Dilip Ghosh-Rupa Bhattacharya: বিজেপি ছেড়েই দিলীপ ঘোষকে তোপ রূপার, “যোগদানের সময় ভাবিনি আপনি ভণ্ড”

#কলকাতা: শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্ণ হওয়ার উদযাপনে সিপিএম-এর (CPM) মিছিলে হাঁটার পরেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি (BJP) কর্মী রূপা ভট্টাচার্য (Rupa Bhattacharya)। রাজনীতি ও শিল্পী মহলে প্রশ্ন উঠেছিল তা হলে কি এবার বিজেপি ছেড়ে সিপিএম-এ যোগ দিচ্ছেন রূপা? সেই সব প্রশ্নের উত্তর নিজেই টুইট করে পরিষ্কার করে দিলেন তিনি।

বহু দিন ধরেই জল্পনা চলছিল, বিজেপির মোহভঙ্গ হয়েছে তাঁর। তবে আজ বুধবার রূপা স্পষ্ট জানালেন, শুধু বিজেপি নয়। রাজনীতি থেকেই তিনি বিদায় নিচ্ছেন। এবার থেকে স্রেফ একজন শিল্পী হিসেবে মানুষের পাশে থাকবেন। রূপা লিখছেন, “রাজনীতি ছাড়লাম ।কোনো দলের নেই আমি আর । মানুষের পাশে থাকবো শুধু একজন শিল্পী হিসেবে।”

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জেতার কয়েক মাসের মধ্য়ে টলি পাড়ার বেশ কয়েকজন অভিনেতারা যোগ দিয়েছিলেন পদ্ম শিবিরে। তখন যোগ দেন রূপাও। ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আরও কয়েকজন তারকা যোগ দেন বিজেপিতে। অনেকেই ভোটে প্রার্থী হন। কিন্তু পুরনো সদস্যা হয়েও টিকিট পাননি রূপা। তার পরেই খবর ছড়ায়, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতো নেই তাঁর। এর পরে স্পষ্ট হয় বিজেপি ছেড়েছেন তিনি। সিপিএম-এর মিছিলে হাঁটতে দেখে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি এবার লাল শিবিরে রূপা?

এমনকি বিজেপি ছেড়ে আসা অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রূপার সঙ্গে ছবিও আপলোড করেন বাম নেতা শতরূপ ঘোষ। এই ঘটনা দেখে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়েও তৈরি হয়েছে জোর তরজা শুরু হয়েছে। রূপা ও অনিন্দ্যদের দলে স্বাগত জানিয়েছিলেন তিনি নিজেই। কিন্তু সিপিএম-এর মিছিলে হাঁটার পরে তিনি তাঁদের চেনেন না বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, বিজেপিতে একসঙ্গে অনেকে এসেছিলেন। কিন্তু সুবিধা করতে না পারায় চলে গিয়েছে।

দিলীপের এহেন মন্তব্যের পাল্টা লম্বা পোস্ট লিখেছেন রূপা‌। তিনি লিখছেন, “মাননীয় দিলীপ বাবু ,আপনি দিল্লিতে যখন মঞ্চে আমার গলায় উত্তরীয় পরিয়ে বিজেপিতে বরণ করেছিলেন যার ফুটেজ সব মিডিয়া হাউস বারবার দেখায় ) তখন আপনার সহজ সরল আপ্যায়নে মনে হয়েছিল আপনি আর যাই হন ভন্ড নন। রূপা আরও লিখছেন, মনে রাখবেন 2019 এর 18জুলাই ওই সময় কিন্তু রাজ্যে বিজেপি হাওয়া ছিল না যে সবাই টিকেট বা ক্ষমতার এর লোভে গেছিলাম।”

রূপার পোস্টে উঠে আসে বিজেপি-র অন্দরের লবির কথা। তিনি লিখছেন, “Join করার পর বুঝলাম এখানে খুব গোলমাল। আসলে মাননীয় মুকুল বাবুর সাথে আগে পরিচয় হয়েছিল আমাদের এক তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে।যেহেতু আমরা মুকুল রায়ের মাধ্যমে এসেছি তাই আপনার lobby নাকি আমাদের anti। ওরে বাবা তারপর দু বছর এই lobby র জন্য ভয়ঙ্কর নাকানি চোবানি খেলাম সবাই। এর সাথে গেলে ও রাগ করে করে ।এ ডাকলে ও বলে রাজনৈতিক career শেষ করে দেব।আরে এসব আমরা বুঝি না ।আমরা চাই অনেক বেশি কাজ হোক তারজন্য আপনাদের পলিসি যা যা সাহায্য দরকার করতে আমরা আছি ।এই সব গন্ডগোল এ অনেক শিল্পী যারা join করেছিলেন তারা বিরক্ত হয়ে ছিটকে গেলেন কিন্তু আমরা কয়েকজন মাটি কামড়ে পড়েছিলাম ।কারণ জানতাম রাজনীতিতে ধৈর্য খুব জরুরি গুণ।”

সব শেষে রূপা লেখেন, “এই দলের আমি আজ আর কেউ নয়। আপনাদের কথায় কখনোই কেউ ছিলাম না। একটা কথা বলে যাই আপনার দলের asset আপনাদের সাধারণ কার্যকর্তারা। শিল্পীদের কদর করেননি তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু দলের কর্মীদের কদর করুন। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝুন।”

তবে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের উদযাপনে রূপাদের যোগদান নিয়ে সিপিএম-এর অন্দরেও বিতর্ক শুরু হয়। বাম সমর্থক অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র আপত্তি জানান। ফেসবুকে তিনি লেখেন, বিজেপি থেকে আসা কেউ সিপিএম-এ এলে তিনি সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। একই কথা বলেন প্রয়াত বাম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মেয়ে উষসী চক্রবর্তী। তার ঠিক দুদিনের মধ্যেই রূপা জানিয়ে দিলেন, তিনি আর রাজনীতিতেই নেই।