নির্যাতিতার মায়ের কান্না ভেজা চিঠি

RG Kar Doctor’s Mother Letter: ‘আমি হতভাগিনী তিলোত্তমার মা বলছি…’ শিক্ষক দিবসে নির্যাতিতার মায়ের কান্না ভেজা চিঠি, লিখলেন, মেয়ে বলত…

কলকাতা: প্রায় এক মাস হতে চলল ওলোট পালট হয়ে গিয়েছে জীবন। নির্মমভাবে মা-বাবার কোল ছেড়েছে একমাত্র সন্তান। এক সকালের একটামাত্র ফোন মুহূর্তের মধ্যে সব কিছু ভেঙে চুরে তছনছ করে দিয়েছে। মায়ের মন কিছুতেই যেন এখনও ভাবতে পারে না একমাত্র সন্তানের এই নির্মম মৃত্যু। নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে। মেয়ের পরিণতির সুবিচারের আশায় এখন অপেক্ষায় কাটছে মায়ের সকাল থেকে রাত। শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে শেল বেধা বুকে এবার খোলা চিঠি লিখলেন তিলোত্তমার মা। যে চিঠির পরতে পরতে ধরা পড়ল সন্তানহারা মায়ের যন্ত্রণা। সকলের কাছে চাইলেন মেয়ের মৃত্যুর বিচারের আর্জি।

আরও পড়ুন: সন্দীপের ‘সব’ নাকি দেখতেন…! ইডির আতশ কাচের তলায় সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ‘বিশ্বস্ত’ চিকিৎসক! কে তিনি?

খোলা চিঠিতে তিলোত্তমার মা লিখেছেন, ‘আজ শিক্ষক দিবসে আমি আমার মেয়ের হয়ে ওঁর সকল শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রণাম জানাই। ছেলেবেলা থেকেই ওঁর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। আপনারা ছিলেন সেই স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কান্ডারী। আমরা অভিভাবক হিসাবে পাশে থেকেছি, নিজেও অনেক কষ্ট করেছিল। কিন্তু আমি মনে করি, আপনাদের মত ভাল ভাল শিক্ষকদেরকে সে পাশে পেয়েছিল বলেই, মেয়ে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে পেরেছিল।’

চিঠিতে মেয়ের স্মৃতিচারণ করে মা লেখেন, “মেয়ে বলত, মা আমার টাকা, পয়সা চাই না, শুধু চাই নামের পাশে অনেকগুলো ডিগ্রি, আর আমি যেন অনেক অনেক রোগীকে ভাল পারি। সেদিন বৃহস্পতিবার ও ঘর থেকে বেরিয়ে হসপিটালে অনেক রোগীকে পরিষেবা দেয় এবং অন ডিউটি অবস্থায় কিছু দুর্বৃত্তদের হাতে বলি হয়। চরম নিষ্ঠুরতাবে তার স্বপ্নগুলোকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। অধরা থাকে সেই রাতে লেখা তার এমডিতে গোল্ড মডেল পাওয়ার স্বপ্ন।”

আরও পড়ুন: মুখে মাস্ক, চোখে সানগ্লাস, মাথা আঁচলে ঢাকা…! ইডিকে তালা খুলে দিয়েই বিস্ফোরক সন্দীপের স্ত্রী! কী বললেন সঙ্গীতা?

চিঠির শেষে নির্যাতিতার মা লেখেন, “একমাত্র কন্যার মায়ের আকুল আর্তি, সকল মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যভবনের কর্তৃপক্ষ, নার্সিংস্টাফ সবার কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনাদের কাছে যদি কোন তথ্য প্রমাণ থাকে তবে সেগুলো সামনে আনুন। কারণ ভাল মানুষের নীরবতা অপরাধীদের সাহস যোগায় বলেই আমি মনে করি। চিকিৎসক সমাজ, এবং সাধারণ মানুষ যে আন্দোলন করছে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এবং শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রণাম জানিয়ে মেয়ের সুবিচারের আশায়, তিলোত্তমার মা।”