মানিকচক বিদ্যুৎ বিভ্রাট

Electricity problem: ৩০ কিলোমিটার দূর থেকে বিদ্যুৎ টেনে আনতে হয়! রাতে কী হাল মানিকচকের?

মালদহ: বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে অবরোধ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতার খন্ডযুদ্ধ  লেগেছে। পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে মানিকচকের বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে। যা নিয়ে সরব হয়েছেন শাসক-বিরোধী সব পক্ষ। জানা গিয়েছে, মানিকচকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অন্যতম কারণ দফতরের সেকেলে পরিকাঠামো।

একবছর আগে কাজ শুরু হলেও এখনও  শেষ হয়নি মানিকচক ১৩২ কেজি সাবস্টেশন তৈরির কাজ। পাশাপাশি, বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ আনার ক্ষেত্রেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে টাওয়ার বসানোর প্রয়োজনীয় জমিজট। এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মালদহের ঘোড়াপীর সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎ পরিবহন করে আনতে হয় মানিকচকে।

মালদহের মানিকচকে ৬৭ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। মানিকচক ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি ইংরেজবাজারের শোভানগর পঞ্চায়েত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় মানিকচক বিদ্যুৎ দফতর থেকে। এখানে দৈনিক চাহিদা রয়েছে ১২০০ কেভি বিদ্যুতের। সেখানে বর্তমান পরিকাঠামোতে সর্বাধিক নয়শো কেভি বিদ্যুৎ পরিবহন করা সম্ভব হয়।

এর থেকে বেশি বিদ্যুৎ পরিবহন করতে গেলেই ওভারলোড জনিত কারণে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে পড়ে। অথবা দুটি বিদ্যুৎ খুঁটির মাঝে ‘জাম্পার আউট’ বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ  হয়ে থাকে। রাতের দিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে রাতের শিফটে কোনও মেনটেনেন্স কর্মী থাকেন না। ফলে, কোথায় সমস্যা তা দেখাও হয় না। পরিনাম রাতভর বিদ্যুৎ বিভ্রাট। যে সমস্যা হয়েছিল ঘটনার আগের রাতে। বিদ্যুৎ দফতরের হিসেবেই ওই দিন সাড়ে পাঁচ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল মানিকচকের বিস্তীর্ণ এলাকা।

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচকে বিদ্যুতের পরিকাঠামো বদলের কাজ চলছে গত প্রায় দু’বছর ধরে। চালু ব্যবস্থার পরিবর্তে মালদহের লক্ষীপুরের পাওয়ার গ্রীডের ২২০ কেভি সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎ আনা হবে। মানিকচক বিদ্যুৎ দফতরের পাশেই নির্মীয়মান ১৩২ কেভি সাবস্টেশনে। এই পরিষেবা চালু করতে পারলে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের যোগান দেওয়া সম্ভব। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে লক্ষ্মীপুর পাওয়ার গ্রিড থেকে মানিকচক ১৩২ কেভি সাবস্টেশন পর্যন্ত ৮৯টি বিদ্যুৎ টাওয়ার বসানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে ইংরেজবাজারে তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ জমিজটে দীর্ঘদিন ঝুলে। আবার অধিকাংশ (৮৬) জায়গায় টাওয়ার বসানো হলেও ধরমপুর এবং আশপাশ এলাকায় টাওয়ারে বিদ্যুৎ তার সংযোগের কাজ এখনও বাকি। মানিকচকে ১৩২ কেভি সাবস্টেশন তৈরির কাজও চলছে ধীর গতিতে।

আরও পড়ুন- ২১ জুলাইয়ের কথা ভেবেই শক্তিগড়ের ৩ কুইন্ট্যাল ল্যাংচা নষ্ট করল প্রশাসন! জেনে নিন কারণ

মানিকচকে হাঙ্গামার ঘটনার পর অবশ্য ধরমপুর এবং আশপাশ এলাকায় নতুন টাওয়ারের তার লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, ইংরেজবাজারের যে তিন জায়গায় বিদ্যুৎ টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে জমির সমস্যা ছিল সেগুলি জমি মালিকদের ডেকে সমাধান করে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত কোথাও টাওয়ারের কাজ আটকে নেই। আগামী দিন ১৫-র মধ্যে মানিকচকের বিদ্যুৎ পরিষেবা উন্নত ও স্বাভাবিক করার সব ধরনের চেষ্টা চলছে।