আজও এই গ্রামে পালিত হয় না রাখিবন্ধন উৎসব

সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ‘ভয়’ ! আজও এই গ্রামে পালিত হয় না রাখিবন্ধন উৎসব

মেরঠ: সম্প্রতি দেশ জুড়ে হইহই করে পালিত হয়েছে পবিত্র রাখি বন্ধন উৎসব। এই উৎসবে ভাই কিংবা দাদাদের হাতে রাখি বাঁধেন বোন কিংবা দিদিরা। তবে উত্তর প্রদেশের সম্ভাল জেলার একটি গ্রাম রয়েছে। যেখানে বিগত কয়েক বছর ধরে রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হচ্ছে না। এর কারণ জানলে রীতিমতো চমকে উঠবেন!

আরও পড়ুন– একটা ভুলেই তছনছ হয়ে যায় সংস্থা ! অন্ধকার নেমে আসে ‘ইনভার্টার ম্যান অফ ইন্ডিয়া’-র জীবনে ! ভয়াবহ সেই ঘটনা

আসলে সম্ভাল জেলার বেণীপুর চক গ্রামের বাসিন্দারা রাখি বন্ধন উৎসব পালন করেন না। কিন্তু কেন? আসলে গ্রামের বাসিন্দাদের ভয়, যদি তাঁদের বোন এমন কোনও উপহার চান, যা তাঁরা পূরণ করতে পারবেন না, তাহলে কী হবে? মূলত সেই কারণেই এই গ্রামে রাখি উৎসব পালন করা হচ্ছে না।বেণীপুর গ্রামের রাজবীর বলেন যে, এই গ্রামে রাখি উৎসব উদযাপন না করার ইতিহাস বহু বছরের পুরনো। যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ মেনে আসছেন। রাজবীর আরও জানান যে, তিনি আদতে আলিগড়ের সিমরাই গ্রামের অতরৌলি তেহসিলের বাসিন্দা। এদিকে অতরৌলি গ্রামের ঠাকুর পরিবারে বহু বছর আগে কোনও পুত্রসন্তান ছিল না। শুধুমাত্র কন্যাসন্তান ছিল।

আরও পড়ুন- ‘শর্ট স্কার্ট পরিয়ে আমায়…’; শ্যুটিং ফ্লোরে গা ঢাকার উপায় ছিল না, বিবেক অগ্নিহোত্রীকে নিয়ে তনুশ্রীর জবানবন্দি আতঙ্কে ফেলবে

এই পরিস্থিতিতে ঠাকুর পরিবারের মেয়েরা যাদব পরিবারের সন্তানদের হাতে রাখি বাঁধতে শুরু করে। আর এই যাদব পরিবারেরই সন্তান রাজবীর। তিনি বলে চলেন যে, একবার ঠাকুর পরিবারের এক কন্যা মজাচ্ছলেই যাদব পরিবারের ছেলেদের হাতে রাঁখি বেঁধে গ্রামে তাঁদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি উপহার হিসেবে চেয়েছিলেন।

এরপরেই বোনের দাবি পূরণ করতে গ্রাম ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই ভাই। যদিও ঠাকুর পরিবার এবং সেই পরিবারের কন্যা বিশ্লেষণ করে জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা শুধু মজাই করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই ভাই নিজের প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন। গ্রাম ছেড়ে গিয়ে সম্ভালে থাকতে শুরু করেন তিনি।

রাজবীর বলেন, তাঁদের পরিবারের গোত্র বাকিয়া যাদব পরিবারের। এই পরিস্থিতিতে দেশের যে কোনও প্রান্তে বসবাসকারী এই গোত্রের মানুষ রাখিবন্ধন উৎসব উদযাপন করেন না। এই রীতি-ঐতিহ্য কয়েকশো বছর ধরে চলে আসছে। কারণ প্রত্যেকেরই আশঙ্কা যে, তাঁরা যদি এই রীতি থেকে সরে যান, তাহলে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতে পারে।

এখানেই শেষ নয়, বিষয়টা গ্রামের মধ্যে সীমিত নেই। এমনকী, যেসব মেয়েরা এই গ্রামে বিয়ে করে আসেন, তাঁরাও রাখিবন্ধন উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারেন না।