TMC on Nabanna Abhijan: ‘লাশ চেয়েছিল, হল না!’, বুধবারের বনধ আসলে ষড়যন্ত্র, বিজেপি-কে ঝাঁঝাল আক্রমণ ব্রাত্য-চন্দ্রিমার

কলকাতা: নবান্ন অভিযান ‘ফ্লপ শো’, ‘বনধ এখানে হচ্ছে না, হবে না,’ ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযান ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ডাকা বনধের বিরোধিতায় স্পষ্টভাবে এমনই বার্তা দিতে দেখা গেল রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে৷ মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অরূপ বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেনকে পাশে নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করার সময় চন্দ্রিমা রেল কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করেন, আগামিকাল, ২৮ অগাস্ট, বুধবার যেন রেল বন্ধ না রাখেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কারণ ওই দিন তাঁদের দলের ছাত্রশাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক অনুষ্ঠান রয়েছে৷

এদিন সকাল থেকে ‘ছাত্রসমাজে’র ডাকা নবান্ন অভিযানকে প্রতিহত করতে চতুর্দিকে ব্যারিকেড করেছিল পুলিশ, মোতায়েন ছিল বাহিনী৷ মিছিল শুরু হতেই অবশ্য ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি৷ পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে বিক্ষোভকারীদের৷ আক্রান্ত হয় পুলিশ৷ পোড়ানো হয় পুলিশের বাইক৷ অন্যদিকে, বিক্ষোভে আটক ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের ছাড়াতে লালবাজার অভিযান ও অবস্থান করেন সুকান্ত৷ নবান্ন অভিযানে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে আগামিকাল, বুধবার রাজ্যজুড়ে বনধও ডাকেন তিনি৷

বিজেপি রাজ্য সভাপতির বনধ ডাকার কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য রাজ্য সরকারের তরফে উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার এই বনধ মানছে না৷ সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক, পাশাপাশি, দোকানপাট, পরিবহণ সবকিছুই খোলা থাকবে রোজের মতো৷

আরও পড়ুন: এবার রাস্তার মাঝেই বসে পড়লেন সুকান্ত! পুলিশ বিরোধী স্লোগানে তপ্ত লালবাজার চত্বর, বিক্ষোভকারীদের ছাড়াতে অবস্থান

তৃণমূলের তরফে অভিযোগ ওঠে আগামিকাল তৃণমূল ছাত্রপরিষদের সমাবেশের দিনই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই বনধ ডাকা হয়েছে বিজেপির তরফে৷ এর গোটাটাই ষড়যন্ত্র৷

এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আজ আপনারা জানেন অনেক প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল অরাজকতা তৈরি করার জন্য, বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা হয়েছে। গুন্ডা আমদানি করা হয়েছে। পুলিশকে অনেক জায়গায় আন্দোলনের শিকার করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তার ধৈর্য্য হারায়নি। ওদের অবশ্য চাহিদা ছিল লাশ চাই, কিন্তু আজ সেই লাশটা হল না।’’

মন্ত্রী জানান, ‘‘আর একটা অরাজকতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা হল ১২ ঘন্টার বনধ৷ পুজোর আগে অনেক বাণিজ্যিক লেনদেন হয়। সেটা বন্ধ করে দিতে হবে। তারই চেষ্টা৷ কীসের জন্য এই বনধের ডাক সবাই বুঝতে পারছেন। আজ যে আন্দোলনের ডাক ছিল তাতে সাধারণ মানুষের অংশ ছিল না। মানুষ জানে এখানে বনধের রাজনীতি চলে না। এই বনধের পিছনে অভিসন্ধি আছে।’’

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের জলকামানের জল শেষ, টিয়ার গ্যাস শেষ…!’ বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তভার ইতিমধ্যেই হাতে তুলে নিয়েছে সিবিআই৷ দিন সেই মনে করিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের কাছে যান, সিজিওতে যান৷ কী ধরনের আন্দোলন আপনারা করতে চেয়েছিলেন মানুষ তাতে বুঝেছে। রেল কে বলেছি কাল রেল বন্ধ করবেন না। কাল আরও একটা কর্মসূচি আছে।’’

বিক্ষোভে জাতীয় পতাকার ব্যবহার নিয়েও মন্তব্য করেন মন্ত্রী৷ তাঁর হুঁশিয়ারি জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে। এটাও তাঁরা নজরে রেখেছেন। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন৷

বুধবার, অর্থাৎ, ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচির দিনই রাজ্যজুড়ে বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি৷ এদিন বিষয়টিকে অভিসন্ধি বলে উল্লেখ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও৷ তিনি বলেন, ‘‘সবাই যখন বিচার চাইছেন তখন ওরা লাশের সন্ধানে বেরিয়ে গেলেন। নবান্ন অভিযানের নাম নৈরাজ্য করার চেষ্টা করলেন। বাংলাবাসীকে বনধ ট্যাবলেটের নাম করে গেলাতে চেষ্টা করছেন। কাল ২৮ অগাস্ট টিএমসিপির কর্মসূচি আছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ছাত্র রা আসছে। আমরা মনে করছি এর পিছনে গভীর চক্রান্ত আছে। যাতে আমাদের নেতারা বার্তা না দিতে পারেন। কাল আমাদের নেতানেত্রী বক্তব্য রাখবেন।’’

ব্রাত্য বসু জানান, মৃত দেহের সন্ধান করে যে অভিসন্ধি লক্ষ করেছি সেই ফাঁদে পা দেবেন না। ইউজিসির নেট ছিল, সেখানে তো সমস্যা হওয়ার কথা,,, কাল সমস্ত বাস থাকবে। প্রশাসন ছাত্র ছাত্রীদের পাশে থাকবে।