মহারাষ্ট্র: গত রবিবার ভোররাতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে পুণে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই দুই মোটরবাইক আরোহীকে পিষে দিয়েছিল একটি বিলাসবহুল পোর্শে। চালকের আসনে বসে থাকা বছর সতেরোর নাবালকের দিকেই অভিযোগের তির। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কিশোরের বাবাকে। তবে মূল অভিযুক্ত ওই নাবালকের বিষয়ে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে যে, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই দু’টি পানশালায় ঢুকেছিল অভিযুক্ত নাবালক। এর মধ্যে একটি পানশালায় মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে ৪৮,০০০ টাকা উড়িয়ে দিয়েছিল সে।
দুর্ঘটনার আগে ওই কিশোর যে দু’টি পানশালায় ঢুকেছিল, সেই দু’টি হল – কোজি রেস্তোরাঁ এবং হোটেল ব্যাঙ্ক ক্লাব। সেই পানশালা থেকেই মদ খেয়েছিল সে। সূত্রের দাবি, আইনভঙ্গ এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মদ পরিবেশন করার জন্য দুই পানশালা ও রেস্তারাঁকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
পুণের পুলিশ কমিশনার অমিতেশ কুমার জানান যে, গত শনিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ নিজের বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে কোজি নামের ওই পানশালায় প্রথম ঢুকেছিল। সেখানে তারা বিল হিসেবে মোট ৪৮ হাজার টাকা মিটিয়েছিল। পুণে জেলা কালেক্টরেটের নির্দেশে মঙ্গলবার ওই রেস্তোরাঁ সিল করে দিয়েছে মহারাষ্ট্র আবগারি দফতর।
পুলিশের বক্তব্য, শনিবার এবং রবিবারের মধ্যবর্তী রাতে ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১টা পর্যন্ত নিজের বন্ধুদের নিয়ে অভিযুক্ত নাবালক দু’টি পানশালায় গিয়েছিল এবং সেখানে মদ্যপান করেছিল। ইতিমধ্যেই পুণে পুলিশ ওই কিশোরের বাবাকে গ্রেফতার করেছে। এমনকি, ওই নাবালককে মদ পরিবেশন করার অভিযোগে রেস্তোরাঁর চার এগজিকিউটিভকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে তাজ্জব বিষয় হল, ঘটনার দিনই ওই নাবালককে জামিন দিয়েছে জ্য়ুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। তার আগে অবশ্য ওই অভিযুক্তকে পথ দুর্ঘটনার উপর একটি রচনা লিখতে দেওয়া হয়েছিল। যদিও এই রায় নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। তবে সতেরো বছর বয়সি ওই নাবালকের ২৫ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মহারাষ্ট্র পরিবহণ দফতর।
রাজ্য পরিবহণ আধিকারিকেরা আরও জানিয়েছেন যে, সেই মার্চ মাস থেকে Porsche Taycan গাড়িটির পার্মানেন্ট রেজিস্ট্রেশন বাকি রয়ে গিয়েছে। এমনকি, গাড়ির মালিক ফি হিসেবে ১৭৫৮ টাকাও পরিশোধ করেননি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশও এই ঘটনায় হতবাক। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যাওয়া সংক্রান্ত রায় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।