Champai Soren: এবার কি নতুন দল গড়ছেন চম্পাই সোরেন? বিধানসভা নির্বাচনের আগে জোর নাটক জমছে ঝাড়খণ্ডে

ঝাড়খণ্ড: এখনই তিনি বাতিলের খাতায় নাম লেখাচ্ছেন না৷ এখনই নিচ্ছেন না অবসর৷ বরং, আসছে বিধানসভা নির্বাচনে হেমন্ত সোরেনের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি৷ বুধবার এমন কথাই ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন ক্ষুব্ধ ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতা তথা ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন৷

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করার পরে হঠাৎ করে তাঁর দিল্লি যাত্রা নিয়ে উঠছিল প্রশ্ন৷ রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছিলেন, এবার বোধহয় হেমন্ত সোরেনের সঙ্গ ত্যাগ করে বিজেপি শিবিরেই নাম লেখাবেন প্রবীণ এই আদিবাসী নেতা৷ সে সম্ভাবনা যে একেবারেই ক্ষীণ তেমনটাও ভাবার সময় আসেনি এখনও৷ তবে পদ্ম শিবিরে যোগদানের জল্পনার মাঝেই নতুন খবর ভাসিয়ে দিয়েছেন চম্পাই সোরেন৷

এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছি না৷ যে নতুন অধ্যায় আমি শুরু করেছি, তাতে নতুন সংগঠন আরও জোরাল করব আমি, আর এর মধ্যে যদি কোনও ভাল বন্ধু পেয়ে যাই, তাহলে আমরা একসাথে মানুষ এবং রাজ্যের সেবা করব৷ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে৷’’

আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদের ডাক! বিশৃঙ্খলা এড়াতে আরও নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে সাবধানী নবান্ন

চম্পাইয়ের এই মন্তব্যের পরে রাজনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, তাহলে কি চলতি বছরে ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন কোনও রাজনৈতিক দল তৈরি করে হেমন্ত সোরেনকে বিপাকে ফেলার পরিকল্পনা করছেন তিনি!

চলতি বছরের শুরুর দিকে জমি কেলেঙ্কারি কাণ্ডে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন শিবু সোরেন পুত্র তথা জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন৷ পরে ইডির হাতে গ্রেফতার হতে হয় তাঁকে৷ সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানো হয় দলের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা চম্পাই সোরেনকে৷ কিন্তু, হেমন্ত সোরেনের মুক্তি নিশ্চিত হতেই ফের সরিয়ে দেওয়া হয় চম্পাইকে৷ মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরে আসেন হেমন্ত৷

চম্পাই সোরেনের দাবি, এই দ্বিতীয় দফার ক্ষমতা হস্তান্তরকালে দলের শীর্ষনেতৃত্বের তরফে তাঁর সরকারের প্রতি অনৈতিক আচরণ করা হয়৷ তাঁকে না জানিয়েই বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁর সরকারের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের সমস্ত কর্মসূচি৷ এতে যারপরনাই অপমানিত বোধ করেছিলেন চম্পাই৷ তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত লাগে৷ তখনই দল থেকে বাড়ে দূরত্ব৷

আরও পড়ুন: ‘লোকদেখানো আন্দোলন’ নয়! মানুষের চোখে ধরা পড়ুক সুকান্ত-শুভেন্দু-দিলীপের ঐক্যের ছবি, বার্তা দিল্লির

সিংভূম তথা বর্তমান ঝাড়খণ্ডে ‘ঝাড়খণ্ডের বাঘ’ নামে পরিচিত জনজাতির এই নেতা৷ ম্যাট্রিক পাশ করার পরেই যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পৃথক রাজ্যের দাবিতে করা শিবু সোরেনের আন্দোলনে৷ দক্ষিণ ঝাড়খণ্ডে চম্পাই সোরেনের প্রভাব এককথায় অনস্বীকার্য৷ ১৯৯১ সালে প্রথম তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে অবিভক্ত বিহারের সরাইকেলা আসন থেকে উপ নির্বাচনে জয়ী হন৷ চার বছর পরে ওই একই কেন্দ্র থেকে শিবু সোরেনের দল জেএমএম-এর টিকিটে ভোটে জেতেন৷ হারিয়ে দেন বিজেপির পঞ্চু টুডুকে৷ তবে ২০০০ সালে ঝাড়খণ্ডের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অনন্ত রাম টুডুর কাছে হেরে যান তিনি৷ ২০০৫ সালে অবশ্য তিনি ফের আসনটি পুনরুদ্ধার করেন৷

শিবু সোরেনের বিজেপির এনডিএর জোটে থাকাকালীন অর্জুন মুণ্ডা সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন চম্পাই সোরেন৷ সময়টা সেপ্টেম্বর ২০১০ থেকে জানুয়ারি ২০১৩৷

পরে হেমন্ত সোরেন যখন ২০১৯ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠন করেন, তখনও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন চম্পাই৷ সেই সময় খাদ্য ও পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷