নিহত ২৯ বছরের মহালক্ষ্মী। ফ্রিজের মধ্যে তরুণীর ৫৯ টুকরো দেহে লুকিয়ে প্রেম ও ঈর্ষার গল্প? 'হেট স্টোরি' ফাঁস

Bengaluru Murder Update: একাধিক সম্পর্ক আর ঈর্ষা থেকে শুরু খুন এবং আত্মহত্যা; টানটান থ্রিলারের থেকে কোনও অংশে যেন কম নয় বেঙ্গালুরুর মহালক্ষ্মীর হত্যাকাণ্ড

ভদ্রক: মহালক্ষ্মী খুনের ঘটনার পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে রহস্য। কোনও অংশে তা থ্রিলারধর্মী কোনও ছবির তুলনায় কিছু কম নয়। বিয়ের প্রস্তাব থেকে শুরু করে, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, একাধিক প্রেমের সম্পর্ক এবং অন্ধ রাগ কী নেই! ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুর এই খুনের ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশেই।

আর সবথেকে বড় কথা হল, মহালক্ষ্মী হত্যায় দেখা গিয়েছে দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের ছায়া। পুলিশের সন্দেহ, মহালক্ষ্মী খুনে মূল অভিযুক্ত মুক্তিরঞ্জন রায় দিল্লির শ্রদ্ধা খুনের ভিডিও-র উপর নজর রেখেছিল। যার ফলে ১৮ দিন ধরে রেফ্রিজারেটরে ঠেসে ভরা ছিল মহালক্ষ্মীর দেহের ৫৯টি টুকরো। এরপর বেঙ্গালুরু থেকে পালিয়ে ওড়িশায় গিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।

আরও পড়ুন- ‘পুলিশ’ এসে গাড়িতে কী রেখে গেল…! ১০ লক্ষ টাকার ফ্যাঁসাদে ব্যক্তি… সাংঘাতিক!

গত প্রায় ৬ মাস ধরে সম্পর্ক ছিল মুক্তিরঞ্জন এবং মহালক্ষ্মীর কিন্তু হামেশাই ঝগড়া-মারামারি হত তাঁদের। এমনকী থানা-পুলিশ পর্যন্ত হয়েছিল। তবে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মুক্তিরঞ্জন গিয়েছিল মহালক্ষ্মীর বাড়িতে। ফের ঝগড়া হয়। কারণ মুক্তিরঞ্জনকে বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিলেন মহালক্ষ্মী। এদিকে হেমন্তের সঙ্গে বিয়ে ছিল তাঁর। তাঁদের একটি কন্যাও রয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আলাদা থাকতেন মহালক্ষ্মী-হেমন্ত। কারণ হেমন্তের সন্দেহ ছিল, আশরফ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মহালক্ষ্মীর।

  আরও পড়ুন- MBBS পড়ার স্বপ্ন? কোন দেশ থেকে ডিগ্রি নিলে মাইনে হবে ২ কোটি টাকা? ভীষণ সহজ!

একই সন্দেহ ছিল মুক্তিরঞ্জনেরও। যদিও হেমন্তের সঙ্গে মহালক্ষ্মীর বিয়ের কথা জানত সে। তার সন্দেহ ছিল, মহালক্ষ্মীর সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণেই বিয়েতে অস্বীকার করেছিল মুক্তিরঞ্জন। তদন্তকারী অফিসার News18-কে জানান যে, মহালক্ষ্মীর ফোনে অন্য পুরুষদের ছবি দেখেছিল মুক্তিরঞ্জন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলাও হচ্ছিল। এমনকী নিজের ছোট ভাই স্মৃতিরঞ্জনের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করেছিল সে।

পুলিশের দাবি, মহালক্ষ্মীর খুব সহজেই মেজাজ হারিয়ে ফেলতেন। একটু উগ্র প্রকৃতির। ফলে দু’পক্ষ থেকেই শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল স্থানীয় থানায়। যদিও এই একই ধরনের অভিযোগ এসেছিল মহালক্ষ্মীর প্রাক্তন স্বামী হেমন্তের থেকে। তদন্তে জানা গিয়েছে যে, খুনটা হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই। মেজাজ হারিয়ে মহালক্ষ্মীকে খুন করে মুক্তিরঞ্জন। এরপর সারা রাত দেহ আগলে বসেছিল। এমনকী মৃতদেহ নিয়ে কী ব্যবস্থা করা যায়, সেই ছক কষেছিল সে। আর এর জন্য ভিডিও দেখেছিল মুক্তিরঞ্জন। এমনকী পরের দিন সকালে বাসনের দোকানে গিয়ে ধারালো ছুরি কিনতেও দেখা গিয়েছিল তাকে।

এদিকে এই কাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল মুক্তিরঞ্জন। নিজের ফোনটাও বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর ফোন অন করতেই যোগাযোগ করেন তাঁর ভাই। এরপর স্মৃতিরঞ্জনের কাছে খুনের কথা কবুল করেছেন তিনি। ট্রেস করে পুলিশ জানতে পারে যে, পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে মুক্তিরঞ্জন। এরপর আরও খতিয়ে দেখা যায় যে, ওড়িশায় অন হয়েছে তাঁর ফোনটি। ফলে তাকে সেখান থেকে খুঁজে বার করতে তিনটি দলকে পাঠিয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

এর পর অবশ্য ওড়িশার ভদ্রক জেলায় নিজের গ্রামের কাছেই গত ২৫ সেপ্টেম্বর গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলেছে মুক্তিরঞ্জনের দেহ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোটও। সেখানেই মহালক্ষ্মীকে খুনের কথা কবুল করেছে সে। ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে যে, ওড়িয়া ভাষায় লেখা ওই নোটে লেখা রয়েছে, আমি করেছি। আমি খুন করেছি। ওর প্রতি তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। রোজ রোজ ঝামেলা আর বারবার টাকা চাওয়ার এই বিষয়টা খুবই বিরক্তিকর ছিল।