বুয়েনস আইরেস: সম্প্রতি বুয়েনস আইরেসের একটি হোটেলের ব্যালকনি থেকে পড়ে মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে ‘ওয়ান ডিরেকশন’-এর প্রাক্তন সদস্য লিয়াম পেইনের। প্রাথমিক অটোপ্সি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, ৩১ বছর বয়সী এই তারকা সঙ্গীতশিল্পী মৃত্যুর কারণ ‘একাধিক ট্রমা’ এবং ‘ইন্টারনাল ও এক্সটার্নাল হেমারেজ’।
ক্যাসাসুর প্যালেরমো হোটেলের তিন তলার ঝুলবারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন লিয়াম। বুয়েনস আইরেস পাবলিক প্রসিকিউটরের দফতর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে যে, অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক মৃত্যু হিসেবে বিষয়টির তদন্ত করা হবে।
তবে কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, পড়ে যাওয়ার আগে কোনও সাবস্ট্যান্স অ্যাবিউজ-এর কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: পুজো শেষ! তাও পড়াশোনায় মন নেই সন্তানের? মাথায় রাখুন ৪টে টিপস, নিজেই বই নিয়ে বসবে
পুলিশি বিশেষজ্ঞরা জানতে পেরেছেন যে, পেইনের হোটেলের ঘরে নার্কোটিক্স এবং অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। এমনকী সেখানে লণ্ডভণ্ড হওয়া আসবাবপত্রও মিলেছে।
প্রসিকিউটরের অফিস জানিয়েছে যে, পড়ে যাওয়ার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি পেইন। এর থেকেই ইঙ্গিত মিলছে যে, ওই সময় তিনি অচৈতন্য অথবা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন।
সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন হোটেল কর্মী এবং ২ জন মহিলা। তাঁরা ওই দিন সকালের দিকে পেইনের ঘরেই গিয়েছিলেন। তাঁরাই প্রসিকিউটরদের কাছে বয়ান দিয়েছেন। যদিও জানা গিয়েছে, লিয়াম পড়ে যাওয়ার আগে ওই মহিলা ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন৷ তবে তাঁরা সকলেই জানান যে, লিয়ামের আচরণ একেবারেই প্রকৃৃতিস্থ ছিল না।
পেইনের মৃত্যুর আগে হোটেল কর্মী সতর্কতা জারি করেছিলেন। তিনি এমার্জেন্সি ৯১১-য় কল করে সঙ্গীতশিল্পীর অপ্রকৃতিস্থ আচরণের কথা জানিয়েওছিলেন। রিসেপশনিস্টও বলেন যে, পেইন নেশাগ্রস্ত ছিলেন। আর তাঁর ঘর পুরোপুরি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় ছিল। সঙ্গে সঙ্গেই জরুরিকালীন ভিত্তিতে পুলিশি পদক্ষেপ করা হয়।
তদন্তকারীরা পেইনের মর্মান্তিক পরিণতির সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছেন। এমনকী তাঁর মৃত্যুতে কোনও তৃতীয় পক্ষ জড়িয়ে রয়েছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদিও মনে করা হচ্ছে যে, দুর্ঘটনার সময় পেইন একাই নিজের ঘরে ছিলেন।
প্রসঙ্গত ‘ওয়ান ডিরেকশন’-এর সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেছিলেন লিয়াম পেইন। ২০১০ সালে ‘দ্য এক্স-ফ্যাক্টর ইউকে’-র উপর এই বয় ব্যান্ড গঠন করা হয়েছিল।
হ্যারি স্টাইলস, নিঅল হোরান, ল্যুইস টমলিনসন, জেন মালিক এবং পেইন দুর্ধর্ষ সাফল্য অর্জন করেছিলেন। বিখ্যাত কিছু গান উপহার দিয়েছিলেন তিনি৷ এর মধ্যে অন্যতম হল ‘হোয়াট মেকস ইউ বিউটিফুল’ এবং ‘ড্র্যাগ মি ডাউন’।
এভাবেই ইতিহাসে বেস্ট সেলিং বয় ব্যান্ডের মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে ‘ওয়ান ডিরেকশন’। ২০১৬ সালে এই ব্যান্ড বিরতি গ্রহণ করে। তবে লিয়াম পেইনের অকাল প্রয়াণে ভক্তরাও স্তম্ভিত। এমনকী সঙ্গীতের দুনিয়াতেও এক ফাঁকা স্থান তৈরি হল।