১০০ বন্দিকে মুক্তি দিয়ে জেলে আগুন প্রতিবাদীদের! জ্বলছে বাংলাদেশ, কার্ফু জারি

Bangladesh protest: ১০০ বন্দিকে মুক্তি দিয়ে জেলে আগুন প্রতিবাদীদের! জ্বলছে বাংলাদেশ, কার্ফু জারি

বাংলাদেশ: সরকারি চাকরিতে কোটা বা সংরক্ষণে বৈষম্যের অভিযোগে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। সহিংস প্রতিবাদের আঁচ পড়েছে কারাগারেও। শুক্রবার নরসিংডি জেলার একটি জেলে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। আগুন ধরানোর আগে শতাধিক জেলবন্দিকে মুক্তিও দিয়েছেন প্রতিবাদীরা। বাংলাদেশের সংবাদসংস্থা ‘প্রথম আলো’ জানায়, শুক্রবার সকালে রাজধানী ঢাকাতে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছুঁয়েছিল। শনিবার সকালে অঙ্কটা ১০০ পার হয়ে গিয়েছে বলেই পরিসংখ্যান বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যমের। ঢাকা পুলিশ শহরে সব ধরনের সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করেছে।

আন্দোলনের জেরে জনজীবন স্তব্ধ। ঢাকা থেকে সমস্ত রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে চলছে বিক্ষোভ। গাড়িতে, মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁদের দমাতে পুলিশ হিংস্র হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার আলো বন্ধ করে নির্মম হত্যালীলা চালিয়েছে।

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন, বাংলাদেশ ছাত্রলিগ (বিএসএল) ব্যতীত ছাত্র ইউনিয়নের একটি জোট – হাসিনার আওয়ামী লিগের যুব শাখা। বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দাবি, সরকার বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা করতে ইচ্ছুক। এতে প্রতিবাদীরা পাল্টা জানান, তাঁরাও রাজি আছেন এই প্রস্তাবে। প্রতিবাদ সমন্বয়কারী নাহিদ ইসলাম অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আলোচনা এবং গুলি একসঙ্গে চালানো যায় না… আমরা আলোচনার জন্য মৃতদেহকে পদদলিত করতে পারি না”।

আরও পড়ুন- কোটা’ ইস্যুতে উত্তাল বাংলাদেশ, ও পারে বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্য নির্দেশিকা হাইকমিশনের

এদিকে, বাংলাদেশে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে, ত্রিপুরার আগরতলার ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট আখাউড়া দিয়ে বহু মানুষ ভারতে আসতে শুরু করেছেন। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ফিরে আসছেন বাংলাদেশে পাঠরত পড়ুয়ারা। ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে ঢুকছেন তাঁরা। শুক্রবার রাত থেকে বাংলাদেশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীও। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ–যুবলীগের সংঘর্ষ চলছে দফায় দফায়। অগ্নিগর্ভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের একজন ছাত্র, অনিক পাল বলেছেন, “আমরা কোটা ব্যবস্থা বন্ধের দাবি জানাই। খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান চাই। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া উচিত। যে শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন হারিয়েছে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি এবং তাদের অবশ্যই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেতে হবে।”