আরজি কর কাণ্ডে আদালত

Calcutta High Court: ‘আরজি কর নিয়ে গভীর ক্ষত…’ মিছিল-বনধে রাজ্যের আচরণে বিরক্তি প্রকাশ প্রধান বিচারপতির

কলকাতা: রাজ্য জুড়ে একাধিক মিছিল ও বনধ নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞনম। যদিও বিজেপির ধরনা মঞ্চ নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপই করল না ডিভিশন বেঞ্চ। বিজেপির ধরনা মঞ্চের স্থান বদলের আবেদন ফিরিয়ে দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। উল্টে রাজ্যের আচরণ নিয়েই প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞনম।

আরজি কর কাণ্ডের আন্দোলনে রাজ্যের আচরণ নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আরজি কর নিয়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে কিছু মানুষের মনে। ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর জন্য কিছু করুন। ক্ষত সারাতে কিছু পদক্ষেপ করুন। ক্ষতে নতুন করে রেকটিফায়েড স্পিরিট ঢালবেন না। ভারসাম্য রেখে কাজ করুন। রাজ্যে যথেষ্ট দক্ষ অফিসার আছে। ১০ ফুট না পিছোলে বলুন ৩ ফুট পিছোতে। বিক্ষুব্ধ মানুষের সঙ্গে কথা বলুন তাদের ভাল ভাবে বোঝানোর ব্যবস্থা করুন।

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ‘এতগুলো’ ছুটি…! কবে কবে বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ? দেখুন তারিখ-সহ ছুটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা

মামলায় বিজেপির ধরনা মঞ্চের অবস্থান বদল নিয়ে রাজ্যের আইনজীবী অমল সেন পিয়ারলেস হোটেলের সামনে ধরনা না করার আর্জি জানান। আবেদনে বলা হয়, পরিবর্তে ওয়াই চ্যানেলের সামনে হোক ধরনা। আট দিন কমিয়ে দুদিন হোক।

এরপরেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘ফাইল করলেই খারিজ করে দেব। আমরা দেখেছি আপনাদের পদ্ধতি। যেখানে ডান হাতে কাজ হয় না সেখান বাঁ হাত ব্যবহার করেন। বিষয়টি তুললে আরও লজ্জায় পড়তে হবে আপনাদের’। বুধবার কলকাতায় চারটি র‍্যালি হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে মোট ৪৬টি বিভিন্ন বিক্ষোভ অবস্থান, মিছিল হয়েছে। এক পক্ষ বিচার করলে হবে না। উভয় পক্ষেই হয়েছে’।

আরও পড়ুন: ‘…অসুস্থ’, ‘আত্মহত্যা করেছে..’, ‘তাড়াতাড়ি করুন..’, বাবা-মাকে ফোনে কী বলেছিল আরজি কর? ফাঁস চাঞ্চল্যকর অডিও-ক্লিপ

মামলায় রাজ্যের পক্ষ থেকে যুক্তি ছিল, ‘আট দিন ধরনা হবে। তাতে রাস্তা ব্লক হবে, তাই আপিল মামলা করতে চায় রাজ্য। তাতে প্রধান বিচারপতির প্রতিক্রিয়া, ‘একটা মিছিলই যথেষ্ট। ৩০০-৪০০ জমায়েত। আমি নিজেও এই জ্যামে আটকে গেছি বহুবার। এসবের জন্য স্কুলও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই হচ্ছে। সোমবার ডিসি কলকাতা পুলিশ, হাইকোর্ট, রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানিয়েছে জজেরা কোন পথ ব্যবহার করে হাইকোর্টে আসবে। কিছুটা এ পথ কিছুটা বি পথ তারপর লঞ্চ সেখান থেকে গাড়ি থাকবে ওখানে। এইভাবে হাইকোর্টে আসা। আমি আমার ড্রাইভারকে বলেছি অন্য রুট ব্যবহার না করে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকো। থেকেছি দাঁড়িয়ে ২৫ মিনিট ৩০ মিনিট।’

প্রসঙ্গত, বুধবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ বিজেপিকে ধর্মতলায় ধরনার অনুমতি দেয়। সেই নির্দেশের বদল চেয়ে সিঙ্গেল বেঞ্চে প্রথমে দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। রাজ্যের আবেদন ফিরিয়ে দেয় একক বেঞ্চ। তাই একক বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল জরুরি মামলা করার অনুমতি চাওয়া হয় রাজ্যের তরফে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। তখনই রাজ্যে মিছিল নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি এবং একইসঙ্গে রাজ্যের দু’রকম চিন্তাভাবনা এবং আরজিকর ক্ষত সাড়াতে পদক্ষেপ করার পরামর্শ প্রধান বিচারপতি।