মালদহ: একসঙ্গে তিন তিনটি নদীর জলস্ফীতি। আর এতেই বানভাসি মালদহের বামনগোলা। সরকারি হিসেবেই জলমগ্ন আটটি স্কুল। গ্রামীণ যোগাযোগের রাস্তা জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ায় কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো বসবাস জলবন্দি মানুষের। মালদহের বামনগোলায় প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে মালদহের জেলাশাসক, সভাধিপতি-সহ প্রশাসনের দল।
শুক্রবার দিনভর বামনগোলা ব্লকের চাঁদপুর, গোবিন্দপুর-মহেশপুর এবং জগদলা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জলমগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। হাড়িয়া নদী, পুনর্ভবা নদী এবং টাঙ্গন নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে মালদহের বামনগোলা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু বাড়িতেও জল ঢুকেছে। রাস্তার ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জলবন্দি হয়ে রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। প্রশাসনের হিসেবেই জলমগ্ন হয়ে রয়েছে অন্তত আটটি সরকারি স্কুল।
আরও পড়ুন: WhatsApp-এ শীঘ্রই বড়সড় বদল! ভেরিফায়েড ব্যাজ নিয়ে বিরাট খবর, কারা এই সুবিধে পাবেন
গত দু’দিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দারা ত্রাণ এবং প্রশাসনের দল পাঠানোর দাবি করছিলেন। অভিযোগ ছিল প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দেখা যায়নি প্রশাসনকে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বানভাসি এলাকায় পৌঁছে গেলেন সপার্ষদ মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। এদিন ওই এলাকায় পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল ও শুকনো খাবারের প্যাকেট, পানীয় জল, ত্রাণ শিবির চালু, রান্না করা খাবারের ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া।
একইসঙ্গে সেচ দফতর অবিলম্বে ওই এলাকায় নদী বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বামনগোলার বিডিওকে। এদিন এলাকা পরিদর্শনের সময় মালদহের জেলাশাসক ও সভাধিপতির কাছে এলাকায় সেতু তৈরির দাবি জানান বামনগোলার চাঁদপুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ফিবছর নদীর জল ফুঁসে উঠে ক্ষয়ক্ষতি বাড়াচ্ছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সমস্যা দেখা দিচ্ছে গত কয়েক বছর ধরেই। এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী সমাধানের জন্য এলাকায় পাকা সেতুর দাবি তোলেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক। এদিন মালদহে প্লাবিত এলাকায় পরিদর্শনে জেলা সভাধিপতি, জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও থেকে পুলিশ এবং বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, জলপ্লাবিত এলাকার মানুষের পাশে থাকবে প্রশাসন। খাবার, পানীয় জল, ত্রান শিবির, বিদ্যুতের ব্যবস্থা-সহ একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্লাবনে কৃষি কাজের বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা গিয়েছে। কৃষি দফতর ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করছে। মানুষের দুর্ভোগ যাতে লাঘব করা যায় তার জন্য সব ধরনের চেষ্টা হচ্ছে।