শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ৷

Bangladesh clash: বাংলাদেশে মৃত শতাধিক, কারফিউয়ের মধ্যেই আজ ঢাকা অভিযানের ডাক ছাত্রদের!

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে বাংলাদেশে শুরু হওয়া নতুন ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষের জেরে ইতিমধ্যেই অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ মৃতদের মধ্যে বিক্ষোভকারীরা যেমন রয়েছেন, সেরকমই রয়েছেন প্রায় ১৫ জন পুলিশকর্মী৷ বিক্ষোভে লাগাম টানতে রবিবার সন্ধে থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ এরই মধ্যে আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চের পক্ষ থেকে ঢাকা অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ এই অভিযানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্দোলনকারীদের ঢাকায় জমায়েত করার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত কারফিউকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা ঢাকার দিকে এগনোর চেষ্টা করলে আজ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে৷

নতুন করে শুরু হওয়া বিক্ষোভে আন্দোলনকারী, আওয়ামি লিগের সমর্থক এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রবিবার পর্যন্তই একশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ এর আগের দফার সংঘর্ষেও প্রায় দুশো মানুষেরও মৃত্যু হয়েছিল৷

আরও পড়ুন: বাংলা ভাগের বিরোধিতা করে নিন্দা প্রস্তাব! ঝড় উঠতে চলেছে বিধানসভায়? শাসক-বিরোধী টক্কর তুঙ্গে

নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে দেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদদের বাড়িতেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের পরিবর্তে তারা আজ, সোমবারই ঢাকায় ছাত্র- নাগরিক অভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছেন৷ মূলত ঢাকা সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে ছাত্র এবং আন্দোলনকারীদের যেভাবে সম্ভব ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে৷ আসিফ মাহমুদ বলেন,‘এই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সবাই। যে যেভাবে পারেন, ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।’

সংঘর্ষে লাগাম টানতে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে৷ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ ৪জি ইন্টানেট পরিষেবাও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
যদিও নতুন করে ছড়িয়ে পড়া হিংসার পিছনে নাশকতামূলক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তাঁর দাবি, ছাত্র নয়, আন্দোলনের নামে এই হিংসা ছড়ানোর পিছনে রয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা৷ শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন, শক্ত হাতে এই সন্ত্রাসবাদীদের দমন করুন৷

বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক৷ বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে ভারতীয়দের বাংলাদেশে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যাঁরা এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রয়েছেন, তাঁদের চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ কোনও প্রয়োজনে জরুরি ফোন নম্বর ব্যবহার করে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের৷ ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের নম্বরগুলি হল- +৮৮০১৯৫৮৩৮৩৬৭৯, +৮৮০১৯৫৮৩৮৩৬৮০, +৮৮০১৯৩৭৪০০৫৯১৷

বাংলাদেশের এই সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখার প্রধান ভোলকার টার্ক, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপরে নিশানা না করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন৷ সোমবার আন্দোলনকারীরা ঢাকায় যে অভিযানের ডাক দিয়েছে, তাকে কেন্দ্র করে ফের নতুন করে সংঘর্ষে আরও প্রাণহানির আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই কর্তা৷