সেই সঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা, যেখানে ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করা হয়েছিল।

RG Kar Case-SupremeCourt: ‘ চালান ছাড়াই ময়নাতদন্ত হয়ে গেল?’ আরজি কর মামলায় প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির

কলকাতা: সোমবার ছিল সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়া ধর্ষণ ও খুনের মামলার দ্বিতীয় শুনানি আর সেখানেই একের পর এক উঠে এল সংশয়।প্রশ্ন।ধোঁয়াশা। প্রধান বিচারপতি সিবিআই-কে প্রশ্ন করেন, ”দেহ যখন ময়নাতদন্তের জন্য হস্তান্তর করা হয়, তখন যে চালানটি দেওয়া হয়, সেটি কোথায়?” এই চালানটি প্রয়োজনীয় কারণ দেহের সঙ্গে আর কী কী বস্তু পাঠানো হয়েছিল, তার উল্লেখ সেখানে থাকে।

উত্তরে সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, তাঁদের কাছে যে ফাইল দেওয়া হয়েছিল, সেখানে কোনও চালান নেই। তখন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ” চালান ছাড়াই ময়নাতদন্ত হয়ে গেল?” বিচারপতি পাদরিওয়ালা-র মন্তব্য, ” চালান যদি না থাকে বা এই নথি যদি না পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে কিছু একটা হয়েছে।” প্রধান বিচারপতির অভিযোগ, এফআইআর দায়ের করায় অন্তত ১৪ ঘণ্টা দেরি হয়েছে।”

সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করার আগে শুনানি চলছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই সময় মামলার একটি পক্ষ ছিলেন এক জনস্বার্থ মামলাকারীও। তাঁর হয়ে সোমবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি-ও। প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে এডুলজি বলেন, ” ফরেন্সিক টিম ডাকতে গেলে এফআইআর করতে হবে। তাহলে সেখানে একটা এফআইআর থাকতে হবে। সেই এফআইআর-এর তথ্য হয় লুকোনো হয়েছে অথবা নষ্ট করা হয়েছে। আমরা জানি না।  কোর্টের নির্দেশ মেনে ভারতের কোথাও সন্ধ্যা ৬টার পরে ময়নাতদন্ত করা হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর করা হয়েছিল। সার্চ এবং সিজার করার পর কোনও এফআইআর রেজিস্ট্রি করা হয়নি। নির্যাতিতার জামাকাপড় ময়নাতদন্তে পাঠানোর পরে দেওয়া হয়।”

এডুলজি-র আর-ও অভিযোগ, ” ঘটনাস্থলের টাইলস এবং বেসিন বদলে ফেলা হয়েছে। ফলে লুমিনাস টেস্টও করা যাবে না। নির্যাতিতার সোয়াবের নমুনা ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সংরক্ষিত হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তা হয়নি। ঘটনার এক মাস পরেও কেন নির্যাতিতার মৃত্যুর সঠিক সময় জানা গেল না?” এর পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ” সিবিআই এই বিষয়ে অবগত, তাঁদের তদন্ত করতে দিন।” মেহতার কথায়, রেপ এবং মার্ডারের মত ঘটনায় প্রথম পাঁচ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সিবিআই পাঁচ দিন পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ততদিনে যদি কিছু পাল্টে গিয়ে থাকে, তবে তা উদ্ধার করা যথেষ্ট কষ্টকর।

আরজি করের ফরেন্সিক রিপোর্ট নিয়েও রয়েছে একরাশ ধোঁয়াশা। সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি কখন বানানো হয়েছিল, সেই সময়ের  উল্লেখ নেই রিপোর্টে। যদিও তার বিরোধিতা করেন রাজ্যের আইনজীবী সিব্বল। তাঁর পাল্টা যুক্তি, সব কিছুই উল্লেখ রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রসঙ্গে জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী এডুলজি-র অভিযোগ, ” ভিডিয়োগ্রাফি কে করেছিলেন? সেই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। সিডি রাইটেবল ছিল না কি রিরাইটেবল, সেই বিষয়েও কোনও তথ্য নেই।”

সিসিটিভি ফুটেজ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সিবিআই-কে প্রশ্ন করেন, ” ফুটেজে শুধু দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত সেমিনার রুমে ঢুকছে। আর কারা কারা সেখানে ঢুকেছিল? সেই তথ্য পেয়েছেন? সেই তথ্য পরের রিপোর্টে দিন” প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সোমবার নির্দেশ দিয়েছেন, সিবিআইকে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে ফের একটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে।