আবীর ঘোষাল, কলকাতা: উত্তর কলকাতার রামধন মিত্র লেন। হলদে নোনা ধরা বাড়ির দেওয়ালে, কলকাতা পুরসভার দেওয়া নম্বর বলছে ১১ডি। গলি দিয়ে হেঁটে গেলেও চট করে কারও চোখে পড়ার মতো নয়। সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটের দেওয়াল লিখন এখনও জ্বলজ্বল করছে। এই বাড়ির পাশে অবশ্য প্রশস্ত খিলান দেওয়া, কাঠের সিঁড়ি লাগানো এক বাড়ি রয়েছে ৷ প্রতি বছর মহালয়ার আগে সেই বাড়ির সামনে ভিড় জমে। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়ি ৷ অনেকেই জানেন না ঠিক তার গা লাগোয়া এই বাড়িতেই বেড়ে উঠেছিলেন ‘বাচ্চু’। বাচ্চু হ্যাঁ পাড়ার বন্ধু গৌর ভদ্র এই নামেই পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে।
আরও পড়ুন- সোনা হাতছাড়া ! ইতিহাস লিখে নীরজের সোনা ছিনিয়ে নিলেন বন্ধু আর্শাদ নাদিম
বুদ্ধবাবুর প্রয়াণের পরে নানা স্মৃতি কথা মাথায় ভিড় করে আসছে এই পাড়ার বাসিন্দাদের। গৌরবাবু জানাচ্ছিলেন, ‘‘বুদ্ধ দারুণ ক্রিকেট খেলত। লাহিড়ী পাড়ার মাঠ হোক বা গলি ক্রিকেট চুটিয়ে খেলেছে সে।’’ তবে শুধু ক্রিকেট নয়, পুজোর সময়ে মাস্টারমশাই নাটকে অভিনয় করা তাও আবার মুখ্য চরিত্রে। আরও দুটো নাটকে নির্দেশনা পর্যন্ত দিয়েছেন ৷
সিনিয়র গৌরবাবু বলছেন, কমরেড কিন্তু ছোট থেকেই নীতি-আদর্শ মেনে চলতে ভালবাসতেন। সেই নীতি আদর্শে কোনওদিন আঁচ পড়েনি। হলদে বাড়ির তিনতলায় থাকতেন। সেই ঘর, বাড়ির চেহারায় বদল এসেছে ৷ বারো ঘর ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে মামলা চলছে বাড়ি মালিকদের। তবু এই সেই বাড়ি যেখানে থাকতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১১সি-তে থাকেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার ৷ মধ্যবয়স্ক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, তিনি অনেকবার এই বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখেছেন। ছোট বেলায় অবশ্য এ বাড়ি ও বাড়ির যাতায়াত ছিল। পুজোর সময় মিষ্টি দেওয়া নেওয়াও চলত। ব্যাস ওই অবধিই। ধীরে ধীরে সেই যোগাযোগ আরও ফিকে হয়েছে ৷ তবে শ্যামবাজার হোক বা লাহিড়ী পাড়ার মাঠে সভা করতে আসলে এই পাড়ার প্রতিবেশীরা অনেক সময় দেখে এসেছেন তাদের প্রিয় বাচ্চুকে। উত্তর কলকাতায় বেড়ে ওঠা। অলিগলি তাঁর চেনা। উত্তর থেকেই প্রথম বিধায়ক।