নয়াদিল্লি: ওল্ড রাজেন্দ্র নগরের একটি আইএএস স্টাডি সার্কেলের বেসমেন্টে ডুবে ৩ পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজধানী। এর মধ্যেই এক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করলেন, বন্যার অন্তত এক ঘণ্টা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘‘সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌছন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। ততক্ষণে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্ট ডুবে গিয়েছে। এটাই বেআইনিভাবে লাইব্রেরি হিসেবে ব্যবহার করা হত। তিনি আরও দাবি করেন, উদ্ধারকাজ শুরু করার সময় পড়ুয়ারা ভিতরেই ছিলেন।’’
দিল্লি ফায়ার সার্ভিস সেই সময় ঘটনাস্থলেই ছিল। কিন্তু বিপর্যয় মোকাবিলা অন্তত একঘণ্টা পরে পৌঁছয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জলে আসবাবপত্র ভাসার কারণে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর এক এক করে তিন পড়ুয়ার মৃতদেহ বেসমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আরও জানান, জোরে বৃষ্টি হলেই বেসমেন্টে জল ঢুকে যেত। এটা ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। এবারও তাই হয়। ফলে পড়ুয়া এবং কর্মচারীরা বিষয়টাকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। এমনকী শৌচালয়ের জলও বেসমেন্টে চলে আসত। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা মেটানোরও কোনও চেষ্টা করেনি। কিন্তু এবার চোখের পলকে জল জমে যায়, হাতের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি।
তিনি জানিয়েছেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যায়। স্রোত এতটাই প্রবল ছিল যে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা যাচ্ছিল না। মাত্র ২-৩ মিনিটের মধ্যে পুরো বেসমেন্ট জলের তলায় চলে যায়। পড়ুয়াদের বাঁচাতে দড়ি ছুঁড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জল নোংরা থাকায় দড়ি দেখা যাচ্ছিল না।
সোমবার এই মামলায় ধৃত ৫ জনকে দিল্লির তিস হাজারি আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এঁদের মধ্যে রয়েছেন বাড়ির চার মালিক এবং একজন গাড়ি চালক।
জানা গিয়েছে, যে বাড়িতে কোচিং সেন্টার চলত, তাঁর প্রতিটা তলার আলাদা আলাদা মালিক। ইতিমধ্যে ওই আইএএস স্টাডি সার্কেলের মালিক অভিষেক গুপ্ত, কো-অর্ডিনেটর দেশপাল সিং-সহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক হত্যার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।