হাতের কাছে মোবাইলটি থাকলে সহজেই দেখে নেওয়া যায় সঠিক বয়স। যদিও বছর, মাস এবং দিন মিলিয়ে একেবারে নির্ভুল গণনা করা কিছুটা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। কিন্তু বর্তমানে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের যুগে বয়সের হিসেব জানা বেশ সহজেই সম্ভব।

Love Brain: দিনে একশো বার প্রেমিককে ফোন, তরুণীর মস্তিষ্কে কী পেলেন চিকিৎসকরা?

সিচুয়ান, চিন: অনেকের জীবনেই প্রেম আসে আর যায়৷ কিন্তু সেই প্রেম যদি আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাহলে তা কতটা চরম পর্যায়ে পৌঁছতে তার প্রমাণ মিলল চিনে৷ এমন কি, ভালবাসায় আসক্ত হয়ে পড়া মানুষ যে মস্তিষ্কের কোনও সমস্যাতেও ভুগতে পারেন, তার প্রমাণও মিলেছে চিনের এই ঘটনায়৷

জানা গিয়েছে, সদ্য ১৮ পেরনো চিনের ওই তরুণী নিজের প্রেমিককে দিনে অন্তত একশো বার ফোন করতেন৷ বিষয়টি এমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছয় যে ওই তরুণীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়৷ পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই তরুণীর মস্তিষ্কে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম ‘লাভ ব্রেন’৷

আরও পড়ুন: গরমে হিমালয়ের হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে! ধরা পড়ল ইসরোর ক্যামেরায়, ভারতে বড়সড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত

মস্তিষ্কের এই সমস্যার জন্য জিওয়াউ নামে ওই তরুণী প্রেমে এমন আসক্ত হয়ে পড়েন যে ভালবাসার অত্যাচারে ওই তরুণীর প্রেমিকের রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হয়৷ শেষ পর্যন্ত ওই তরুণীকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়৷

‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের পড়াশোনা চলাকালীনই ওই তরুণীর সমস্যা শুরু হয়৷ জিওয়াউ নামে ওই তরুণী দক্ষিণপশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তাঁর সঙ্গে এক তরুণের সম্পর্ক শুরু হয়৷ কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ওই তরুণী সম্পর্কে এমন ভাবে জড়িয়ে পড়েন যে সারাক্ষণ নিজের প্রেমিককে পাশে পেতে চাইতেন তিনি৷ নিজের প্রেমিকের উপরে ভীষণভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন জিওয়াউ৷

পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে সারাক্ষণ হয় ফোন না হলে মেসেজ করে নিজের প্রেমিককে বিব্রত করতে শুরু করেন জিওয়াউ৷ প্রেমিক কখন, কোথায়, কী করছেন, দিনে রাতে প্রতি মুহূর্তে প্রেমিকের থেকে তা জানতে চাইতেন ওই তরুণী৷ স্বভাবতই ওই তরুণীর প্রেমিকের জীবনও অতীষ্ঠ হয়ে ওঠে৷

জিওয়াউ-র এই আচরণের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, যে প্রেমিক বারংবার মেসেজের জবাব না দেওয়ায় ওই তরুণী ক্রমাগত প্রেমিককে ভিডিও কল করেই যাচ্ছেন৷ ক্রমাগত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে৷ দিনে একশো বারেরও বেশি জিওয়াউ নিজের প্রেমিককে ফোন করতে শুরু করেন৷ সাড়া না পেলে ঘরের জিনিসপত্রও ভাঙচুর করতে শুরু করেন ওই তরুণী৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে সাহায্য চান ওই জিওয়াউর প্রেমিক৷

পুলিশ অবশ্য সময়মতো ওই তরুণীর কাছে পৌঁছয়৷ কারণ সেই সময় নিজের বাড়ির ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন জিওয়াউ৷ পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে৷ সেখানেই তাঁর মস্তিষ্কের ওই সমস্যা ধরা পড়ে৷

ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অবসাদ, উদ্বেগ, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে ‘লাভ ব্রেন’ নামক এই মস্তিষ্কের সমস্যাটিও থাকতে পারে৷