নয়াদিল্লি: ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরেই গাজা সীমান্ত লঙ্ঘন করে এগিয়ে আসে শত শত হামাস সেনা। ইজরায়েল এই আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিল না বললেই হয়। আক্রমণে প্রাণ যায় ইজরায়েলের ১২০৫ জন মানুষের, এঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন অসামরিক নাগরিক। হামাসের হাতে বন্দি হন ২৫০ জনেরও বেশি নাগরিক। ইজরায়েল চুপ করে বসে থাকেনি। সেও বেছে নেয় প্রতিশোধের পথ। গাজা জুড়ে শুরু হয় সামরিক অভিযান, জলে-স্থলে-আকাশে আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণ যায় অন্তত ৪১৭৮৮ জনের, এঁরাও অধিকাংশই অসামরিক নাগরিক।
আরও পড়ুন: ভারতে কোন রাজ্যের মানুষ সবচেয়ে বেশি মদ খান? কোথায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ? জানলে চমকে যাবেন
৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ এখন ইরান আর লেবাননকে গ্রাস করেছে। যদি এই সপ্তাহের শুরুর কথাই ধরা যায়, দেখা যাবে যে ইরান হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ এবং ইরানের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নীলফোরুশানকে হত্যার প্রত্তিক্রিয়ায় ইজরায়েলে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ইজরায়েল এবার কী করে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব।
বিস্ফোরক এবং প্যারাশ্যুট, ইজরায়েলের লৌহপ্রাচীর চূর্ণ
দলে দলে সংঘটিত হামাস সেনারা ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকেই ইজরায়েলের সীমান্ত ভাঙতে এগিয়ে এসেছিল। ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল যে সীমান্ত, যা বিশ্বে পরিচিত ছিল আয়রন ওয়াল বা লৌহপ্রাচীর নামে, দেখা গিয়েছিল কার্যত তা তাসের ঘর। কেন না, বিস্ফোরণের মুখে তা ধ্বসে পড়ে নিমেষে। বেড়া এবং দেওয়ালে গর্ত করতে কয়েকটা বিস্ফোরকই যে যথেষ্ট ছিল, তা এ দিন প্রমাণিত হয়ে যায়। ইজরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে হামাস বাহিনী। নাহাল ওজ বেসও দখল করে নেয় হামাস বন্দুকধারীরা।
ইজরায়েল ব্যস্ত ছিল উৎসবে। সাত দিন ব্যাপী ইহুদি উৎসব সুকোটের সে দিন ছিল শেষ পর্ব। সেই তোড়জোড়ের মধ্যেই বেজে উঠেছিল সাইরেন। ইজরায়েলের নাগরিকরা তখনও বুঝে উঠতে পারেননি আনন্দের উৎসব কীভাবে মৃত্যুর উৎসবে পরিণত হতে চলেছে। ইজরায়েল সীমান্ত লঙ্ঘনের আধঘণ্টার মধ্যেই দ্রুত গাজা সীমান্তের শহর এবং নগরগুলো দখল করে নেয় হামাস সেনারা। হামাসের আক্রমণে প্রাণ যায় প্রচুর ইজরায়েলির।
নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল গণহত্যা
শুধুই সুকোটের ইহুদি উৎসব নয়, দক্ষিণ ইজরায়েলের নোভায় চলছিল এক মিউজিক ফেস্টিভ্যালও। প্রায় ৩০০০ নর-নারী ডিজে-র সুরে মেতেছিলেন জীবনের ছন্দে, যা বদলে যেতে চলেছিল মৃত্যুর লীলায়। কেউ কেউ আকাশে রকেট দেখলেও পরিণতি অনুধাবন করতে পারেননি, ভেবেছিলেন নিখাদ আতসবাজি। উৎসবস্থলের কাছে রকেট বিস্ফোরণের পরে তারা যখন পালিয়ে যেতে শুরু করে, ততক্ষণে মোটরবাইকে, পিক-আপ ট্রাকে, মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডারে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে গিয়েছে হামাস সেনা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাঁদের হাতে মারা যান প্রায় ৩৭০ জন মানুষ।
এই হত্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেই দিন, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে গিয়েছিল ইজরায়েলের। কিন্তু ততক্ষণে বেশ কয়েকজন নাগরিককে বন্দি করে প্যালেস্তাইনে নিয়ে গিয়েছে হামাস।তার পরে ইজরায়েলের আক্রমণে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গাজা।