আর জি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায় (বাঁদিকে)৷

R G Kar murder investigation: সেমিনার রুমে ৩০-৩৫ মিনিট, মোবাইলে গিজগিজ করছে…! অপরাধী সঞ্জয়কে ধরিয়ে দিল ফেলে আসা হেডফোন

কলকাতা: সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতার নগরপাল আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়কে বড়মাপের অপরাধী বলে উল্লেখ করেছিলেন৷ শহরের অন্যতম নামকরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় ধৃতের জোরাল যোগের প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন নগরপাল৷ সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের হেডফোনই তার নাগাল পেতে সাহায্য করেছে পুলিশকে৷

কী ভাবে সঞ্জয়কে চিহ্নিত করল পুলিশ?

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে নির্যাতন করে খুনের ঘটনা ঘটে আর জি কর হাসপাতালের চার তলার চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুমে৷ তদন্তে নেমে চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ড সংলগ্ন দুটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে থাকে পুলিশ৷ একটি সিসিটিভির ফুটেজে সঞ্জয়কে দেখা যায়৷ আরও একটি ক্যামেরার ফুটেজে তিন জনকে চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডের দিকে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল৷ জিজ্ঞসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর পরিজন ওই তিন জন৷ হাসপাতালের পক্ষ থেকেই কোনও প্রয়োজনে ওই তিন জনকে ওয়ার্ডে ডাকা হয়৷ ফলে ওই তিন জনকে সন্দেহের তালিকার বাইরে রাখে পুলিশ৷

আরও পড়ুন: ক্যানসারে সদ্য মৃত স্ত্রী, একাধিক বিয়ে! নিজেকে পুলিশকর্মী পরিচয় দিত আর জি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয়

কিন্তু প্রথম থেকেই সঞ্জয়ের বক্তব্যে অসংলগ্নতা পান তদন্তকারীরা৷ ফলে তাকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যায় পুলিশ৷ এরই মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন, হাসপাতালের ঢোকার সময় সঞ্জয়ের গলায় ব্লু টুথ হেড ফোন রয়েছে৷ কিন্তু বেরনোর সময় সেটি নেই৷ ঘটনাচক্রে, নিহত ছাত্রীর দেহের পাশ থেকেও একটি হেডফোন উদ্ধার করেছিল পুলিশ৷ এর পর আর দুই দুইয়ে চার করতে অসুবিধা হয়নি তদন্তকারীদের৷ সঞ্জয়কে আটক করে লালবাজারে নিয়ে গিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত৷

কী উঠে এসেছে তদন্তে?

তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থাতেই সেমিনার রুমে ঢুকেছিল সঞ্জয়৷ ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট ভিতরে ছিল সে৷ ঘটনার পর বাইরে বেরিয়েও মদ্যপান করে সে৷ ধৃতের মোবাইল থেকেও প্রচুর সংখ্যক পর্ন ভিডিও এবং ছবি পেয়েছে পুলিশ৷ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর চারটের আশেপাশে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকছে সঞ্জয়৷ ভোর ৪.৪০ মিনিট নাগাদ জরুরি বিভাগের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে সঞ্জয়৷ সেই সময় তার গলায় কোনও হেডফোন ছিল না৷

কলকাতার পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আর জি কর কাণ্ডে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগেই মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ নিহত ডাক্তারি পড়ুয়ার উপরে কী নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছিল, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেই তার ইঙ্গিত স্পষ্ট৷ এই নির্যাতন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ৷ পাশাপাশি, ডাক্তারি পড়ুয়া ওই ছাত্রীর উপরে এমন নৃশংস অত্যাচার কেন চালাল সঞ্জয়, সেই কারণও জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা৷