#তেহরান: আমেরিকা এবং ইরান দুই চির শত্রু দেশ যখন ফুটবল মাঠে মুখোমুখি হয়, তখন তার পারদ কোন পর্যায়ে পৌঁছে যায় সেটার বলার প্রয়োজন নেই। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে আমেরিকানদের ২-১ হারিয়েছিল ইরান। তবে এবার কাতারে দুর্দান্ত লড়াই করেও মার্কিনদের কাছে হারতে হয়েছে আজমুন, গলিজেদা, তারেমীদের। মনে হয়েছিল সারা ইরানে দুঃখের ঝড় বয়ে যাবে। কিন্তু হল উল্টোটা।
আমেরিকার কাছে ইরানের হারের পর তেহরানের রাস্তায় সেলিব্রেশন শুরু হয়ে যায়। মানুষ নাচতে থাকেন, বাজি ফাটাতে থাকেন এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। মার্কিন পতাকা নিয়ে রাস্তায় সেলিব্রেট করতে দেখা যায় সাধারণ নাগরিকদের। সেপ্টেম্বর মাসে হিজাব না পরায় ইরানের পুলিশ গ্রেফতার করে মাহসা আমিনিকে। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশের বিরুদ্ধে মাহসাকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। শুরু হয় বিক্ষোভ। কঠোর ভাবে সেই বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে পুলিশ। সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত শিশু-সহ ৩০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ইরানের ম্যাচে মাঠেও দেখা গিয়েছে প্রতিবাদ। প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীত গাননি দলের ফুটবলাররা।
Iranians celebrating the US victory in World Cup.
This is me watching the moment that the US Soccer team scored a goal against Islamic Republic’s team.
Iran is the only country in the world that it’s people celebrate the loss of their national team. pic.twitter.com/TJQ7Y603mP— Masih Alinejad ?️ (@AlinejadMasih) November 29, 2022
পরের দুটি ম্যাচে যদিও সরকারের চাপ থাকার কারণে জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন দলের ফুটবলাররা। ইরানের মানুষ ফুটবল প্রচন্ড ভালোবাসেন। জাতীয় দলকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। কিন্তু তারা মনে করেন বর্তমান প্রশাসন যেভাবে বিশ্বকাপকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পাপ ঢাকার চেষ্টা করেছিল তার উচিত শাস্তি পেয়েছে আমেরিকার কাছে দল হেরে যাওয়ায়।
ফুটবলারদের প্রতি তাদের ভালোবাসা অফুরন্ত রয়েছে। তাদের জন্য মানুষ গর্বিত। কিন্তু সাধারণ মানুষের হত্যা যে ইরানের মানুষের মনে ছাই চাপা আগুন হয়ে আছে সেটা এখনও স্পষ্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু তরুণ ছাত্র-ছাত্রী জানিয়েছেন ৪০ বছরের বেশি তাদের ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছে আমেরিকার বিপক্ষে। কেউ কেউ বলছেন আমরা ইসলামিক রিপাবলিক নই, শুধু ইরান। নিপাত যাক এই প্রশাসন।