নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদি এবং গুজরাত হিংসা নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক অব্যাহত। নরেন্দ্র মোদিকেই দলের আগামীর মুখ হিসেবে নির্বাচিত করার দুদিনের মধ্যে এই তথ্যচিত্র প্রকাশ্যে আসায় প্রবল অস্বস্তিতে বিজেপি। এবার এই তথ্যচিত্র নিয়ে কড়া পদক্ষেপ। বিবিসি-র তথ্যচিত্র সম্পর্কিত ভিডিওগুলি ব্লক করার জন্য ইউটিউব-কে নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
একইভাবে এই তথ্যচিত্র নিয়ে করা ৫০টির বেশি টুইটও ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের ট্যুইটও। তথ্যচিত্রের লিঙ্ক শেয়ার করায় তাঁর ট্যুইট ব্লক করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রাত ২টোর সময় অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হঠাৎ ফোন! ওপার থেকে ভেসে এল ‘শাহরুখ খান বলছি..’
ডেরেক ও ব্রায়েন জানান, যাঁদের ট্যুইট ব্লক করা হয়েছে, তাঁদের কাছে ট্যুইটারের পক্ষ থেকে মেল পাঠানো হয়েছে। মেলে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের থেকে অনুরোধ আসার পরেই উল্লেখিত কনটেন্ট ভারতে ব্লক করা হয়েছে। তবে, ভারতের বাইরে যে কোনও দেশে এই কনটেন্ট দেখা যাবে বলে জানিয়েছে টুইটার।
Oppn will continue to fight the good fight against CENSORSHIP
PM @narendramodi we will take you, your team on,inside & outside #Parliament @PTI_News did story of @Twitter taking down my tweet of #BBCDocumentary
Multiple news outlets?carry report https://t.co/B8ClBl6sPH
— Derek O’Brien | ডেরেক ও’ব্রায়েন (@derekobrienmp) January 21, 2023
কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা। মেলের স্ক্রিনশর্ট টুইটারে পোস্ট করেছেন তিনি। টুইটারে ডেরেক লিখেছেন, “বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে আমার করা টুইট ব্লক করে দিয়েছেন টুইটার কর্তৃপক্ষ। তবে তার আগেই বহু মানুষ সেই টুইট দেখে নিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের প্রতি নরেন্দ্র মোদির ঘৃণা প্রকাশ পেয়েছে এক ঘণ্টার এই তথ্যচিত্রতে। এই মেল আমি পেয়েছি। এর পিছনে কিছু কারণ দেখানো হয়েছে। বিরোধীরা সবসময় লড়াই জারি রাখবে।”
আরও পড়ুন: চাকরি দিতে ঘুষের ১০% পেত কুন্তল, আর বাকিটা যেত…চাঞ্চল্যকর দাবি কোর্টে! তোলপাড় বাংলা
সূত্রের খবর, শুধু ডেরেক ও’ব্রায়েনেরই নয়, মোট ৫০টি টুইট ব্লক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে কংগ্রেসও। দলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক জয়রাম রমেশ টুইটারে লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর জয়গান গাওয়া ব্যক্তিরা বিবিসি-র তথ্যচিত্রকে কুৎসা বলে মন্তব্য করেছেন। সেন্সরশিপ করা হয়েছে। তাহলে কেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পদত্যাগ করতে বলেছিলেন? কেন তাঁকে রাজধর্ম পালনের বার্তা দিয়েছিলেন বাজপেয়ী?”
এদিকে আসরে নেমেছেন প্রাক্তন কূটনীতিকরাও। বিবিসির তথ্যচিত্রের সমালোচনা করে খোলা চিঠি লিখেছেন প্রাক্তন হাইকমিশনার ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়, বিনা সিক্রির মতো অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা। ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ” দুই অংশের এই তথ্যচিত্র প্রমাণ করে দেয়, এটি পক্ষপাতদুষ্ট, এবং ব্রিটিশ সরকার নয় বেসরকারি টাকায় তৈরি করা। এই তথ্যচিত্র নির্মাণ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো।”
রাজীব চক্রবর্তী