ব্যবসা-বাণিজ্য Pension Scheme: ভারতে কি ১ কোটি টাকা মাসে পেনশন পাওয়া সম্ভব? জানুন আসল হিসেব Gallery October 1, 2024 Bangla Digital Desk ভারতে প্রতি মাসে ১ কোটি টাকা পেনশন, কথাটা শুনে অনেকেই অবাক হলেও, কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা আছে, যেখানে ব্যক্তিরা মাসিক ১ কোটি টাকা বা তার বেশি পেনশন পেতে পারেন। ভারতে মাসিক ১ কোটি টাকা পেনশন পাওয়ার ধারণাটি একটি স্বপ্নের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু, এটা কি একেবারেই অসম্ভব? এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জনের জন্য জানতে হবে কয়েকটি উপায়। বেশিরভাগ ব্যক্তির জন্য, মাসিক ১ কোটি টাকা পেনশন একটি অলৌকিক স্বপ্ন। এর প্রাথমিক কারণ হল অবসর তহবিল, পেনশন স্কিম এবং সরকারি পেনশন সাধারণত এই যথেষ্ট পরিমাণ টাকা অফার করে না। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড এবং সার্কেল অফ কাউন্সিলের সিনিয়র পার্টনার জেসমিন ডামকেওয়ালা এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, “একটি বড় অবসরের কর্পাস সহ, অর্জিত সুদ বা রিটার্ন এই মাত্রার মাসিক পেনশন বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে। এর একটি কারণ শাস্তিমূলক কর ব্যবস্থা। নিজেদের অর্থ বৃদ্ধির জন্য অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে সক্ষম হতে হবে। কেউ বলতে পারেন যে, বর্তমান কর ব্যবস্থার সঙ্গে দেশটি আরও বেশি সমাজতান্ত্রিক এবং কম গণতান্ত্রিক বলে মনে হচ্ছে।” নিয়মের ব্যতিক্রম –যাই হোক, কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা রয়েছে যেখানে ব্যক্তিরা মাসিক ১ কোটি টাকা বা তার বেশি পেনশন পেতে পারেন। জেসমিন ডামকেওয়ালা জানিয়েছেন যে, “উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ বা ব্যবসায়িক স্বার্থ সহ উচ্চ আয়ের ব্যক্তিরা এই জাতীয় পেনশন রাখার করার জন্য যথেষ্ট আয়ের হার তৈরি করতে পারেন। শীর্ষ কর্পোরেট একজিকিউটিভ, বিখ্যাত ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এবং সফল উদ্যোক্তারাও যথেষ্ট পেনশন বা এই ধরনের সুবিধা পেতে পারেন, যা প্রতি মাসে ১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।” কীভাবে এটা সম্ভব করা যায় –-১ কোটি টাকার মাসিক পেনশন অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও এটা অসম্ভব নয়। এই লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে, ব্যক্তিরা নিম্নলিখিত কৌশলগুলি বিবেচনা করতে পারেন –– তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করতে হবে এবং আক্রমণাত্মকভাবে অবসরের জন্য সঞ্চয় করতে হবে।– হাই রিটার্নের স্কিমে বিজ্ঞতার সঙ্গে বিনিয়োগ প্রয়োজন।– পেনশন পরিকল্পনা এবং পেনশন তহবিলে বিনিয়োগ।– একাধিক আয়ের ধারা তৈরি।– ব্যতিক্রমী কর্মজীবন বৃদ্ধি। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাজারে, সঠিক বিনিয়োগের মেয়াদ এবং দীর্ঘমেয়াদে ধারাবাহিক অবদানের মাধ্যমে নিজেদের আর্থিক লক্ষ্যগুলি অর্জন করা সম্ভব। ব্যাঙ্কবাজার ডটকমের সিইও আদিল শেঠি জানিয়েছেন যে, “বিনিয়োগে সঠিক বিকল্পের মধ্যে বৈচিত্র্য এনে এবং বাজারের অবস্থার উপর ভিত্তি করে নিয়মিত সমন্বয় করে একটি উচ্চ কর্পাসের লক্ষ্য রাখা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি ১৮ বছর বয়সে বিনিয়োগ করা শুরু করেন এবং ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত (৪২ বছরের বেশি) প্রতি মাসে ৩.৫ লাখ টাকার অবদান রাখেন এবং গড় বার্ষিক ১২% রিটার্ন অর্জন করেন, তাহলে একটি উল্লেখযোগ্য কর্পাস তৈরি করা যেতে পারে। এটি অবসর গ্রহণের সময় ১ কোটি টাকার বেশি মাসিক পেনশন প্রদান করতে পারে। তবে বাজারের কোনও নিশ্চিত রিটার্ন নেই। তাই বিনিয়োগ করার আগে সব পরিস্থিতি যাচাই করতে হবে।” কেউ বছরের পর বছর ধরে নিয়মিতভাবে একটি পেনশন স্কিম বা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমগুলিতে একটি পদ্ধতিগত উপায়ে বিনিয়োগ করতে পারেন। যেখানে অবসর গ্রহণের সময় প্রত্যাশিত বা নিশ্চিত জমা পরিমাণ বার্ষিক ১২ কোটি টাকা রিটার্ন জেনারেট করবে। ইনভেস্ট শপ-এর সিইও, আশিস কাপুর পরামর্শ দিয়েছেন যে, “একটি ফিক্সড ডিপোজিটও করা যেতে পারে, আবার দীর্ঘ মেয়াদে শেয়ারও সংগ্রহ করা যেতে পারে। তারপরে ট্রেডিং রিটার্ন, মূলধন লাভ এবং করের পরে ১২ কোটি টাকার লভ্যাংশ আয়ের জন্য সেই শেয়ারগুলি পরিচালনা করতে হবে। এইভাবে কেউ ১ কোটি টাকা মাসিক পেনশন পেতে সক্ষম হবেন।” পেনশনের এই হারের জন্য অনুরূপ স্কেলে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগ প্রয়োজন। একটি উল্লেখযোগ্য অবসর তহবিল গড়ে তোলা যেতে পারে একটি উল্লেখযোগ্য এককালীন বিনিয়োগের মাধ্যমে বা অল্প বয়সে বিনিয়োগ শুরু করে। যা অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত প্রয়োজনীয় বৃদ্ধি বজায় রাখার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে। ভারতে ১ কোটি টাকার মাসিক পেনশন পাওয়া বেশিরভাগ ব্যক্তির পক্ষেই অসম্ভব হতে পারে। সঠিক কৌশলগুলি অবলম্বন করে, কয়েকজন নির্বাচিত ব্যক্তিই এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যকে বাস্তবে পরিণত করতে পারেন। যদিও এটি সবার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ বাস্তবসম্মত আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা, সেগুলি অর্জনের জন্য কাজ করা, সঠিক পেনশন পরিকল্পনা ও স্কিমগুলিতে বিনিয়োগ করা খুবই অপরিহার্য। তাই তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করতে হবে এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।