বাংলাদেশের নিহত সাংসদ আনোয়ার উল আজিম৷

Bangladesh MP murder update: চামড়া ছাড়িয়ে মাংসে মাখানো হয় হলুদ, রহস্যময় ট্রলি ব্যাগে সাংসদের দেহাংশ? দেখুন ভিডিও

কলকাতা: ক্লোরোফর্ম দিয়ে সংজ্ঞাহীন করে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে খুন৷ তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত৷ নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার উল আজিমের খুনে এবার সামনে এল আরও শিউরে ওঠার মতো তথ্য৷ তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-র দাবি, দেহ লোপাটের আগে মৃত সাংসদের দেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়া হয়৷ এর পর মাংস, হাড় ছোট ছোট টুকরো করে তিনটি প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে সম্ভবত ভাঙড়ের পোলেরহাট এলাকায় গিয়ে খালে ফেলে দেওয়া হয়৷

এই কাজে বাংলাদেশ থেকে জিহাদ নামে এক কসাইকে প্রায় দু মাস আগে ভাড়া করে আনা হয়েছিল৷ ঘটনার দিন, আগে থেকেই ওই ফ্ল্যাটে লুকিয়ে ছিল আততায়ীরা৷ বাংলাদেশের সাংসদ ফ্ল্যাটে ঢুকে বাথরুম থেকে বেরনোর পরই প্রথমে ক্লোরোফর্ম দিয়ে ওই সাংসদকে বেহুঁশ করা হয়৷ এর পরই বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রথমে ভারী বস্তু দিয়ে সাংসদের মাথায় আঘাত করে আততায়ীরা৷ তার পর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় দেহ লোপাটের প্রস্তুতি৷

আরও পড়ুন: আজ থেকেই আরও বেশি রাতে পাওয়া যাবে মেট্রো, শেষ ট্রেন কটায়? বড় ঘোষণা

তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে অবৈধ ভাবে খুলনার বাসিন্দা পেশায় কসাই জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়৷ চিনার পার্কের কাছে একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয় তাকে৷ আনোয়ার উল আজিমকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়৷ এর পর চামড়া ছাড়িয়ে মাংস, হাড় টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরা হয়৷ রাস্তায় দেহাংশ কোনও ভাবে পড়ে গেলে যাতে কারও সন্দেহ না হয় তাই মাংসে হলুদও মাখানো হয় বলে সূত্রের খবর৷ এর পর ট্রলি ব্যাগে ভরে সাংসদের দেহাংশ নিয়ে আবাসন ছেড়ে বেরিয়ে যায় আততায়ীরা৷ সেই ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরাও পড়েছে৷ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে খুনের সময় ব্যবহৃত আততায়ীদের গ্লাভসও৷

অভিযুক্ত এই জিহাদকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে সিআইডি৷ এ দিন তাকে বারাসত আদালতে পেশ করলে ১২ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক৷ জিহাদ ছাড়াও খুনে যুক্ত আরও তিন জনকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করেছে সেদেশের পুলিশ৷ ওই অভিযুক্তরা খুনের পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়েছিল৷

কেন খুন বাংলাদেশের সাংসদ?

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে আখতারুজ্জামান নামে আমেরিকা নিবাসী বাংলাদেশী নাগরিককে চিহ্নিত করেছে পুলিশ৷ নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটটিও তাঁর নামেই ভাড়ায় নেওয়া ছিল৷ আখতারুজ্জামান বাংলাদেশের ওই সাংসদের বন্ধু বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা৷ তাঁদের দাবি, আনোয়ার উল আজিমকে খুন করার জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা আততায়ীদের দিয়েছিল আখতারুজ্জামান৷ প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি-র ধারণা, ব্যবসায়িক কারণেই খুন হতে হয়েছে বাংলাদেশের এই সাংসদকে৷
বাংলাদেশের নিহত সাংসদের দেহাংশ খোঁজার জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাঙড়ের খালে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায় পুলিশ এবং সিআইডি৷ যদিও সেই চেষ্টা সফল হয়নি৷ আজ ফের ডুবুরি নামে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷

জানা গিয়েছে, চিকিৎসার কারণে গত ১২ মে কলকাতায় পৌঁছন আনোয়ার উল আজিম৷ কলকাতায় এসে বরানগরে গোপাল বিশ্বাস নামে এক পরিচিতের বাড়িতে ওঠেন তিনি৷ এর পরের দিন ডাক্তার দেখানোর জন্য নিউ টাউনে আসেন তিনি৷ কিন্তু ফোনে আনোয়ার উল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে ১৮ মে পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন গোপাল বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তি৷ এর পরেই তদন্তে নামে পুলিশ৷ সামনে এসে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা৷