তমলুক: তমলুকে শক্তি পুজোর আগে দেবী বর্গভীমা মায়ের অনুমতি নিতে হয়। এই অলিখিত নিয়ম চলে আসছে বছরের পর বছর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাচীন শহর তাম্রলিপ্ত অধুনা তমলুক। তমলুকে অধিষ্ঠাত্রী দেবী বর্গভীমা মা। পুরাণে বর্ণিত ৫১ শক্তি পিঠের এক পিঠ। সতীর বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এই স্থানে। এখানে দেবী ভীমা কালী রূপে পূজিতা।
এই বর্গভীমা মায়ের অনুমতি নিয়েই তমলুকে শুরু হয় শক্তিপুজো। দেবী বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়ে তবেই তমলুকের বিভিন্ন ক্লাব প্রতিষ্ঠান বা বাড়ির কালীপুজো শুরু হয়। এমনই রীতি রয়েছে তমলুকে। তমলুকে অতীতে কোনও শক্তি পুজো হত না। শুধুমাত্র দেবীর বর্গভীমার পুজো হত।
কিন্তু একসময় তমলুকে দুর্গা, জগদ্ধাত্রী পাশাপাশি কালীপুজোর প্রচলন শুরুর সময় সমস্যা দেখা দিলে তৎকালীন প্রবীণেরা নিদান দেন পুজো শুরু করার আগে দেবী বর্গভীমা মাকে পুজো দিয়ে অনুমতি নিতে হবে। এই থেকেই এই অনুমতি নেওয়ার নিয়ম চলে আসছে। তমলুকে ক্লাব প্রতিষ্ঠান হোক বা বাড়ি, প্রথমে দেবী বর্গভীমা মাকে পুজো দিয়ে অনুমতি নিয়ে শুরু হয় পুজো।
তমলুকের শহরে যত কালীপুজো হয় প্রত্যেক ক্লাব বা প্রতিষ্ঠান সুসজ্জিত শোভাযাত্রার মাধ্যমে দেবী বর্গভীমা মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে তবেই তাদের কালীপুজো শুরু করে। দিন বিকেলের পর থেকেই সুসজ্জিত শোভাযাত্রা সহকারে দলে দলে দেবী বর্গভীমা মাকে পুজো দিতে আসেন বিভিন্ন ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের ওদের পাশাপাশি পারিবারিক পুজোর ব্যক্তিরা। সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ তমলুকের দেবী বর্গভীমা, বর্তমানেও নিষ্ঠার সঙ্গেপুজিত হয় মা, শক্তি পুজো শুরুর আগে রয়েছে অনুমতি নেওয়ার প্রথা।
আরও পড়ুন: ঐশ্বর্যকে ছেড়ে তাঁর সঙ্গেই চুটিয়ে প্রেম অভিষেকের? জল্পনার মাঝেই প্রথম মুখ খুললেন নিমরত, যা বললেন…
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত বা তমলুকের আজও মধ্যমণি মা বর্গভীমা। কয়েক হাজার বছর ধরে শক্তি স্বরূপিণী আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে দেবী বর্গভীমার আরাধনা চলে আসছে। ওড়িশি স্থাপত্যের আদলে এই দেউলের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার অজস্র কাজ। তার মধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহে কালো পাথরে তৈরি মায়ের মূর্তি বিরাজ করছে দেবী উগ্রতারা রূপে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিত হন দেবী বর্গভীমা।