নয়াদিল্লি: চার মাস ধরে তাঁর খোঁজে ছিল পুলিশ৷ কিন্তু পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে একের পর এক রাজ্যে গা ঢাকা দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ১৯ বছরের ‘লেডি ডন’৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য নেপাল হয়ে আমেরিকা পালিয়ে যাওয়ার ঠিক আগে উত্তর প্রদেশে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন অনু ধনকর৷
গত জুন মাসে দিল্লির রাজৌরি গার্ডেনের একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁয় গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় আমন জুন নামে এক যুবককে৷ সেই ঘটনাতেই অনুকে খুঁজছিল পুলিশ৷ অভিযোগ, আমন জুন নামে ওই যুবককে ফাঁদ পেতে ওই রেস্তোরাঁয় ডাকেন অনু৷ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আগে থেকেই ওই রেস্তোরাঁয় অপেক্ষা করছিলেন অনু৷ আমন নামে ওই যুবক সেখানে পৌঁছে তাঁর সঙ্গে দেখা করে একটি টেবিলে বসেন৷ এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই রেস্তোরাঁয় ঢুকে একদল দুষ্কৃতী আমনকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয়৷ নিহত আমনের মানি পার্স এবং মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় অনু৷
আরও পড়ুন: আট বছরের চেষ্টায় মা হলেন মহিলা! কুড়ি দিনের মাথায় যা ঘটালেন, স্তম্ভিত পুলিশও
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ২০২০ সালে হরিয়ানায় একটি খুনের ঘটনার বদলা নিতে আমন নামে ওই যুবককে হত্যা করা হয়েছে৷ পর্তুগালে আত্মগোপন করে থাকা গ্যাংস্টার হিমাংশু ভাউ দিল্লির একটি খুনের ঘটনার দায় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন৷ হিমাংশুর দলবল এখনও দিল্লি এবং হরিয়ানায় সক্রিয়৷ ২০২০ সালে তাদের দলের সদস্য শক্তি দাদা বলে একজনকে হরিয়ানায় খুন করা হয়৷ তারই বদলা নেয় হিমাংশু৷ আমন নামে ওই যুবককে ফাঁদ পেতে দিল্লির ওই রেস্তোরাঁয় নিয়ে আসে অনু৷
হিমাংশুর দলে এই অনু ‘লেডি ডন’ বলে পরিচিত৷ ধরা পড়ার পর পুলিশকে সে জানিয়েছে, আমনকে খুনে সাহায্য করার বিনিময়ে আমেরিকায় তাঁকে বিলাসবহুল জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গ্যাংস্টার হিমাংশু৷
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির ওই খুনের ঘটনার পর চণ্ডীগড়, অমৃতসর, কাটরা, জলন্ধর, হরিদ্বার ঘুরে রাজস্থানের কোটায় গিয়ে চার মাস ছিল অনু৷ ওই সময় তাঁকে নিয়মিত টাকা পাঠাত হিমাংশু৷ গত ২২ অক্টোবর হিমাংশুই তাঁকে কোটা ছেড়ে বেরনোর পরামর্শ দেয়৷ কারণ ততদিনে দিল্লির ওই খুনের ঘটনা ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে৷ নেপাল, দুবাই হয়ে অনুকে আমেরিকা যাওয়ার নির্দেশ দেয় হিমাংশু৷
নির্দেশ মতো উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউতে পৌঁছয় অনু৷ সেখান থেকে লখিমপুর খেরির নেপাল সীমান্তে পৌঁছয় সে৷ কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অনুর আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ৷ নেপালে পা দেওয়ার আগেই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল৷ পুলিশ সূত্রে খবর, অনুর নামে আগেও অভিযোগ রয়েছে৷ গত জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে এক ব্যবসায়ীর উপরে গুলি চালানোর ঘটনাতেও জড়িত ছিল ‘লেডি ডন’ অনু৷