দুর্গাপুজোয় কলকাতায় আসতে পারেন স্বয়ং সনু সুদ! কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননের থিমে পরিযায়ীদের লকডাউন যন্ত্রণা

#কলকাতা: হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে সুটকেসের ওপর শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে সন্তান, তাকে সেভাবেই টেনছেন বাড়ি ফিরতে মরিয়া পরিযায়ী শ্রমিক মা। ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফেরার জন্য রেললাইন ধরে চলতে শুরু করেছিলেন একঝাঁক পরিযায়ী শ্রমিক। ঘুম পেয়ে যাওয়ায় গভীর রাতে ট্র্যাকে ঘুমিয়ে পড়েন। ট্রেনের হর্ন শুনতে না পাওয়ায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দেহ।  লকডাউনে কাজ নেই, রোজগার বন্ধ, তা দুধের শিশুকে নিয়ে বিহারের বাড়িতে ফিরছিলেন পরিযায়ী মা। স্টেশনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। কিন্তু, তা বোঝার মতো ক্ষমতাই ছিল না সন্তানের। তাই খিদের জ্বালায় মায়ের মৃতদেহ বার বার ধাক্কা দিচ্ছিল সে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল সেই ভিডিও। কান্নায় ডুকরে উঠেছিলেন নেটিজেনরা—-কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন পশ্চিম অধিবাসীবৃন্দের মণ্ডপে এবার ফুটে উঠেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের লকডাউনের কাটান যন্ত্রণার জীবনের কাহিনী।

লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের যন্ত্রণার সঙ্গে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে নিয়েছিলেন বলিউড অভিনেতা সনু সুদ। মুম্বই-সহ দেশ এবং দেশের বাইরে আটকে পড়া বহু মানুষকে তিনি নিজের খরচ এবং অবশ্যই নিজের উদ্যোগে বাড়ি ফিরিয়েছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার এখনও নিরসন হয়নি। ফলে তিনি এখনও নানা সামাজিক কাজ করে চলেছেন। এমনকি পড়ুয়াদের স্বপ্ন গড়ে দিচ্ছেন পড়াশুনার সুযোগ করে দিয়ে।

এহেন কর্মকাণ্ড যাঁর, সেই সনু সুদকে সম্মান জানাতে কেষ্টপুরের অন্যতম ক্রাউডপুলার কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননের থিম মেকার স্বপন চক্রবর্তী অভিনেতার একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি গড়েছেন। সেই খবর ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে সনুর কাছে। তিনি নিজের ট্যুইটার এবং ফেসবুক হ্যান্ডেলে মণ্ডপের ছবি শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি, কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি।

পুজো কমিটির সম্পাদক রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, “লকডাউনে সনু সুদ পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে ভগবানের দূত হয়ে এসেছিলেন। তাই পরিযায়ীদের নিয়ে মণ্ডপ গড়া হবে, আর তাঁকে সম্মান জানান হবে না, এটা কোনওভাবেই হতে পারে না। তাই শিল্পী অভিনেতার মূর্তি গড়েছেন।”

বুধবারই সনু ফোন করেছিলেন ক্লাব কর্তাদের। রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, “অভিনেতা আমাদের থিমের বিষয়ে জানতে পেরে আমাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা আপ্লুত।” বর্তমানে সনু সিনেমার শুটিং-এ ব্যস্ত।  এ  দিন কর্মকর্তাদের একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন অভিনেতা।

তবে এখানেই শেষ নয়। রঞ্জিত বলেন, “অভিনেতা শুটিং ব্যস্ত। তবে শুটিং শেষ হয়ে গেলে তিনি সোজা কলকাতায় এসে প্রফুল্লকাননের মণ্ডপে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। যদিও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমরা আশাবাদী।”