ওয়াটার মিল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি! পুরো গ্রামে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন কর্নাটকের চাষি

#বেঙ্গালুরু: প্রয়োজনীয়তাই যে উদ্ভাবনের নেপথ্যে কাজ করে থাকে, কর্নাটকের সিদ্দাপ্পার ক্ষেত্রে যেন আরও একবার প্রমাণিত হল এই প্রবাদ বাক্যটি। প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাস করেন তিনি। তাই হুবলি ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কম্পানি লিমিটেডের (Hubli Electricity Supply Company Limited) বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই সাধারণ পরিবারের চাষি। বার বার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। অভিযোগ, সাড়া দেয়নি স্থানীয় প্রশাসনও। আর এই না পাওয়ার জেদই তাঁকে এক নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এখন পুরো গ্রামকে আলো দেখাচ্ছেন সিদ্দাপ্পা। বাড়ির পাশের খালের জল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করছেন তিনি। গড়ে তুলেছেন এক অভিনব ওয়াটার মিল। সম্প্রতি সিদ্দাপ্পাকে নিয়ে ট্যুইট করেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ভি ভি এস লক্ষ্মণ (VVS Laxman)। কুর্নিশ জানান তাঁর এই প্রচেষ্টাকে। আর এর পর থেকে রীতিমতো ভাইরাল হতে শুরু করেছে সিদ্দাপ্পার লড়াইয়ের গল্প।

নিকটবর্তী নারাগান্ডের উইন্ডমিল থেকে প্রথমবার ওয়াটার মিল তৈরি করার ধারণা পান কর্নাটকের চাষি সিদ্দাপ্পা। তার পর প্লাস্টিকের নানা টিউব জুড়ে তৈরি করে ফেলেন আস্ত একটি ওয়াটার মিল। বাড়ির পাশে খালের ধারে এই যন্ত্রটিকে বসিয়েছেন তিনি। এখন খালের জল থেকেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে সিদ্দাপ্পার তৈরি এই যন্ত্র।। তবে সারা বছর খালে জল থাকে না। থাকে না জলের গতিও। তাই একটা দুশ্চিন্তাও পিছু নিয়েছে তাঁর।

সিদ্দাপ্পার কথায়, জলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার এই যন্ত্রটি যথেষ্ট কর্মক্ষম। এই ওয়াটার মিল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের সাহায্যে একসঙ্গে ৬০ ওয়াটের ১০টি বাল্ব জ্বালানোর পাশাপাশি দু’টি টিভিও চালানো যেতে পারে। তবে, ক্যানালে যদি ১২ মাস ধরে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পাওয়া যায়, তা হলে পুরো গ্রামকেই বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে।

সম্প্রতি নিজের ট্যুইটারে সিদ্দাপ্পা ও তাঁর বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রটির ছবি শেয়ার করেছেন ভি ভি এস লক্ষ্মণ। তুলে ধরেছেন সিদ্দাপ্পার প্রচেষ্টার গল্পকে। লক্ষ্মণ জানিয়েছেন, মাত্র ৫০০০ টাকায় এই ওয়াটার মিল তৈরি করেছেন সিদাপ্পা। ওয়াটার মিলটি বাড়ির পাশের ছোট একটি খাল অর্থাৎ ক্যানালের জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম। প্রায় ১৫০ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায় যন্ত্রটির মাধ্যমে।

ইতিমধ্যেই ব্যাপকমাত্রায় ভাইরাল হয়েছে লক্ষণের ট্যুইট। ১৫,০০০-এর বেশি লাইক পড়েছে পোস্টে। কমেন্টের মাধ্যমে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রচুর মানুষ। এইরকম একজন মানুষের গল্প তুলে আনার জন্য লক্ষ্মণকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সকলে। এই উদ্ভাবন যেন আরও বড় পরিসরে পরিচিতি লাভ করে এবং সিদ্দাপ্পাকে যাতে সমস্ত রকমভাবে সাহায্য করা হয়, সেই আবেদনও জানিয়েছেন অনেকে। অনেকে আবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকে কটাক্ষ করেছেন।