Commonwealth Games Gold Medal: শৈশবে বাবাকে হারিয়ে কঠিন লড়াই, ভারোত্তলনে সোনা জিতলেন বাংলার অচিন্ত্য শিউলি

#বার্মিংহ্যাম: কমনওয়েলথ গেমসে দেশের তৃতীয় সোনা এল বাংলার হাত ধরে৷ বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমস ২০২২ এ অচিন্ত্য শিউলি ৭৩ কেজি বিভাগে সোনা জিতলেন৷ ২০ বছরের ভারোত্তলক এদিন মোট ৩১৩ কেজি ওজন তোলেন৷ স্ন্যাচ ইভেন্টে ভারতীয় ওয়েট লিফটার শিউলি প্রথম টার্গেটে ১৩৭ কেজি তোলেন৷ তিনি খুব সহজেই প্রথম অ্যাটেম্পটে এই ওজন ওঠান৷ দ্বিতীয় চেষ্টায় তিনি ১৪০ কেজি তোলেন৷ আর তৃতীয় টার্গেটে ১৪৩ কেজি তোলেন৷

তারপর ক্লিন ও জার্কে প্রথম চেষ্টায় ১৬৬  কেজি তোলেন৷ দ্বিতীয় চেষ্টায় তাঁর টার্গেট ছিল ১৭০কেজি৷  কিন্তু তিনি তুলতে পারেননি৷ তবে তিনি চেষ্টা ছাড়েননি৷ তৃতীয়বারেও তিনি ১৭০ কেজিই ট্রাই করেন৷ স্ন্যাচে ১৪৩ কেজি তোলার পর তিনি সাফল্য পান৷ তিনি সোনা জিতলেন ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৭০ কেজি এবং মোট ৩১৩ কেজি ওজন তুলে৷

অচিন্ত্য একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার  থেকে অনেক লড়াই করে উঠে এসেছেন৷ তাঁর বাবা রিক্সা চালাতেন৷ তাঁর রোজগারে পরিবার চালানো সম্ভব ছিল না বলে পরিবারের বাকি সদস্যদেরও প্রচুর পরিশ্রম করতে হত৷ তাঁরা শাড়িতে এমব্রয়ডারি , লেস বসানোর কাজ করতেন৷ অচিন্ত্যর বয়স যখন মাত্র ৮ তখন তাঁর বাবা মারা যান৷ অচিন্ত্যদের হাস -মুরগি থাকলেও তাও একটা সময় নষ্ট হয়ে যায়৷ অচিন্ত্যও ছোটবেলাতেই সেলাইয়ের কাজ শিখে যান৷

 

আরও পড়ুন – Commonwealth Games 2022: কোহলি -রোহিতদের ক্লাবে ঢুকে পড়লেন স্মৃতি মন্ধানা

অচিন্ত্য হাওড়ার একটি গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলে৷ সেখানেই স্থানীয় জিমে যোগ দেন মাত্র ১২ বছর বয়সে৷ কিন্তু সেলাইয়ের কাজ তিনি ছাড়েননি৷ তাঁর দাদাও ভারোত্তলক ছিলেন৷ কিন্তু পরিবারের চাপে নিজের শখকে নিয়ে এগোতে পারেননি তিনি৷ অচিন্ত্যর দাদাও সেলাইয়ের কাজই করতেন৷

 

আরও পড়ুন – Ind W vs Pak W: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে দলে ছিলেন না, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগুন স্নেহ রাণা

 

কমনওয়েলথে সোনা পাওয়ার পর অচিন্ত্য জানিয়েছেন জীবনটা খুবই কঠিন৷ তিনি জিমে যোগ দেওয়ার পর কাজ করা খুবই কঠিন ছিল তার চেয়েও কঠিন ছিল তিনবেলা ঠিক করে খাওয়ার যোগাড় করা৷ বাবা বেঁচে থাকতে তাঁর মাকে কাজ করতে হত না, কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁর মাকেও কাজ করতে শুরু করতে হয়৷

অচিন্ত্যের দাদুও ওয়েটলিফটিং ট্রেনিং করতেন৷ অচিন্ত্যের এই খেলায় আসা অবশ্য হঠাৎ৷ একদিন পাড়ায় ঘুড়ি ওড়ানোর সময় সেই ঘুড়ি কেটে জিমের সামনে পড়ে তারপরেই সেখানে অনেকের সঙ্গে নিজের দাদুকেও দেখতে পান তিনি৷ এরপরেই ভারোত্তলনের সঙ্গে ভালবাসায় পড়ে যায় অচিন্ত্য ৷ তারই ফল কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে সোনার পর এবার কমনওয়েলথ গেমসেও সোনা এনে দেশের পদক তালিকায় তৃতীয় সোনা যোগ করলেন বাংলার অচিন্ত্য৷