অভিনেত্রী তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়

Exclusive Interview: ‘নাম নিতে শুরু করলে আমাদের হাতে আর কাজ থাকবে না’; হেমা কমিটির রিপোর্ট প্রসঙ্গে বিস্ফোরক দাবি করলেন তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়

হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের যে যৌন হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়, তা নিয়ে বরাবরই সরব হয়েছেন অভিনেত্রী তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়। এদিকে মি টু ঝড়ে তোলপাড় মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। সেখানে মহিলাদের যে অভব্যতার মধ্যে পড়তে হয়, তা প্রকাশ্যে এসেছে হেমা কমিটির রিপোর্টের মাধ্যমে। সেই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী তন্নিষ্ঠার মত, পরিবর্তনের উপর আলাপ-আলোচনা শুরু করার জন্য হেমা কমিটি রিপোর্ট অত্যন্ত ভাল পদক্ষেপ। সেই সঙ্গে মলিউডের মহিলারা যে খোলাখুলি ভাবে সোচ্চার হয়েছেন, তা নিয়ে বেশ প্রশংসাও করেছেন তন্নিষ্ঠা।

আরও পড়ুনঃ প্রথম ছবিতেই বাজিমাত! অপরূপ সুন্দরী নায়িকার টানা দু-বছর মেলেনি কোনও সিনেমা! বিএমডব্লিউ, অডি ছাড়া চলে না, এখন কী করছেন?

News18 Showsha-র সঙ্গে এক বিশেষ আলাপচারিতায় অভিনেত্রী বলেন যে, “একদিন আমার খুবই কাছের এক বন্ধু আশ্চর্য হয়ে বলেছিলেন যে, কেরল তো সবথেকে শিক্ষিত রাজ্য। আর সেখানকার সমাজও খুবই উন্নত! আমি তখন সেই বন্ধুকে বলেছিলাম যে, আর ওই একটা কারণেই তাঁরা বিষয়টা সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলতে সক্ষম হয়েছেন। আসলে ২০১৭ সালে কোচিতে একটি চলন্ত গাড়ির মধ্যে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন এক মালয়ালম অভিনেত্রী। যার জেরে উইমেন ইন সিনেমা কালেক্টিভের দাবিতে তৈরি হয়েছিল জাস্টিস কে হেমা কমিটি।”

কিন্তু তন্নিষ্ঠার সামনে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে বলিউডেও কি নিজস্ব কালেক্টিভ এবং কমিটি থাকা উচিত? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, “হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা ‘মি টু’ আন্দোলন করেছি। যেখানে প্রচুর মহিলা সরব হয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টা ঝিমিয়ে পড়ে। সেই সময় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির উঠেছিল, তাঁদের অনেকেই এখনও ইন্ডাস্ট্রিতে দিব্যি কাজ করে চলেছেন। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। তবে এখানে এর কী পরিণতি হতে পারে, সে সম্পর্কে কথা বলা খুবই কঠিন।”

পাশ্চাত্যে হার্ভে উইনস্টেইনের ঘটনায় যা হয়েছিল, সেটা কখনওই হিন্দি ছবির দুনিয়ায় হবে না। এই প্রসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী ‘পার্চড’ এবং ‘অ্যাঙ্গরি ইন্ডিয়ান গডেস’ অভিনেত্রী। তিনি বলেন যে, “এটা অস্বাভাবিক। মাত্র মাস দুয়েক আগেই আমি ওই ফিল্মটি দেখছিলাম। যেখানে গোটা উইনস্টেইন ঘটনার কথা বলা হয়েছিল। ওই ছবিতে বড় বড় ব্যক্তিত্বের নাম করা হয়েছিল। সেটা কিন্তু এখানে হওয়া বেশ কঠিন। কারণ আমাদের সমাজ একেবারেই আলাদা। সকলেই ভীত।”

২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তন্নিষ্ঠা। তিনিও সেই সময় এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিনেত্রীর বক্তব্য, “আমি যখন প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম, তখন বড়সড় ব্যক্তিত্বদের থেকে এই ধরনের প্রস্তাবের সম্মুখীন হয়েছিলাম। সেগুলি এড়িয়ে রীতিমতো পালিয়ে এসেছিলাম আমি। আমি নিজেকে শুধু বলেছিলাম যে, আমি কেবলমাত্র সেই কাস্টিং ডিরেক্টরদের সঙ্গে কাজ করব, যাঁরা অত্যন্ত পেশাদার। আন্তর্জাতিক ছবির জন্য কল পেতে শুরু করেছিলাম, যেখানে কাজের মানের উপরেই জোর দেওয়া হয়। অথচ আমাদের ইন্ডাস্ট্রির পরতে পরতে দুর্নীতি।”

আরও পড়ুনঃ ঋতুপর্ণাকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শ্যামবাজারে! গাড়ির কাচে ধাক্কা! বিক্ষোভের মুখে মিমিও

তন্নিষ্ঠা আরও বলেন যে, “ভাল সময় আসতে এখনও ২-৩ প্রজন্ম সময় লেগে যাবে। মহিলাদেরই এর সম্মুখীন হয়ে যেতে হবে। এর একটা দিক হল – যৌন সুবিধা আর অন্য দিকটি হল – টেবিলের তলা দিয়ে চুক্তি। কিন্তু আমরা এর নাম কখনওই নিতে পারব না। যা-ও অল্পস্বল্প কাজ পাচ্ছি, নাম নিতে শুরু করলে আমরা আর কোনও কাজই পাব না। আমাদের সামনে শুধুমাত্র একটাই রাস্তা খোলা থাকবে যে, বেশিরভাগ মানুষের সঙ্গে কাজ করা যাবে না।”