চিকিৎসা ব্যবস্থায় জোর দেওয়ার নির্দেশ মানিক সাহার

Tripura News: জনগণের সমস্যা সমাধানে ত্রিপুরায় শুরু ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচি, প্রশাসনকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার পরামর্শ মানিক সাহার

আগরতলা: জনগণের সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ত্রিপুরায় শুরু হয়েছে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচি৷ এই কর্মসূচির ৩১তম পর্বে ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমস্যা পীড়িত মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সরকারি বাসভবনে এসে তাঁদের নানাবিধ সমস্যার কথা তাঁর কাছে তুলে ধরেন।

তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এসেছেন চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে। সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষনাৎ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন: আন্দোলনের মধ্যেই অসুস্থ মহিলা পুলিশ কর্মীর চিকিৎসা জুনিয়র ডাক্তাদের, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগের পাল্টা ‘ভাইরাল’ পোস্ট

‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচিতে পূর্ব প্রতাপগড়ের অনুপ ঘোষ তাঁর দুই বছরের শিশুকন্যার চিকিৎসা সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর মেয়ে জন্মের পর থেকে পিওর রেড সেল অ্যাপলেসিয়া (পিআরসিএ) সংক্রান্ত রোগে ভুগছে।

আরও পড়ুন: এনআরআই-এর বাড়িতে গ্রেনেড হামলা, বিস্ফোরণের কেঁপে উঠল পাড়া, প্রকাশ্যে সিসিটিভি ফুটেজ

পেশায় দিনমজুর অনুপ ঘোষ তাঁর মেয়ের চিকিৎসার খরচ মেটাতে ও সংসার চালাতে খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ, ১২সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান।

মানিক সাহা অনুপ ঘোষের মেয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে অনুপ ঘোষকে কিভাবে সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য তিনি ত্রিপুরার সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার অচিন্ত্য কিলিকদারকে নির্দেশ দেন।

ধলাই জেলার গন্ডাছড়ার চন্দন মজুমদারও তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে দেখা করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। চন্দন মজুমদারের স্ত্রী গত দেড় বছর ধরে ব্রেস্ট ক্যান্সারে ভুগছেন। পেশায় পত্রিকা হকার চন্দন মজুমদার আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ তার স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ ও সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসেছিলেন প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আর্জি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী অটল বিহারী রিজিওন্যাল ক্যান্সার সেন্টারের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ এস দেববর্মাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে পূর্ব যোগেন্দ্রনগরের ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধি যুবক প্রসেনজিৎ দাস তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রসেনজিৎ দাস বর্তমানে ডান পায়ে এলিফ্যানটিয়াসিস লিমফেডিমা (Elephantiasis Lymphedema) সংক্রান্ত জটিল রোগে ভুগছেন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সে তার সঠিক চিকিৎসাও করাতে পারছে না। মানিক সাহা জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে  এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

অভয়নগরের রুবি দেববর্মা তাঁর সমস্যা নিয়ে হাজির হন মূখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে। রুবি দেববর্মা বিগত কয়েক বছর ধরে লিভার টিউমার জনিত কঠিন সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা পেতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন।

তাছাড়াও মানিক সাহার বাসভবনে আসা কবিরাজ টিলার সুব্রত দাস, চন্দ্রপুরের চন্দ্রিমা নন্দী মজুমদার, বনমালীপুরের মিতা সাহা, এস ডি ও চৌমুহনীর ঝুমুর সাহার মতো অনেকেই চিকিৎসায় সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা করে দেওয়ার পাশাপাশি এই দিন মুখ্যমন্ত্রী জমি-সহ আইনী সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তিরও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড: প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার অচিন্ত্য কিলিকদার, জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী, অটল বিহারী রিজিওন্যাল ক্যান্সার সেন্টারের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ এস দেববর্মা প্রমুখ।