Mamata Banerjee

Mamata Banerjee:বন্যার পাশাপাশি মহালয়ায় কোটাল, জেলা শাসক-সুপারদের কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা: ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জায়গা প্লাবিত। ঘাটাল পাশকুড়ার মতো বেশকিছু জায়গা থেকে এখনও জল নামেনি। কোশীর জলে থৈথৈ উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশ। এর পাশাপাশি মহালয়ার দিন কোটাল আবার নতুন করে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। কারণ কোটালের জলস্ফীতিতে নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই পুজোর মুখে এই তিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে রণকৌশল নিয়েছে নবান্ন।

সোমবার রাজ্যের জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যসচিব সাংবিধানিক বৈঠকে জানিয়েছেন, গতকাল মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আজকে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার ও পুলিশের শীর্ষকার্তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরাও বৈঠকে হাজির ছিলেন। দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি এখন কেমন তা নিয়ে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। কোথায় কী অবস্থা, কোথায় সমস্যা আছে তা নিয়ে জেলাশাসকরা জানান। কোশী থেকে জল ছাড়ার ফলে আর কী অসুবিধা, বা কোন-কোন এলাকা প্লাবিত হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‌।

প্রধানত মুর্শিদাবাদ, মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর প্লাবনের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া এর আগে ডিভিসি জল ছাড়ার জন্য যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছিল সেই সব জেলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপারদের কাছ থেকেও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও উত্তর ২৪ পরগনার কিছু এলাকা, বনগাঁ, গোবরডাঙ্গা, গাইঘাটার কী অবস্থা সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। প্লাবনের জন্য অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণের কাজ এখন চালিয়ে যেতে হবে যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। বিশেষ করে জামা কাপড় ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁদের বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের ন্যূনতম তিনটে করে ত্রিপল দেওয়া হবে যাতে তাঁরা অস্থায়ীভাবে থাকার জায়গা তৈরি করতে পারে। এইসব নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:ত্রাণ নিয়ে জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, দুই কর্তাকে বিশেষ নির্দেশ

‌মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ” উৎসবের সময় আসছে। সেই কারণে আমরা চিন্তায় রয়েছি। প্রশাসনকে সক্রিয় সজাগ থাকতে হবে। প্রশাসনকে মানুষের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। পাহাড়ে যে ধস নেমেছে রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। জাতীয় সড়কের অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খানাখন্দে জল জমে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এটা অতি দ্রুত মেরামত করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। বিশেষ করে মহালয়ার দিন ভরা কোটাল রয়েছে। যে-সব জায়গায় ভরা কোটালের আশঙ্কা রয়েছে সেখানে তিন তারিখ পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। পরিস্থিতি বুঝলে আগাম নিরাপদ জায়গায় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

আরও পড়ুন:একাধিক অভিযোগ, ডেকেছে ইডিও! সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে আরজি করে এবার বড় পদক্ষেপ

এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ” খানাকুল, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, ঘাটাল, গাইঘাটা, গোবরডাঙ্গার মতো এলাকায় এখনও জল জমে আছে। জল নামলে চাষের ক্ষয়ক্ষতি ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হবে। চাষের ক্ষয়ক্ষতির জন্য বাংলা শস্য বীমা থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় কৃষকদের। এ’বছর তার সময়সীমা আরও একমাস বাড়ানো হয়েছে। গতকাল শিলিগুড়িতে বৈঠক হয়েছে। কোশী থেকে ৬ লাখের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। বিহারের ১৩ টি জেলাকে সতর্ক করা হয়েছে। এই জল বাংলায় আসছে। বিশেষ করে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে আমরা সতর্ক করেছি। জল আসা আমরা আটকাতে পারব না। তবে বিপর্যয় যতটা মোকাবিলা করা যায়, সেই চেষ্টা প্রশাসন করছে।”