আবীর ঘোষাল, কলকাতা: বালাসোর থেকে চাঁদিপুর সমুদ্র সৈকতের দিকে এগোলে বোঝা যাবে না যে কয়েক ঘণ্টা আগে এখানেই বয়ে গিয়েছে দানার মতো ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়। ওড়িশা প্রশাসন গোটা রাস্তা ইতিমধ্যেই প্রায় সাফ-সুতরো করে ফেলেছে। ১৩ কিমি রাস্তা জুড়ে শুধুই বিদ্যুতের খুঁটি সোজা করে বসানোর কাজ চলছে। তার পরেই অবশ্য ঘূর্ণিঝড় দানা রেখে গিয়েছে তার ছাপ।
চাঁদিপুরে সৈকতের পাশেই রয়েছে গ্রাম গুরুপাহি। যে গ্রামে ঘরে ঘরে জল দাঁড়িয়ে আছে। এই গ্রামের একাধিক বাসিন্দা কর্মসূত্রে থাকেন পশ্চিমবঙ্গে। আপাতত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তারা রয়েছেন নিজেদের গ্রামেই। বাংলা ও ওড়িশা, দুই পড়শি রাজ্যের অবস্থা দেখে মন খারাপ তপন, শুভময়, প্রদীপদের। গ্রামে দোকান চালান নিতাই পান্ডা। গ্রামের একমাত্র দোকান। যেখানে চাল,ডাল,গম, কাঁচা সবজীর পাশাপাশি পাওয়া যায় সব ধরণের খাবার। সমুদ্রের নোনা জলে ভেসে গিয়েছে পিঁয়াজ, আদা, রসুন। জলে ভিজে গেছে প্রায় ৩০ বস্তা ধান। প্যাকেটজাত সব দ্রব্য ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে কম্পিউটার, সিপিইউ সব কিছু। নিতাই বাবুর ছেলে অজিত পান্ডা বলছিলেন, ‘‘দোকানে এক কোমর সমান জল ছিল। আজ দোকান থেকে জল সরলেও সব জিনিষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন ভরসা রোদ উঠলে যদি কিছু জিনিষ শুকিয়ে ব্যবহার করতে পারি। আমার একার লাখ খানেক টাকা খরচ হয়ে গেল।’’
কিন্তু দোকানের এই মাল কিনবে কে? কারণ গোটা গ্রামে কারও ঘর উড়ে গেছে। কারও আবার মাথার চাল নেই। কারও ঘরের মধ্যে আবার জল দাঁড়িয়ে আছে। ফলে দোকানের মাল পত্র কেনার লোক নেই। গ্রামে ঢোকার রাস্তায় প্রায় এক কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে আছে। তার মধ্যে দিয়েই চলছে যাতায়াত। গ্রামের বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, ভরা কোটালে আরও জল ঢুকবে গ্রামে। সেই জলে ফের ভাসতে পারে গ্রাম। তাহলে কি হবে?এই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগ কাঁচা বাড়ি যাদের রয়েছে। অনেকের বাড়ির উঠোনে থাকা উনুন ডুবে গিয়েছে। তবে প্রশাসনের তরফে শুরু হয়েছে শুকনো খাবার দেওয়ার কাজ ৷