সিনেমাতে নামতে হয়েছিল ছোট্ট রেখাকে। রেখা বলেছিলেন তিনি কখনও তাঁর বাবাকে বাড়িতে দেখেননি। বাবার আরও সন্তান ছিল। তাই তিনি কখনও রেখা এবং তাঁর বোনকে স্বীকার করেননি। জেমিনি গনেশনের সঙ্গে বিয়ে না হতেই পুষ্পাবলি দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। জেমিনি তাঁর অন্যান্য সন্তানদের যখন স্কুলে দিতে আসতেন তখন দূর থেকে রেখা তাঁর বাবাকে দেখতেন। এমন নয় যে রেখা অভিনেত্রী হতে চাইতেন বলে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন৷ তাঁকে বাধ্য হয়ে পেট চালানোর জন্য রোজগার শুরু করতে হয়েছিল৷ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সময় তাঁর নাম হয় শুধু রেখা। নিজের নামের পাশে বাবার পদবী কোনদিনও বসেননি। তাঁর আসল নাম ভানুরেখা গনেশন৷ রেখা সম্পর্কে চর্চার কোনও শেষ নেই বলিউডে। এমন অনেক কিছু আছে যা আজও ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচিত। ছবিতে অভিনয় দক্ষতাই হোক বা এক সময়ে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন, অভিনেত্রী রেখা সবসময়ই লাইমলাইটে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। রেখার বিয়ে ১৯৯১ সালে মুকেশ আগওয়ালের সঙ্গে হয় ৷ কিন্তু তাঁরা লুকিয়ে মন্দিরে বিয়ে করেন ৷ মাঝরাতে রেখা মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন ৷ তবে এই খবর পরিবারের লোকেরাও জানতেন না ৷ ফাইল ছবি ৷ রেখা এবং পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরান খানের সম্পর্কের খবর সামনে আসে একসময়। সেইসময় পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরানের ইমেজও ছিল একজন রোমান্টিক পুরুষ হিসেবে চর্চার কেন্দ্রে। শোনা যায়, ৭০-৮০-র দশকের বলিউড কুইন রেখার সৌন্দর্যের সামনে ইমরানও ক্লিন বোল্ড হয়েছিলেন। রেখার মাও রাজি হয়েছিলেনএমনও দাবি করা হয়েছিল যে রেখা-ইমরান বিয়ে করতে চলেছেন এবং রেখার মাও এই সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ১৯৮৫ সালের ১১ জুন স্টার পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয় যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন ইমরান খান এবং রেখা। পরে নানা কারণে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়৷ ইমরানের একটি সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতিও রয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘অভিনেত্রীর সঙ্গ অল্প সময়ের জন্যই ভাল। আমি তার সঙ্গ উপভোগ করি এবং তারপরে জীবনে এগিয়ে যাই।’ একই সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, ‘একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রীকে বিয়ে করার কথা ভাবতেও পারি না।’ বিনোদ মেহরা বেশিরভাগ ছবিই রেখার সঙ্গে করেছিলেন এবং একসঙ্গে কাজ করার সুবাদেই তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দুজনেই একে অপরের প্রেমে পড়েন একটা সময়ে এবং সেখানেই শেষ নয়, পরে বিষয়টি বিয়ে পর্যন্তও গড়ায়। কিন্তু, রেখাকে বিয়ে করার পরও তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারেননি বিনোদ মেহরা। কারণ রেখা বা বিনোদ মেহরা কেউই তাদের বিয়ের ঘোষণা করতে পারেননি। সর্বত্র তাদের প্রেমের আলোচনা থাকলেও দুজনের ভাগ্যেই হয়তো প্রেম ছিল না। রেখা-অমিতাভের জুটিও ছিল সুপারহিট। তাঁদের রসায়ন মুগ্ধ করত ভক্তদের। কিন্তু গোপন প্রেমের কথা জানাজানি হওয়ার পরে তাঁরা আচমকাই একসঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আসলে প্রকাশ্যে আসতেই এই খবর অমিতাভ-জায়া জয়ার কানেও যায়। বলাই বাহুল্য, বিষয়টা তাঁর একেবারেই ভাল লাগেনি। এ-দিকে আবার অমিতাভের জীবনে পরিবারের একটা বড় জায়গা রয়েছে। বলা যায়, অভিনেতা এক জন আদ্যন্ত পারিবারিক মানুষ। ফলে একপ্রকার পারিবারিক শান্তির জন্যই প্রেমিকার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তিনি। শেষ বারের মতো অমিতাভ-রেখার জুটিকে ভক্তরা পেয়েছিলেন যশ চোপড়া পরিচালিত ‘সিলসিলা’ ছবিতে। আসলে অমিতাভ-রেখার গোপন প্রেমের কথা ফাঁস করেছিলেন বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা রঞ্জিতই। খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত ছিলেন যিনি। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবির নাম ছিল ‘কারনামা’। তিনি ওই ছবিতে অভিনেত্রী হিসেবে রেখাকে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শ্যুটিংয়ের সময়জনিত সমস্যা থাকায় রেখার বদলে অভিনেত্রী ফারাহ নাজ-কে ছবির জন্য নিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্ট অনুসারে, রঞ্জিত এক বার এর সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, “এক দিন রেখা আমাকে ফোন করেছিলেন। অনুরোধ করেন, শ্যুটিংয়ের সময় যেন সকালে রাখা হয়। তা-হলে তিনি অমিতাভের সঙ্গে সন্ধ্যাটা কাটাতে পারবেন।” ভারতীয় সৌন্দর্যের অন্যতম সংজ্ঞা তিনি। অভিনয় জগতের এক ‘মিথ’ অভিনেত্রী রেখা! তাঁকে নিয়ে চর্চা ও জল্পনার শেষ নেই। যাঁকে দেখলে আজও বুক কাঁপে পুরুষের। আর তাঁকে ঘিরে চর্চা যেন শেষ হওয়ার নয়।