Egg Freezing: এগ ফ্রিজিং ঠিক কী? ওভারিয়ান স্টিমুলেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকি হ্রাস করার পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে বললেন বিশেষজ্ঞ

এগ ফ্রিজিং বা ডিম্বাণু সংরক্ষণ আবার ওসাইট ক্রায়োপ্রিজারভেশন নামে পরিচিত। এই কৌশলের ক্ষেত্রে কোনও মহিলার ডিম্বাশয়কে হরমোনের মাধ্যমে উদ্দীপিত করা হয়। যাতে তা একাধিক ডিম্বাণু উৎপন্ন করতে পারে। এরপর অ্যানাস্থেশিয়া দিয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে ডিম্বাশয় থেকে সেই ডিম্বাণু আহরণ করা হয়। এবার সেই ডিম্বাণু যত্ন-সহকারে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় রাখা হয়।

এরপর যখন সেই মহিলা নিজের ডিম্বাণু ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত থাকেন, তখন পরীক্ষাগারে আইভিএফ-এর মাধ্যমে সেই ডিম্বাণু গলানো হয় এবং তা জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই কৌশলের ফলে মহিলারা নিজেদের ফার্টিলিটি সংরক্ষণ করতে পারেন এবং নিজের পছন্দমতো সময়ে সন্তানধারণ করতে সক্ষম হন। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের ডিম্বাণু সংরক্ষণের পিছনে যে কারণ, তাতে লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে।

আরও পড়ুন: ফ্রেজারগঞ্জে বড় রহস্য! মাত্র ৫ মাসে ২৬ জনের ‘এভাবে’ মৃত্যু! ‘কারণ’ কী, ভয় ধরে যাবে আসল ঘটনা জানলে

মহিলাদের হেলথকেয়ার স্টার্টআপ ইপিআইএ-র তথ্য অনুযায়ী, ২৫ থেকে ৩২ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে ডিম্বাণু সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন করার প্রবণতা লক্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এই বৃদ্ধি বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনার দ্বারাও প্রভাবিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ল্যানসেট রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২-এর নিচে থাকা ভারতের ফার্টিলিটি ২০৫০ সালের মধ্যে ১.২৯-এ নেমে আসবে। আর সেই কারণেই ডিম্বাণু সংরক্ষণের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। তবে এই কৌশলের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুরক্ষার দিকটাও দেখে নেওয়া আবশ্যক।

এই প্রসঙ্গে আলোচনা করছেন কলকাতার বিড়লা ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ-এর সেন্টার হেড এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. স্বাতী মিশ্র (Dr. Swati Mishra, Centre Head and Senior Consultant, Birla Fertility & IVF, Kolkata)

ওভারিয়ান স্টিমুলেশন বা ডিম্বাশয়কে উদ্দীপিত করার ক্ষেত্রে কোন কোন ঝুঁকি থাকে?

ওভারিয়ান স্টিমুলেশনের ক্ষেত্রে মূল ঝুঁকিগুলির মধ্যে অন্যতম হল ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিন্ড্রোম (ওএইচএসএস)। ডিম্বাশয় যখন তাদের উদ্দীপিত করার জন্য ব্যবহৃত হরমোনের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে, তখন ওএইচএসএস হয়ে থাকে। এর ফলে অস্বস্তি, এডিমা হতে পারে আর গুরুতর অবস্থার ক্ষেত্রে পেট এবং বুকে ফ্লুয়িড জমতে থাকে। যাঁদের ওভারিয়ান স্টিমুলেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তাঁদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হতে হবে। আর অস্বস্তি বা অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে চিকিৎসককে সেটা জানাতে হবে।

ডিম্বাশয়ের উদ্দীপনা একাধিক গর্ভধারণ, মা এবং শিশু উভয়ের জন্য সম্ভাব্য অসুবিধা এবং মহিলাদের উপর মানসিক চাপ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায়। হরমোন ইঞ্জেকশন এবং নিয়মিত চেকআপের কারণে উদ্বেগ, উত্তেজনা এবং হতাশা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি অপ্রত্যাশিত কোনও সমস্যার উদ্রেক হয়।

ঝুঁকি কমাতে কী কী করণীয়?

মেডিক্যাল সুপারভিশন:

এটা জেনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, ডিম্বাশয়ের উদ্দীপনা বা ওভারিয়ান স্টিমুলেশন করা হয় একজন রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে।

স্বতন্ত্র চিকিৎসা:

রোগীর বয়স, ওভারিয়ান রিজার্ভ এবং মেডিক্যাল ইতিহাস দেখেই এই পদ্ধতি বিশেষ ভাবে তাঁদের দেওয়া হয়।

নিয়মিত মনিটরিং:

ডিম্বাণুগুলি যাতে সঠিক ভাবে তৈরি হয়, তার জন্য নিয়মিত চেক-আপ করতে হবে। সেই সঙ্গে ডোজ পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে কি না, সেটাও দেখতে হবে।

পুষ্টি এবং হাইড্রেশন:

উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যালেন্সড ডায়েট বজায় রাখতে হবে এবং সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত জলও পান করা আবশ্যক।

অতিরিক্ত পরিশ্রম নয়:

ওভারিয়ান স্টিমুলেশনের সময় জটিলতার ঝুঁকি কমানোর জন্য মাঝারি ধরনের কাজ করতে হবে। তবে অতিরিক্ত ব্যায়াম করা চলবে না।

ইমোশনাল সাপোর্ট:

ডিম্বাশয়ের উদ্দীপনা মানসিক স্তরে যে উদ্বেগ এবং চাপ সৃষ্টি করে তা নিয়ন্ত্রণ করা অপরিহার্য। এর জন্য কাছের মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে হবে। মানসিক চাপ কমাতে যোগা এবং মেডিটেশন করতে হবে।