Report: Om Prakash Niranjan
কোডারমা: ‘‘আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান!’’ মায়ার খেলা-র গানটা এখানে একেবারে জুতসই। আমরা সবাই জানি বাজার থেকে থলি ভরে যা কিনে নিয়ে আসি সেই সব ফসলেই কীটনাশকের বিষ, তবু ওই খেয়েই কেটে যায় সকাল থেকে বিকেল, বিকেল থেকে রাত! তবে, এবার চিন্তা মিটতে চলেছে। সে যেমন কৃষকদেরও, তেমনই আমাদেরও।
সত্যি বলতে কী, কৃষক কিন্তু নিরুপায় হয়েই কীটনাশক দেন ফসলে, না হলে যে পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল বাঁচানো যাবে না। পরিণামে তাঁরা এবং আমরা, দুই দলকেই মরতে হবে না খেয়ে। কিন্তু ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কটক, ওড়িশার তরফে এবার যে নতুন বিকল্প আবিষ্কৃত হল, তা সবার মুখে হাসি ফোটাবে।
আরও পড়ুন– অসুস্থ রতন টাটা, ভর্তি করা হল হাসপাতালে, এখন কেমন আছেন তিনি ?
এই প্রসঙ্গে এগ্রিকালচারাল সায়েন্স সেন্টার কোডারমা-র (ঝাড়খণ্ড সিনিয়র কৃষিবিজ্ঞানী ড. এ কে রাই লোকাল 18-এর কাছে তুলে ধরেছেন ট্রাইকো কার্ডের কথা। কার্ড বললে মাথায় যান্ত্রিক চিপের কথা আসা স্বাভাবিক, বিশেষ করে যুগ যখন প্রযুক্তির। তবে, এই কার্ড ঠিক সেই কার্ড নয়। বিষয়টা এবার খোলসা করা যাক।
ট্রাইকো কার্ডের ট্রাইকো শব্দটার মূলে রয়েছে ট্রাইকোডার্মা। এটি এক ধরনের মাংসাশী পোকা। ড. এ কে রাই জানিয়েছেন যে একটি কার্ডে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার ডিম থাকবে, যা ফসলের চারপাশে রাজপাট বসানো পোকাদের পক্ষে যমের মতন! ব্যবহারের আগে এই কার্ড ফ্রিজে রাখতে হয়। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ডিমগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। পরের ধাপে ডিম থেকে লার্ভা বের হয়, তিন থেকে চার দিনের মাথায় লার্ভা পরিণত হয় পোকায়।
তিনি আরও বলছেন, ক্ষেতের মাঝে একটা কাঠের ফ্রেমে এই কার্ড আটকে দিলেই হল, আর কিছু করতে হবে না। ফসলের পোকা এবার খেয়ে শেষ করবেন ট্রাইকোডার্মা। এরা মাংসাশী, ফলে ফসলের কোনও ক্ষতি করবে না।
যে সব দোকানে কৃষিসামগ্রী পাওয়া যায়, সেখানেই এই ট্রাইকো কার্ড পাওয়া যাবে। এক একর জমিতে গড়ে তিনটি ট্রাইকোকার্ড লাগবে। এর পর ভুলেও কীটনাশক দেওয়া যাবে না, দিলে তা ট্রাইকোডার্মাকেও মেরে ফেলবে।