ধর্ষকদের জনসমক্ষে ফাঁসি চান অক্ষয় কুমার-রীতেশ দেশমুখ-ইয়ামি গৌতম, হাতরাস গণধর্ষণ কাণ্ডে ফুঁসছে বলিউড

#মুম্বই: চারজন মিলে ধর্ষণ করেছিল বছর উনিশের দলিত তরুণীকে। ১৫ দিন লড়াইয়ের শেষে হার মানলেন উত্তর প্রদেশের হাতরাসের নির্যাতিতা। মঙ্গলবার ভোরে দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

দিন পনেরো আগে গণধর্ষণের শিকার নির্যাতিতাকে প্রথমে দিল্লির জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তরিত করা হয় সফদর জং হাসপাতালে। সেখানেই সকালে ঠামে লড়াই। পুলিশ সুপার ভিক্রান্ত বীর নির্যাতিতার মৃত্যুর খবর সুনিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ধর্ষকরা কেবল ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি। তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টাও করেন।

এ দিন নির্যাতিতার মৃত্যুর পরে ফুঁসে ওঠে দেশ। ধর্ষণের পড়ে খুনের প্রবল চেষ্টার ভয়াবহতায় সকলে বাকরুদ্ধ। সমাজের সাধারণ মানুষ থেকে সমাজকর্মী এবং  বলিউড এবং ক্রীড়া জগতের তারকারা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। অভিনেতা অক্ষয় কুমার, ফারহান আখতার, অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত, ইয়ামি গৌতম, স্বরা ভাস্কর, রিচা চাড্ডা থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

অক্ষয় কুমার অপরাধীদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, “এ দিনের ঘটনায় আমি অত্যন্ত ক্রদ্ধ এবং হতাশ। কবে এ সব ঘটনা শেষ হবে? আমাদের আইন এবং তার প্রণয়ন পদ্ধতি আরও কড়া হওয়া প্রয়োজন, যাতে শাস্তির ভয়ে ধর্ষকরা এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকে। ধর্ষকদের ফাঁসি হওয়া উচিত। এবার অন্তত আওয়াজ তোলা প্রয়োজন নিজেদের পরিবারের মেয়েদের সুরক্ষার স্বার্থে। “

এ দিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন অভিনেতা রীতেশ দেশমুখ, অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর। রীতেশ লেখেন, “হিংস্র, ভয়াবহ এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের সকলকে সাধারণ মানুষের সামনে ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।” স্বরা লিখেছেন, “ভয়াবহ এই গণধর্ষণ দেখিয়ে দিল মানসিক বিকৃতির কোনও সীমা নেই। আমাদের সমাজ ক্রমেই মানসিকভাবে অসুস্থ, অমানবিক, লজ্জাজনক একটা স্তরে পৌঁছে যাচ্ছে।”

এ দিন তরুণীর মৃত্যুর পড়ে পুলিশ জানিয়েছে জানিয়েছে, ১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের সঙ্গে মাঠে কাজ করতে গিয়েছিলেন তরুণী। সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিত্যক্ত একটি জায়গায় তাঁর খোঁজ মেলে। অচৈতন্য অবস্থায় তরুণীর শরীর ভেসে যাচ্ছিল রক্তে। জিভ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের সুপারিন্টেন্ডেন্ট হরিশ মনজুর খান জানান, “তাঁকে ভেন্টিলেশনে নিতে হয়েছিল। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনকই ছিল। নিম্নাঙ্গ প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিল।”

হাতরাসে তরুণীর মৃত্যুতে রিচা চাড্ডা লেখেন, “Justice for Hathras victim. Everyone deserves to live with dignity. Punish the perpetrators,” অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম আওয়াজ তুলেছেন নির্যাতিতার মৃত্যুতে। অভিনেত্রী লেখেন, “অনেক চেষ্টা করেছি নিজের রাগ, কষ্ট, দুঃখ, বিরক্তিকে একত্রিত করতে। ২০২০ চলছে, জানি না আর কত নির্ভয়াকে এভাবে প্রাণ দিতে হবে! জানি না সে এবং তাঁর পরিবার কতটা অমানসিক যন্ত্রণা সহ্য করেছে। তাঁর আত্মার সান্তর জন্য ধর্ষকদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।”

প্রসঙ্গত এই ঘটনার চার অভিযুক্তই গ্রেফতার হয়েছে। তাদের হাতরাস কোতোয়ালি থেকে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দলিত যুবতীর মৃত্যু নিয়ে বিএসপি মায়াবতীও এক হাত নিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, “সমাজের একটা অংশ এই রাজ্যে সুরক্ষিত নয়। বিএসপি চায়, সরকার এই বিষয়টায় নজর দিক।”