প্রতীকী ছবি

CPIM: মানুষের মন বুঝতেই ব্যর্থ হয়েছে পার্টি, দলীয় চিঠিতে স্বীকার সিপিএমের

কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের পর ফলাফল ও দলের পরিস্হিতি নিয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনা করে তা রিপোর্ট আকারে পার্টি চিঠিতে তুলে ধরেছে সিপিএম। সেখানে স্বীকার করা হয়েছে, বাড়ি বাড়ি ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুতর ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, মানুষের মনোভাব আগেভাগে বোঝার ক্ষেত্রেও ঘাটতি রয়ে গিয়েছে।

এই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, সিপিএমের নিচুতলার থেকে একেবারে শীর্ষ নেতৃত্ব সকলেই ব্যর্থ হয়েছেন সাধারণ মানুষের মন বুঝতে। একইসঙ্গে পার্টি রিপোর্টে এও স্বীকার করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের থেকে দল কার্যত বিচ্ছিন্ন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জনগণের সঙ্গে গুরুতর বিচ্ছিন্নতায় রয়েছে দল, এটা বিবেচনায় রেখে পর্যালোচনায় জনগণের চাহিদা ও মনোভাব, বিরোধীদের প্রচার ধারার মতো বিষয়গুলি সম্পর্কে আলোচনা প্রয়োজন। জনগণ কোন বিবেচনায় তাঁদের রায় দিচ্ছেন, এটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

গত মাসের শুরুতেই লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশিত হয়েছে। সিপিএমের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। ভোটে পার্টির বিপর্যয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। আর সেই পর্যালোচনা করতে গিয়েই নিচুতলা থেকে উঠে এসেছে নানা প্রশ্ন। সাংগঠনিক দুর্বলতা, সাংগঠনিক কাঠামো, নেতৃত্বের জনবিচ্ছিন্নতা, বুথস্তরে সংগঠনের বেহাল অবস্থার ছবি উঠে এসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কাছে। লোকসভায় খারাপ ফলের জন‌্য অন‌্যতম কারণ হচ্ছে দুর্বল সংগঠন ও মানুষের মন না পাওয়া। অর্থাৎ, সোশ‌্যাল মিডিয়াত কিংবা সভা—সমাবেশে লোক এলেও নিচুতলার সংগঠন সামলানো ও বুথ আগলানোর লোক যে সেরকম ছিল না সেটা মেনে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক পর্যালোচনা রিপোর্টে মেনে নিয়েছে সিপিএম।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলে আসুন’, অধীরকে প্রস্তাব দিলেন প্রাক্তন শিষ্য ডেভিড!

রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, এরিয়া কমিটির বড় অংশের নেতারা শুধু ‘নামকা ওয়াস্তে’ কাজ করছেন। মাটির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না নেতৃত্বের বড় অংশের, এটাও মেনে নিয়েছে পার্টি। উল্লেখ্য, ২০১৯—এর লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ৪০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছিল ৭.৪৪ শতাংশ ভোট। আর ২০২৪—এর লোকসভা ভোটে ৩০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বামফ্রন্ট পেয়েছে ৬.৩৩ শতাংশ ভোট। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ৫.৬৮ শতাংশ।

তাই ভোট বাক্সে কীভাবে ভোট বাড়বে, তার পথ খুঁজতেই অগাস্টের শেষে ইতিমধ্যেই ডাক দেওয়া হয়েছে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের। যেখানে একেবারে বুথস্তরের নেতাদের কথা শোনা হবে। তাঁদের থেকে সরাসরি রিপোর্ট নেবেন শীর্ষ নেতারা। বুথস্তর থেকে রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা রয়েছে। তার আগে পার্টি সদস্যদের হাতে পৌঁছে গেল পার্টি চিঠি। সেখানে আশু কর্মসূচিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।