বারাসত হাসপাতালে নিহত ছাত্রের বাবা-মা৷

Barasat student death: সন্তানহারা বাবাকে নির্মম মার, বারাসতে পুলিশের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ!

জিয়াউল আলম, বারাসত: স্কুল থেকে বাড়ি ফেরেনি একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া৷ ছেলে বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজখবর করে বাবা-মা জানতে পারলেন, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ছেলের৷ শোকে মূহ্যমান সেই বাবা মার সঙ্গেই দুর্ব্যবহার এবং মারধরের গুরুতর অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে৷ মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে বারাসত জেলা হাসপাতালে৷

জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রের নাম অঙ্গীকার দাশগুপ্ত৷ দমদমের মল রোড এলাকার বাসিন্দা অঙ্গীকার সল্টলেকের একটি বেসরকারি স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছিল৷ মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও অঙ্গীকার বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করে তার পরিবার৷

শেষ পর্যন্ত পরিচিত একজন রিকশাচালকের সূত্রে ওই ছাত্রের বাবা মা জানতে পারেন, ভিআইপি রোডের উপর হলদিরামের কাছে বাস থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে অঙ্গীকার৷ তাকে উদ্ধার করে বারাসত হাসাপাতালে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷

এই খবর পেয়েই অঙ্গীকারের বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তড়িঘড়ি বারাসত হাসপাতালে পৌঁছন৷ সেখানে গিয়েই তাঁরা জানতে পারেন, অঙ্গীকারের মৃত্যু হয়েছে এবং তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে কয়েক হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত, বিতর্ক এড়াতে তৈরি হচ্ছে বিধি

অঙ্গীকারের বাবা-মায়ের অভিযোগ, তাঁদের সন্তান যে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ অথবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁদের কিছু জানায়নি৷ অথচ অঙ্গীকারের স্কুলের আই কার্ডেই তাঁর পরিবারের সদস্যদের দুটি নম্বর দেওয়া ছিল৷

কেন তাঁদের কিছু জানানো হল না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মী প্রথমে ওই ছাত্রের দাদু এবং তার মাকে নিগ্রহ করে৷ প্রতিবাদ করতে গেলে অঙ্গীকারের বাবা পেশায় অধ্যাপক অঞ্জন দাশগুপ্তকে রীতিমতো মারধর করা হয়৷ এমন কি, তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷

অঙ্গীকারের বাবা বলেন, ওই পুলিশ অফিসার প্রথমে আমার শ্বশুরমশাইয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে আমার স্ত্রী প্রতিবাদ করেন৷ তখন তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়৷ এটা দেখে আমি মাথা ঠিক রাখতে পারিনি৷ আমি এগিয়ে যেতেই তখন আমাকে ওই পুলিশ অফিসার সহ তিন চার জন আমাকে মারধর করেন৷ মেরে অঙ্গীকারের বাবার বাঁ দিকের চোখের উপরের অংশ ফাটিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷
এই ঘটনার পরে অঙ্গীকারের বাবাকে আটক বারাসত থানাতেও নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ৷ যদিও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ তার পরেও অবশ্য দীর্ঘক্ষণ অঙ্গীকারের দেহ তাঁর পরিবারকে দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷

পুলিশের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেছেন অঙ্গীকারের পরিবারের সদস্যরা৷ তবে এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অথবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷